চরম দারিদ্রের মধ্যে থেকেও বাগদার এক কিশোর অ্যাথলেটিক্সে সাড়া ফেলে দিলেন সম্প্রতি সল্টলেকের একটি প্রতিযোগিতায়৷ ১০.৯ সেকেণ্ডে ১০০ মিটার দৌড়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছে ১৭ বছরের এই কিশোর বাপী৷ নিঃসন্দেহে বাপীর মত এই প্রতিভাধরদের ঘষামাজা করলে বিশ্ব ক্রীড়া জগতে ভারতের মুখ উজ্জ্বল হবেই৷ কিন্তু বাপীর মত ক্রীড়াবিদরা অনেকেই হারিয়ে যান শুধুমাত্র দারিদ্রতার সঙ্গে যুঝতে গিয়ে৷ সংসারের বেহাল অবস্থা প্রতিনিয়ত দেখতে দেখতে নিজেদের প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর চেয়ে সংসারের হাল ধরতেই তাদের ব্যস্ত হতে হয়৷ এমন আশঙ্কাই করছেন বাপীর বর্তমান কোচ গৌরবাবু৷ তবু তিনি থামতে চান না৷ সকাল-সন্ধ্যে বাপীকে উৎসাহ যোগান, অনুশীলনে হাজির থেকে বাপীর ভুলত্রুটিগুলো শুধরে দেন৷ শুধু তাই নয়, গৌরবাবু বাপীর শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানোর জন্যে উপযুক্ত প্রোটিনের যোগান দেন৷
বাপীর বাবা আরফান শেখ সামান্য ভ্যান চালক৷ সারা দিনে যা আয় করেন তা দিয়ে কোনওমতে সংসারের খাওয়া-খরচ জোটান৷ খেলাধূলার খরচ যোগানো তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়৷ তাই ছেলে বাপী যখন ভলিবল খেলোয়াড় হবে বলে মাঠে যেত তখন তিনি ছেলেকে বিশেষ সাহায্য করতে পারেননি৷ এরপর গৌরবাবুর সংস্পর্শে এসে বাপী যখন দৌড়বিদ হওয়ার স্বপ্ণ দেখতে শুরু করে তখনও তিনি বাপীর প্রতি আলাদা ভাবে চিন্তাভাবনা করতে পারেননি৷ কারণটা তাঁর দারিদ্র্যতা৷ প্রতিদিন অন্ন যোগানোটাই তাঁর কাছে কষ্টসাধ্য, ছেলের মাঠের খরচ যোগানোটা তার নাগালের বাইরে৷
যাইহোক কোচ গৌরবাবুর সহায়তায় বাপী ভাল অ্যাথলিট হওয়ার নজির রেখেছে৷ বাপীর স্কুল সিন্দ্রানী উচ্চ-বিদ্যালয়ও বাপীকে সম্বর্ধনা দিয়েছে, উৎসাহ জুগিয়েছে৷ এখন সরকারী সহযোগিতা পেলে বাপীর মত প্রতিভারা তাদের বিকাশ ঘটাতে পারবে---দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা থেকে ভারতের হয়ে সোণা জয় করে ভারতের মুখ উজ্জ্বল করবে---আমরা এই আশা রাখি৷