অসমে এন.আর.সি’র নামে প্রায় ৪০ লক্ষ বাঙালীকে ‘বিদেশী’ ঘোষণা করার অপচেষ্টার প্রতিবাদে ও সর্বশেষে অসমের তিনসুকিয়া জেলার ধলায় সম্প্রতি সশস্ত্র জঙ্গীদের হাতে ৫ জন নিরীহ বাঙালীর নৃশংস হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে গত ১১ই নবেম্বর বিকেলে কলকাতার অসম ভবনের সামনে প্রায় দেড় হাজার আমরা বাঙালীর কর্মী ও সমর্থক, সঙ্গে আরও দু-একটি সংস্থার কর্মী সমর্থকরা, মশাল হাতে নিয়ে প্রচণ্ড বিক্ষোভ প্রদর্শন করে৷ এই বিক্ষোভে আর পি আই সংস্থাও সামিল হয়েছিল৷
মশাল হাতে বিক্ষোভকারীদের দাবী ছিল ঃ আমরা চাই বাঙালীদের নিজস্ব বাসভূমি ‘বাঙালীস্তান’৷
এদিন দুপুর দু’টোয় রবীন্দ্রসদন থেকে আমরা বাঙালীর মিছিল বেরোয়৷ মিছিল জওহরলাল নেহেরু রোড ধরে ‘জীবনদীপে’র পাশে রাসেল ষ্ট্রীটের অসমভবনের সামনে প্রায় আড়াইটা নাগাদ পৌঁছে৷ এখানে স্বাধীনতার পর থেকে অসমে ক্রমাগত বাঙালী নির্র্যতনের প্রতিবাদে, শেষে এন আর.সির অজুহাতে লক্ষ লক্ষ বাঙালীকে অসম থেকে বিতাড়নের চক্রান্তের প্রতিবাদে ও সর্বশেষে তিনসুকিয়া জেলার ধলাতে উগ্রপন্থী সশস্ত্র জঙ্গীদের হাতে ৫জন বাঙালীর হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মিছিলকারীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন৷
এরপর আমরা বাঙালীদের পক্ষ থেকে আমরা বাঙালীর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ---শুভেন্দু ঘোষ, বকুলচন্দ্র রায়, তারাপদ বিশ্বাস, জয়ন্ত দাশ, গোপী শীল , মুরারী মোহন কাঁড়ার, উজ্বল ঘোষ , হিতাংশু বান্যার্জী, আরপি আই-এর রত্না রাজবংশী প্রমুখ অসমে ক্রমাগত বাঙালী নির্যাতনের প্রতিবাদে জোরালো বক্তব্য রাখেন৷
তাদের বক্তব্যের মাঝেই আমরা বাঙালীর কর্মীরা মশাল জ্বেলে অসমসহ অন্যান্য রাজ্যেও বাঙালী নির্যাতনের প্রতিবাদে ও বাঙালীদের নিজস্ব বাসভূমি ‘বাঙালীস্তানে’র দাবীতে ক্রমাগত শ্লোগান দিতে থাকেন৷
আমরা বাঙালীর কেন্দ্রীয় সচিব বকুল চন্দ্র রায় এক প্রেস সাক্ষাতকারে বলেন, বর্তমান অসমের বৃহদংশ যেমন কাছাড়, লামডিং, নওগাঁ, গোয়ালপাড়া, ধুবড়ি প্রভৃতি বাংলারই নিজস্ব এলাকা অসমের সঙ্গে ব্রিটিশরা যুক্ত করে গেছে, তাছাড়া স্বাধীনতার পর যারা বর্তমান বাংলাদেশ থেকে অসমে উদ্বাস্তু হয়ে গিয়েছে তারা স্বাধীনতার বলি ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর পরিষ্কার প্রতিশ্রুতি ছিল যে তাদের জন্যে ভারতের দ্বার সব সময়ের জন্যেই খোলা, তাই তারা কোনো যুক্তিতেই বিদেশী হাতে পারে না৷ এতদ্সত্ত্বেও গত ৭০ বছর ধরে অসমে বাঙালীদের ওপর নির্যাতন চলছে৷ এতদিন আমরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে এসেছি৷ এখন প্রতিশোধ নেওয়ার পালা৷ এর প্রথম পদক্ষেপ হ’ল আমরা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলসহ সমস্ত বাঙালী অধ্যুষিত এলাকা নিয়ে ‘বাঙালীস্তান’ চাই৷ ভারতীয় সংবিধানের যে ধারাতে অন্যান্য ভাষাভিত্তিক রাজ্য হয়েছে,ওই একই ধারাতে অসম, মিজেরাম, ত্রিপুরা, ঝাড়খণ্ড, আন্দামানসহ বিভিন্ন বাঙালী অধ্যুষিত এলাকা নিয়ে প্রাউট দর্শনেভিত্তিক সর্বাত্মক শোষণমুক্ত স্বয়ং-সম্পূর্ণ -সামাজিক-অর্থনৈতিক অঞ্চল বাঙালীস্তান চাই৷ নেতাজী সুভাষচন্দ্র আমাদের প্রেরণা৷