প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সালের প্রবীন নেতা শ্রী প্রভাত খাঁ শ্রীরামপুরে এক আলোচনায় বলেন দেশের মানুষের দু-বেলা পেটপুরে খাবার জুটছে না, একদল অসৎ পুঁজিপতিরা হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে৷ করোনাকালে, লক্ডাউনের সময় যখন কয়েককোটি গরীব মানুষ কাজ হারিয়ে বে-রোজগারী হয়ে পড়েছে তখনও ধনকুবেররা তাদের সম্পদ বাড়িয়ে নিয়েছে৷
এই বিপুল ধন বৈষম্যের দেশে প্রধানমন্ত্রীর কন্ঠে আত্মনির্ভরতার বাগাড়ম্বর৷ উনি কাদের আত্মনির্ভরতা চাইছেন! জনগণের সঙ্গে এর চেয়ে বড় প্রবঞ্চনা আর কি হতে পারে? হয় তিনি আত্মনির্ভরতার অর্থ বোঝেন না, নতুবা দেশবাসীর সঙ্গে প্রতারনা করছেন৷ একই কথা বলা যায় সবকা সাথ সবকা বিকাশের ক্ষেত্রেও৷ রাষ্ট্রীয় সম্পদ পুঁজিপতিদের হাতে বেচে দিয়ে সবার বিকাশ যেমন সম্ভব নয়, তেমনি পুঁজিবাদী আর্থিক কাঠাময় আত্মনির্ভর দেশ গড়াও সম্ভব নয়৷ বিজেপি সরকারের অর্থনীতির গতি প্রকৃতি দেখে মনে হয় আত্ম নির্ভরতা চাইছেন ধনকুবেরদের, সমগ্র দেশবাসীর নয়৷
শ্রী খাঁ বলেন দেশের কোন সরকারের পক্ষেই বর্তমান আর্থিক কাঠামোয় আত্মনির্ভর দেশগড়া সম্ভব নয়৷ কারণ সবাই পুঁজিবাদীকেন্দ্রীত অর্থনীতির জালে জড়িয়ে আছে৷ আত্মনির্ভর দেশ গড়তে হলে প্রথম আবশ্যকতা হচ্ছে দেশের প্রতিটি মানুষের নূ্যনতম প্রয়োজন পূর্তি সুনিশ্চিত করা৷ এটা কারও ব্যষ্টিগত অধিকারের ব্যাপার নয়, এটা সামূহিক প্রয়োজন৷ এটা দেশের নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকারের অর্ন্তভুক্ত হওয়া চাই৷
মানুষের নূ্যনতম প্রয়োজন পূর্তি সুলভ হলেই সবার বিকাশ সম্ভব হবে৷ তবে নূ্যনতম প্রয়োজন পূর্ত্তিতেই থেমে থাকলে চলবে৷ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা ও নূ্যনতম প্রয়োজন পূর্তির মান ক্রম বৃদ্ধির নিশ্চিততা দিতে হবে৷ কিন্তু পুঁজিবাদী আর্থিক কাঠামোয় ধনকুবেরদের লক্ষ্যই অধিক মুনাফা করা৷ আর জনগণকে শোষণ না করে সেটা সম্ভব নয়৷ তাই পুঁজিবাদী কাঠামোয় আত্মনির্ভরতা অলীক স্বপ্ণ৷
আলোচনা প্রসঙ্গে শ্রী খাঁ বলেন---একমাত্র প্রাউটের পথেই আত্মনির্ভর দেশ ও সবার সার্বিক বিকাশ বাস্তবায়িত হওয়া সম্ভব৷ প্রাউটের বিকেন্দ্রিত অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় ভৌগোলিক অবস্থান অর্থনৈতিক সমস্যা ও সম্ভাবনা ও জনগোষ্ঠীগত পরিচয় অনুযায়ী অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে স্থানীয় কাঁচামালের ওপর নির্ভর করে ব্লকভিত্তিক শিল্প গড়ে স্থানীয় সকল মানুষের কর্মনিযুক্তি নিশ্চিত করতে হবে৷ এখানে বহিরাগতের কোন অধিকার থাকবে না৷ এর ফলে স্থানীয় কাঁচামালের বহিঃস্রোত বন্ধ হবে ও আর্থিক ক্ষমতা স্থানীয় মানুষের হাতে থাকবে৷ সবার বিকাশ ও আত্মনির্ভর দেশ গড়ার এটাই একমাত্র পথ৷ বর্তমান শাসকদল ও রাজনৈতিক দলগুলির টিকি পুঁজিবাদীদের হাতে বাঁধা৷ যেই শাসন ক্ষমতায় আসুক পুঁজিবাদীদের স্বার্থ রক্ষা করাই তাদের কাজ হবে৷ তাই আত্মনির্ভর দেশ গড়তে হলে বর্তমান অর্থনৈতিক পরিকাঠামো ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে ‘প্রাউটে’র বিকেন্দ্রিত পথে নূতন অর্থনৈতিক পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে৷