অসমের তিনসুকিয়া জেলার ধলা এলাকায় বাঙালী বিদ্বেষী জঙ্গীরা ১লা নবেম্বর সন্ধ্যা ৮টা নাগাদ বেছে বেছে ৫ জন বাঙালীকে সেতুর কাছে ডেকে নিয়ে গিয়ে বসিয়ে গুলি করে হত্যা করে৷ নিহতদের নাম শ্যামলাল বিশ্বাস (৬০), অনন্ত বিশ্বাস (১৮), অবিনাশ বিশ্বাস(২৩), ধনঞ্জয় নমশূদ্র (২৩) ও সুবল দাস (৬০)৷ ঠিক কোন জঙ্গী সংঘটন এই হত্যাকাণ্ড ঘটাল তা নিশ্চিতভাবে জানা না গেলেও পুলিশের সূত্রে অনুমান আলফা (স্বাধীন) জঙ্গীরা এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে৷ যারাই এই হত্যাকান্ড ঘটাক, এটা যে বাঙালী বিদ্বেষী জঙ্গীদের কাজ তাতে আর কোনো সন্দেহ নেই৷
অসমের আমরা বাঙালী দলের পক্ষে রাজ্য সম্পাদক সাধন পুরকায়স্থ এই বর্বরোচিত নারকীয় বাঙালী নিধনযজ্ঞের তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানান৷ তিনি বলেন, যারা এভাবে নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালীদের ওপর হত্যালীলা চালিয়েছে, ওরা কাপুরুষ, বর্বর৷
‘আমরা বাঙালী’র রাজ্য সম্পদাক আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা লক্ষ্য করছি, বাঙালী বিদ্বেষী একটা শক্তি অনবরত অসম থেকে বাঙালীদের উৎখাত করতে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে৷ দুর্বল প্রশাসন ও সরকারের নীরব দর্শকের ভূমিকা পালনের জন্যে এরা হত্যাকাণ্ড ঘটানোর সুযোগ পেয়েছে৷ এই ঘটনার দায় সরকারকেই নিতে হবে৷ অসম সরকার রাজ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে ব্যর্থ, তাই ‘আমরা বাঙালী’ সমস্ত অসমে আইন শৃঙ্খলার দায়িত্ব সামরিক বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার দাবি করে৷
নাগরিকপঞ্জী ও বাঙালীদের নাগরিকত্ব নিয়ে যে জটিল পরিস্থিতি সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলি তৈরী করে চলেছে এই ঘটনা তারই কুফল বলে ‘আমরা বাঙালী’ দাবি করে ও এই ঘটনায় যারা দোষী ও মদতদাতা তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করা হয়৷ নিহতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ও পরিবারে একজনকে সরকারী চাকুরী দেওয়ারও দাবী করা হয়৷
গত ৩রা নবেম্বর এই ধর্ণার প্রতিবাদে অসম বন্ধের দিনে গোটা রাজ্যের জনজীবন স্তব্ধ ছিল মহানগর গুয়াহাটি শহর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বন্ধের মিশ্র প্রভাব দেখা দিলেও বরাক উপত্যকা ও বাঙালী অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে বন্ধ্ সহ সমগ্র অসমে সর্বাত্মক বন্ধ পালিত হয়৷ গুয়াহাটির বাঙালী প্রধান এলাকাও দোকান-বাজার-হাট পুরোপুরি বন্ধ ছিল৷ বন্ধের সমর্থনে মিছিল করার জন্যে আমরা বাঙালীর নেতৃবৃন্দ ও কর্মীরা ছাড়াও বন্ধ্ সমর্থক ববহু বাঙালীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল পরে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়৷