বিভিন্ন আর্থিক সংস্থার প্রতিবেদনে আর্থিক সঙ্কচনের পূর্বাভাস ছিলই কিন্তু সেটা যে এতটা নীচে নামবে এমন আশঙ্কা কেউ করেনি সব আশঙ্কা ছাপিয়ে অর্থনীতি মুখথুবড়ে পড়েছে (-) ২৩৯ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়ে গত চার দশকে অর্থনীতির এই দুরবস্থা হয়নি
অর্থমন্ত্রী অর্থনীতির সরকারী পরিসংখ্যান প্রকাশিত হওয়ার আগেই করোনা দৈবদুর্বিপাকের কারণ দেখিয়ে আর্থিক সঙ্কচনের দায় ভগবানের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছেন করোনা ও লকডাউনের কারণে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য শিল্প-কারখানা গত কয়েক মাসে স্তব্ধ হয়ে গেছে তবে শুধুমাত্র সেই কারণে অর্থনীতি এতটা সঙ্কুচিত হয়নি গত এক বছরের সরকারী পরিসংখ্যানই তাই বলছে ২০১৯ সালের জানুয়ারী-মার্চ ত্রৈমাসিক পরিসংখ্যান থেকেই আর্থিক বৃদ্ধির হার অধগতির দিকে তাই শুধু করোনাকে দায়ী করলে হবে না কেন্দ্রীয় সরকারের ভ্রান্ত অর্থনীতিও এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী ২০১৯শে জানুয়ারী-মার্চে আর্থিক বৃদ্ধির হার ছিল ৫৭ শতাংশ, পরের তিনমাস এপ্রিল থেকে জুনে কমে হয় ৫ শতাংশ জুলাই থেকে সেপ্ঢেম্বরে ৪৫ শতাংশ, অক্টোবর-ডিসেম্বরে ৪৭ শতাংশ, ২০২০ সালে জানুয়ারী-মার্চে বৃদ্ধির হার কমে হয় ৩১ শতাংশ এই সময় পর্যন্ত ভারতীয় অর্থনীতিতে করোনার কোন প্রভাব পড়েনি তবুও বৃদ্ধির হার প্রত্যেক ত্রৈমাসিকে অধগামী হয়েছে ২০২০ সালে এপ্রিল-জুনে ত্রৈমাসিক পরিসংখ্যানে সঙ্কচনের আশঙ্কা ছিলই কিন্তু আশঙ্কা ছাপিয়ে সঙ্কোচনের হার (-) ২৩৯ শতাংশ আগামী দিনে যা আরও বড় বিপর্যয়ের পূর্বাভাস দেশ তীব্র আর্থিক মন্দার কবলে পড়তে চলেছে
ক্রিসিল রেটিং সংস্থার আশঙ্কা স্বাধীনতার পর দেশ সবচেয়ে বড় মন্দার সম্মুখীন হবে পরবর্তী ত্রৈমাসিক গুলিতে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও সঙ্কচনের কবল থেকে মুক্ত হবে না দেশ এমনটাই মনে করে ক্রিসিল রেটিং সংস্থা
আমরা বাঙালী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রী জয়ন্ত দাশ এক সাক্ষাৎকারে বলেন--- করোনা নয়, কেন্দ্রীত অর্থনীতির কুফল এই আর্থিক সঙ্কচন দেশের সিংহভাগ সম্পদ কুক্ষিগত হয়ে আছে মুষ্টিমেয় কয়েকজন ধনকুবেরের হাতে এই কেন্দ্রীত অর্থনীতির পরিকাঠামোয় আর আর্থিক বিকাশ সম্ভব নয় এই আর্থিক বিপর্যয় থেকে মুক্তি পেতে হলে সরকারকে পঁুজিবাদের খোলস থেকে বেরিয়ে আসতে হবে যা পঁুজিবাদ আশ্রিত এই সরকারের পক্ষে সম্ভব নয় তাই দেশবাসীকে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতেই হবে
প্রাউটিষ্ট ইউনিবার্র্সলের কেন্দ্রীয় সাংঘটনিক সচিব আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত বলেন---সরকার যদি অবিলম্বে পঁুজিবাদ নির্ভর কেন্দ্রিত অর্থনীতির পরিকাঠামো থেকে বেরিয়ে প্রাউটের বিকেন্দ্রিত অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ না করলে অর্থনীতির সঙ্কচন ও মহামন্দার হাত থেকে পরিত্রানের অন্যকোন পথ নেই তিনি বলেন--- অর্থনৈতিক সমস্যা, অর্থনৈতিক সম্ভাবনা, ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য ও ভাষা নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ের ভিত্তিতে ভারতবর্ষকে ৪৪টি অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘটন করে, প্রতিটি অঞ্চলের ব্লকস্তর থেকে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে এই বিকেন্দ্রিত ও বাস্তবমুখী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ করলে আসন্ন আর্থিক বিপর্যয় রোধ করা সম্ভব হবে তিনি দেশের অর্থনীতিবিদ ও শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষকে প্রাউটের বিকেন্দ্রিত অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবীতে সরব হওয়ার আহ্বান জানান