বাঙালী নির্যাতনের বিরুদ্ধে মিজোরাম ভবনে আমরা বাঙালীর প্রতিবাদ

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

কলকাতা ঃ মিজোরামে দীর্ঘদিন থেকে বাঙালীদের  ওপর নানানভাবে নির্র্যতন চলছে৷ সম্প্রতি মিজোরামের  ‘ইয়ং মিজো এ্যাসোসিয়েশন’ নামে মিজোদের  একটি সংস্থা লুংলে শহরে ২০ জন বাঙালী ব্যবসায়ীর দোকানে  নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়েছে যে, ‘৩১ শে আগষ্ট, ২০১৭-এর মধ্যে মিজোরাম ছেড়ে চলে যেতে হবে৷ নইলে শাস্তি ভোগ করতে হবে৷’

পুলিশের কাছে সবকিছু জানানো সত্ত্বেও প্রশাসনের তরফ থেকে বাঙালীদের নিরাপত্তার কোনো আশ্বাস দেয় নি৷

এই পরিপ্রেক্ষিতে ‘আমরা বাঙালী’-র পক্ষ থেকে এক প্রতিনিধিদল কলকাতার মিজোরাম ভবনে গিয়ে এখানকার আধিকারিক মারফৎ মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে এক স্মারকপত্র প্রেরণ করা হয়৷ ওই স্মারকপত্রে মিজোরামের বাঙালী ব্যবসায়ীদের প্রতি উগ্রপন্থী মিজোদের নির্র্যতনের ও হুমকির সংবাদ জানিয়ে  অবিলম্বে এর প্রতিকারের দাবী করা হয়৷

স্মারকলিপি পেশকালে আমরা বাঙালীর কেন্দ্রীয় সচিব বকুল চন্দ্র রায় বলেন, ভারতীয় সংবিধান অনুসারে বাঙালীদের ভারতের যে কোনো রাজ্যে বসবাস করার ও জীবিকা অর্জন করার অধিকার রয়েছে৷ আমরা বাঙালী নেতা মিজোরামের বাঙালীদের সম্পূর্ণ নিরাপত্তার ও তাদের জীবিকা অর্জনের স্বাধীনতার  দাবী করেন ও যারা তাদের প্রতি হুমকি দিচ্ছে তাদের শাস্তি দাবী করেন৷

ওই স্মারকলিপি প্রদানের সময় আমরা বাঙালীর  প্রতিনিধি  দলে আমরা বাঙালীর  কেন্দ্রীয় সচিব ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তারাপদ বিশ্বাস, সাগরিকা পাল, দিব্যেন্দু চৌধুরী, বিভূতি দত্ত, সুনীল মাহাতো, সুধীর মাহাতো প্রমুখ৷

আমরা বাঙালীর পক্ষ থেকে প্রদত্ত স্মারকলিপিটি নিম্নরূপ ঃ---

‘‘আমরা বাঙালী’’ সংঘটনের  পক্ষ থেকে আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, চলতি আগষ্ট, ২০১৭ মাসের শুরুতেই আপনার রাজ্যের লুংলে শহরে বসবাসকারী কুড়ি (২০) জন বাঙালী ব্যবসায়ীর দোকানে তালা লাগিয়ে দিয়েছে ‘‘ইয়ং মিজো এ্যসোসিয়েশান’’-এর সদস্যরা৷ প্রতিটি দোকানেই নোটিশ ঝুলিয়ে নির্দেশ জারী করেছে---‘‘৩১ শে আগষ্ট ২০১৭-র মধ্যে মিজোরাম ছেড়ে চলে যেতে হবে’’ তাছাড়া অবিলম্বে মিজোরাম ত্যাগ করে চলে না গেলে, বাঙালীদের শাস্তি ভোগ করার শাসানিও দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু অতীব দু:খজনক ঘটনা এই যে, আপনার  পুলিশ নিষ্ক্রিয় উপুরিউক্ত ঘটনা থেকে আজ পর্যন্ত মিজোরাম পুলিশ বাঙালীদের কোন নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি৷ লুংলে-র বাঙালী নাগরিকেরা নিরাপত্তার অভাবে আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা এখন কার্যত: দিশেহারা৷

মিজোরাম পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা প্রমাণ করছে যে, মিজোরাম সরকার বাঙালী-বিদ্বেষী উগ্র মিজো জাতীয়তাবাদদের প্রশ্রয় দিয়ে চলেছে৷ আপনার প্রশাসনের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা ঊধর্বতন কর্তৃপক্ষের অত্যাশ্চর্য নীরবতা পুলিশী নিষ্ক্রিয়তাকে সমর্থন করছে---যা অত্যন্ত বিপজ্জনক৷

মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীজী, আপনি রাজ্যের সবের্র্বচ্চ প্রশাসক৷ আপনি তো অবগত আছেন যে, ভারতবর্ষের সংবিধানে যে কোনো নাগরিক দেশের যে কোনো রাজ্যে বসবাস ও ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারে তাহলে বাঙালীরা উগ্র মিজোদের হাতে অত্যাচারিত হচ্ছে কেন? মিজোরাম কি ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের  বাইরে? অতীতেও মিজোরামে এ জাতীয়  অনেক ঘটনা ঘটেছে৷

মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীজী ! কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগের বিভিন্ন রিপোর্টে প্রকাশ পেয়েছে, ভারতবর্ষের উত্তর-পূর্র্বঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপে মদত দিচ্ছে বিদেশী রাষ্ট্র৷ সে জন্য, আশা করি, ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের  অখন্ডতা, সার্বভৌমত্বের স্বার্থে বাঙালীদের সাংবিধানিক  অধিকার রক্ষার ব্যাপারে যথাবিহিত ব্যবস্থাদি গ্রহণ করবেন৷

          ভবদীয়

          বকুল চন্দ্র রায়

          কেন্দ্রীয় সম্পাদক

          আমরা বাঙালী