বাঙালী বিজ্ঞানীর বিস্ময়কর সাফল্য সাগরের নোনা জল থেকে ইউরেনিয়াম

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

অফুরন্ত সম্পদের ভাণ্ডার সমুদ্র৷ তার অতলান্ত জলরাশির গভীরতায় জৈব উপাদানের পাশাপাশি রয়েছে অত্যন্ত মূল্যবান খনিজ সম্পদও৷ কে জানত সমুদ্রের নোনা জলের ঢেউয়ের  মধ্যেও পাওয়া যেতে পারে মহার্ঘ সম্পদ? সেরকমই এক রত্নভাণ্ডার ইউরেনিয়ামের খোঁজ পাওয়া গেছে সমুদ্রের ঢেউয়ে৷ যা দিয়ে গোটা পৃথিবীর হাজার বছরের জ্বালানী সমস্যার সমাধান হতে পারে৷ তবে এই নোনা জল থেকে তেজস্ক্রিয় ধাতু ছেঁকে তোলা ছিল সারা পৃথিবীর তাবড় বিজ্ঞানীদের কাছে অত্যন্ত কঠিন কাজ৷ সেই কঠিন কাজই এবার কার্যত খুবই সোজা উপায় করে দেখালেন বাঙলার ঘরের ছেলে বিখ্যাত বিজ্ঞানী সুজিত কুমার ঘোষ৷ তিনি বাঁকুড়ার বাসিন্দা৷ বিলেতের রয়্যাল সোসাইটি অব কেমিষ্ট্রির একটি পত্রিকায় গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হয়েছে সেই গবেষনা৷ বিজ্ঞানী মহলের ধারণা এই আবিস্কারের ফলে খুবই উপকৃত হবে ভারতবর্ষ৷ বিশেষ করে ভারতবর্ষ অর্থনীতি ও প্রতিরক্ষায় অনেক এগিয়ে যাবে৷

সমগ্র গবেষণাটির পিছনে আছে পুনেস্থিত ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যাণ্ড রিসার্চ (আইসার)৷ সুজিত বাবু এখানে কেমিষ্ট্রি বিভাগে অধ্যাপনারত৷ তার তত্ত্বাবধানে পি.এইচ.ডি করা সমরাজ মল্লিক এই গবেষণা পত্রের মূল লেখক৷ সুজিতাবাবুর কথায়---ভূগর্ভে যে পরিমান ইউরেনিয়াম সঞ্চিত আছে তাতে সারা পৃথিবীতে বড় জোর একশ বছর জ্বালানি সমস্যা মেটানো যাবে৷ কিন্তু  তার পর কি হবে? এই সমস্যা নিরসনের জন্য সারা পৃথিবীর বিজ্ঞান কুল নানা ভাবে গবেষণা করে চলেছেন৷ বিজ্ঞানী সুজিত বাবুর এই আবিস্কারের ফলে আগামী দিনে কয়লার ব্যবহার কমবে৷ বাড়বে পারমাণবিক বিদ্যুতের ওপর নির্ভরতা৷ যার ফলে দ্রুত নিঃশেষিত হবে ইউরেনিয়ামের ভাঁড়ার৷ কিন্তু  সমুদ্রের জলে যে পরিমাণ ইউরেনিয়াম মিশে আছে তাতে ভবিষ্যতের মানবসভ্যতাকে হাজার বছর জ্বালানীর নিশ্চিততা দেবে৷ বিজ্ঞানীদের সমীক্ষায় দেখা গেছে সমুদ্রের জলে মিশে থাকা ইউরেনিয়ামের পরিমান প্রায় ৪৫০ কোটি মেট্রিক টন৷ তবে জলের সঙ্গে দ্রবীভূত অবস্থায় থাকার ফলে  তার ঘনত্ব খুবই কম৷ সুজিতবাবুর কথায়--- ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামর মতো মৌল থেকে ইউরেনিয়ামকে আলাদা করাটা রীতিমতো চ্যালেঞ্জের ছিল৷  আমেরিকা, জাপান, প্রভৃতি উন্নত দেশগুলো অনেক চেষ্টা করলেও শেষপর্যন্ত সাফল্য তাদের কাছে ছিল অধরা৷ শেষ হাসি হাসলেন বাঙালী বিজ্ঞানী৷ তার তৈরী একটি যৌগ ইউরেনিয়াম আহরণের পথ দেখিয়েছে৷ ধাতুর সঙ্গে জৈব যৌগ মিশিয়ে প্রস্তুত করা হয়েছে মেটাল অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্ক (এম.ও.এফ)৷ তাতে বৈদ্যুতিক আয়নযুক্ত ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বা মাইক্রোপোরস থাকে৷ সেই জায়গা দিয়েই প্রবেশ করে তেজস্কিয় ধাতু৷ গবেষণায় দেখা গেছে দুঘন্টার মধ্যে জলের ৯৫ শতাংশ ইউরেনিয়াম শোষণ করছে ওই যৌগ৷ গবেষণাটি চলে ২৫দিন ধরে৷ কিন্তু মাত্র দুদিনের মধ্যেই ব্যবহারের উপযোগী ইউরেনিয়াম ধাতু সঞ্চয় করা সম্ভব হয়৷