শিলচর থেকে দেবায়ন দেব ঃ সম্প্রতি বরাকের একটি দৈনিক পত্রিকার অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হবার সুত্রে শিলচরে এসেছিলেন বোরো সাহিত্য সভার উপসভাপতি তথা বোরোল্যাণ্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ও ডঃ দীননাথ বসুমাতারি৷ শিলচর ইলোরা হোটেলে বিডিএফ এর এক প্রতিনিধি দলের সাথে দীর্ঘ ও আন্তরিক আলোচনার সময় বাংলাকে সহযোগী রাজ্যিক ভাষা করা হলে ব্যক্তিগতভাবে তার এবং বৃহত্তর বোরো জনগোষ্ঠীর কোন আপত্তি থাকবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি৷
বাংলাকে সহযোগী রাজ্যভাষা করার দাবিতে বিডিএফ.এর তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রেরিত স্মারকলিপির একটি অনুলিপি এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে তার হাতে তুলে দেন বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট এর প্রতিনিধিদল৷ এদিন কথা প্রসঙ্গে বোরো ও বাঙালীদের দীর্ঘ সম্পর্ক ও পারস্পরিক আদান-প্রদানের তথ্য বিডিএফ সদস্যদের সামনে তুলে ধরেন এই বিশিষ্ট বোরো বুদ্ধিজীবী৷ তিনি বলেন বোরো জনগোষ্ঠীর পরিচিতি ও স্বীকৃতি প্রদানে বাঙালীদের অনন্য অবদান রয়েছে৷ এই প্রসঙ্গে বাঙালী ভাষাবিদ সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়ের নামোল্লেখ করে তিনি বলেন তার, ‘কিরাত ও জনকৃতি’ বইটি বোরোদের কাছে বাইবেল স্বরূপ৷ এছাড়া এই ব্যাপারে বাঙালী বুদ্ধিজীবী ‘প্রমোদ ভট্টাচার্য’ এর উদ্ধৃতি ও দেন তিনি৷ ভৌগোলিক নৈকট্য থাকায় শিক্ষা দীক্ষা তথা চিকিৎসা ইত্যাদি ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের সাথে বোরোদের দীর্ঘ যোগাযোগ এর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন যে এর ফলস্বরূপ এখনো বোরো ভাষা ছাড়া অন্য ভাষায় কথা বলতে গেলে তাঁদের লোকেদের মুখে প্রথম বাংলাই উচ্চারিত হয়, অসমিয়া নয়৷
পরে উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়েও ডঃ বসুমাতারি বরাকের বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে বলেন যে এই আন্দোলন ছাত্র সংগঠন আকসাকে বোরো নেতৃত্ব সম্পূর্ণ সমর্থন ও সহযোগিতা করেছিলেন এবং তার পরিবর্তে পৃথক বোরোল্যাণ্ডের দাবিতে আবসুর আন্দোলনকে নৈতিক সমর্থন জানিয়েছিলেন আকসা সহ বরাক উপত্যকার জনগণ৷ তিনি এও বলেন যে কোন আগ্রাসন থেকে ভাষা সংসৃকতিকে রক্ষা করতে হলে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই ধরনের পারস্পরিক সম্পর্ক সুদৃঢ় থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ!
ডঃ বসুমাতারি এদিন বাংলাকে রাজ্যিক সহযোগী ভাষার স্বীকৃতির প্রসঙ্গটির বেরোসাহিত্য সভার পরবর্তী বৈঠকে তুলে ধরবেন ও সরকারিভাবে সমর্থন জানানো যায় কিনা তার চেষ্টা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন৷ বিডিএফ এর পক্ষ থেকে এদিনের আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় কল্পার্ণব গুপ্ত, হৃষীকেশ দে ও জয়দীপ ভট্টাচার্য৷