গত ১৯শে মে বরাকের একাদশ বাংলা ভাষা শহীদদের স্মরণসভা প্রতিবারের মতো এবারও সারা বাঙালীস্তান জুড়ে ‘আমরা বাঙালী’ সংঘটন আয়োজন করে৷ বারাসাত, নবব্যারাকপুর,কাকিনাড়া, নৈহাটি, মেদিনীপুর ত্রিপুরা, অসম সহ বাঙালীস্তানের বিভিন্ন অঞ্চল জুড়ে ‘বাংলাভাষা শহীদ দিবস’ পালন করা হয়৷ কেন্দ্রীয়ভাবে শ্যামবাজার মেট্রোর সামনে ‘আমরা বাঙালী’র জমায়েত ও শহীদ স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সচিব জ্যোতিবিকাশ সিনহা, সাংঘটনিক সচিব জয়ন্ত দাশ, যুব সচিব তপোময় বিশ্বাস, হিতাংশু বন্দ্যোপাধ্যায়, বাপি পাল, অরূপ মজুমদার, মোহন অধিকারী সহ বিভিন্ন বক্তগণ৷ জ্যোতিবিকাশ সিনহা বলেন--- বাঙলা জুড়ে যে হিন্দী আগ্রাসন চলছে, অবিলম্বে তা আগ্রাসনকে বন্ধ করতে হবে৷ বাঙালী করের টাকায় বাঙলায় কোন উর্দু একাডেমী, হিন্দী বিশ্ববিদ্যালয় খোলা যাবে না৷
বাঙালী বন্ধু সচেতন হোন, বাংলা ভাষায় কথা বলুন, বাংলা ভাষার স্বাক্ষর করুন৷ এন.আর.সি নামক বিপদ থেকে বাঙালীকে বাঁচতে বাঙালীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে৷ সেই ঐক্যবদ্ধতার লড়াইয়ের হাতিয়ার মাতৃভাষা বাংলা ভাষা৷ ভারতের মাটিতে একটি বাঙালীকেও বিদেশি বলা চলছে না চলবে না৷ তপোময় বিশ্বাস বলেন---আজকের বরাক উপতক্যা অর্থাৎ শিলচর, কাছাড়, হাইলাকান্দি, গোয়ালপাড়া, নওগাঁও, লামডিং লঙ্কা, হোজাই ইত্যাদি অঞ্চল বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত ছিল৷ ১৮৭৪ সালে কুচক্রী ব্রিটিশ সেই অঞ্চলগুলি বাঙলা থেকে কেটে অসম প্রদেশের সঙ্গে যুক্ত করে৷ স্বাধীনতা পরবর্তী বরাকের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মাতৃভাষা বাংলা ভাষা হওয়া সত্ত্বেও তাদের উপর জোর করে অহমিয়া ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার ফলেই ১৯৬১-র ১৯শে মে এই ভাষা আন্দোলন ও একাদশ বাংলা ভাষা আন্দোলনকারীর আত্মবলিদান৷ আজকেও আমরা দেখছি শুধু অসম নয়, ত্রিপুরা নয়, পশ্চিমবঙ্গেও বাংলার ভাষায় কথা বললে সহজেই বাংলাদেশী আখ্যা, অপবাদ দিয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ এটা চলতে পারে না৷ বাঙালীর রক্তে অর্জিত স্বাধীন ভারতে কোন বাঙালীকে বিদেশি তকমা প্রদান আমরা মানবো না৷ আমাদের দাবি এই সমস্যার সমাধানে ভারতে অবস্থিত বাংলা ভাষাভাষী এলাকা নিয়ে ভারতীয় সংবিধানকে মান্যতা দিয়ে ‘বাঙালীস্তান’ ঘটন করতে হবে৷