বিদ্যাসাগরের জন্মদিবসকে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করল ‘আমরা বাঙালী’ ও বাঙালী ছাত্র যুব সমাজ

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিবসকে ‘শিক্ষক দিবস’ হিসেবে ঘোষণা ও পালন করার দাবী করল ‘বাঙালী ছাত্র-যুব সমাজ’ সংঘটন৷ এই মর্মে সংঘটনের কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়৷ এক প্রেস বার্তায় সংঘটনের কেন্দ্রীয় যুব সমাজ সচিব তপোময় বিশ্বাস বলেন ‘আমরা বাঙালী’ ছাত্র-যুব সমাজ’ সংঘটনের পক্ষ থেকে বলতে চাই--- ৫ই সেপ্ঢেম্বর (সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের জন্মদিবস) নয়, বরং যাঁর অবদানে আজকের সমাজে শিক্ষার আলো সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়েছে, সমাজ কুসংস্কার মুক্ত হয়েছে সেই মহান মনীষী ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিবস অর্থাৎ ‘‘২৬শে সেপ্ঢেম্বর’’কে ‘শিক্ষক দিবস’ হিসেবে ঘোষনা ও পালন করা হোক৷

আমরা জানি, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বহু বাঁধা অতিক্রম করে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ভারতে ইংরেজি শিক্ষার প্রচার-প্রসার ঘটিয়েছেন, তৎকালীন ভারতীয় সমাজে নারীদের উপর অত্যাচার,লাঞ্ছনা, বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াই করে তিনি বাল্য বিবাহ রোধ করেছেন, বিধবা বিবাহের প্রচলন করেছেন, নারী শিক্ষা প্রচলনের জন্য পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে মেয়েদের বিদ্যালয় স্থাপন করেছেন৷ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর উপলব্ধি করেন যে, নারী জাতির উন্নতি না ঘটলে বাঙলা সমাজ ও সংস্কৃতির প্রকৃত উন্নতি সম্ভব নয়৷ এই জন্য তাদের মধ্যে শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটানো দরকার৷ মেয়েদের জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার কথা উপলব্ধি করেই বিদ্যাসাগরের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ ছিল ড্রিঙ্কওয়াটার বিটনের সঙ্গে যৌথভাবে কলকাতায় হিন্দু বালিকা বিদ্যালয় (বর্তমান বেথুন স্কুল) প্রতিষ্ঠা৷ বিদ্যাসাগর বর্ধমান জেলায় মেয়েদের জন্য একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন৷ গ্রামাঞ্চলের নারীদের মধ্যে শিক্ষার প্রসারে বিদ্যাসাগর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন৷ তিনি ব্যষ্টিগত উদ্যোগ নিয়ে নদীয়া, বর্ধমান, হুগলি ও মেদিনীপুর জেলায় ৩৫টি বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন৷ এগুলিতে ১৩ হাজার ছাত্রী পড়ানো হতো৷ তার ব্যষ্টিগত ব্যয়ে বিদ্যালয়গুলো চলত৷ বর্তমানেও সমাজ নানান কুসংস্কার, দুর্নীতিতে নিমজ্জিত৷ আমরা যদি বিদ্যাসাগরের নীতি-আদর্শকে ছোট্ট ছোট্ট ছাত্র ছাত্রাদের অন্তরে প্রবেশ করাতে পারি, ধীরে ধীরে সমাজ জীবন থেকে অন্যায়, দুর্নীতি কমতে বাধ্য হবে ও অদূর ভবিষ্যতে দুর্নীতিমুক্ত শোষণহীন বাঙলা ঘটনে বিদ্যাসাগরের আদর্শে দীক্ষিত হয়ে ছাত্র ছাত্রীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেই মনে করি৷

তাই আমরা বাঙালী ছাত্র-যুব সমাজে’র কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য শিক্ষা মন্ত্রকের নিকট স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে সরকারের কাছে দাবী রাখছি---২৬শে সেপ্ঢেম্বর  মহান পুরুষ, মনীষী সমাজ সংস্কারক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিবসকে ‘শিক্ষক দিবস’ হিসেবে ঘোষনা ও পালন করা হোক ও এই বিষয়ে রাজ্য সরকার  যাতে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে দেশজুড়ে তা পালন করার আহ্বান জানায় সেই অনুরোধও রেখেছি আমরা৷