তাসমানিয়ান বাঘ৷ প্রায় এক শতাব্দী আগে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া একটি প্রজাতি৷ পিঠে ডোরাকাটা দাগের জন্য একে বাঘের তকমা দেওয়া হলেও আদতে এই প্রাণীটির নাম ছিল থাইলাসিন৷ এটি আসলে মার্সুপিয়াল গোত্রের এক ধরনের অস্ট্রেলিয়ান স্তন্যপায়ী প্রাণী যারা নিজেদের থলিতে করে বাচ্চা লালনপালন করে৷ প্রায় ৩ হাজার বছর আগে তাসমানিয়ান বাঘেরা অস্ট্রেলিয়া জুড়ে দাপিয়ে বেড়াত৷ তাদের দৌরাত্ম্যে ভেড়াদের প্রাণ বাঁচাতে পশুপালকদের রীতিমতো নাজেহাল অবস্থা হত৷ সে কারণে গবাদি পশুদের রক্ষা করতে নির্বিচারে নিধন করা শুরু হয় তাসমানিয়ান বাঘের৷ বিজ্ঞানীরা ১১০ বছর ধরে ইথানলে সংরক্ষিত তাসমানিয়ান বাঘের মাথার খুলি-সহ তাদের গবেষণার জন্য বিভিন্ন জাদুঘর থেকে তাসমানিয়ান বাঘের নমুনা সংগ্রহ করছেন৷ তাসমানিয়ান বাঘ নিয়ে গবেষণাটি মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও টেক্সাসের প্রতিষ্ঠান কলোসাল বায়োসায়েন্সেসের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত হচ্ছে৷
অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের নেতৃত্বে ‘থাইলাসিন ইন্টিগ্রেটেড জেনেটিক রিস্টোরেশন রিসার্চ’ নামে একটি গবেষণাগার তৈরির জন্য ৩০ কোটির অনুদান দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷ ডুনার্ট নামের প্রাণীটি তাসমানিয়ান বাঘের চেয়ে আকারে অনেক ছোট৷ তবে এদের মধ্যে সাদৃশ্য হল দুটিই তাদের লেজে চর্বি জমা করে এবং মাংসাশী এই প্রাণী দু’টি শিকারের জন্য ধারালো দাঁত ব্যবহার করে৷ তাসমানিয়ান বাঘ নিয়ে এই গবেষণাটি পরিচালনা করছেন মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অ্যান্ড্রু পাস্ক৷ তাঁর বিশ্বাস, খুব শীঘ্রই প্রথম থাইলাসাইন শাবকটি পৃথিবীর আলো দেখবে৷ কিন্তু গবেষণারত বিজ্ঞানীদের কথায়, তাঁরা থাইলাসিন বা তাসমানিয়ান বাঘ ফিরে এলে তাসমানিয়ান ডেভিল নামের একটি প্রাণীর জনসংখ্যার দ্রুত ছড়িয়ে পড়া সমস্যার সমাধান করতে পারে৷ কারণ এটিও মার্সুপিয়াল গোত্রের প্রাণী যা তাসমানিয়ায় দেখা যায়৷ এই প্রাণীটি এমন একটি মুখের ক্যানসারের জীবাণু বহন করে যা অন্য প্রাণীকে কামড়ালে ছড়িয়ে পড়ে৷ এদের বৃদ্ধি কমাতে তাসমানিয়ান বাঘকে ফিরিয়ে আনার তোড়জোড় শুরু করেছেন অষ্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরা৷