বিজেপির গ্যারান্টি বাঙালীদের আতঙ্ক বাড়াচ্ছে

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

পূর্ব ও উঃপূর্বাঞ্চলের বাঙালীরা নিজের ভূমিতে বাস করেও নাগরিকত্বহীনের আতঙ্কে ভুগছে৷ সেই আতঙ্ক আরও বাড়াচ্ছে বিজেপির গ্যারান্টি, বলা ভালো মোদির গ্যারান্টি৷ ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের আগে অসমে নরেন্দ্রমোদি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ডিটেনশন ক্যাম্প গুঁড়িয়ে দেবে বিজেপি সরকারে এলে৷ কিন্তু কেন্দ্রে ও রাজ্যে ডবল ইঞ্জিন সরকার প্রতিষ্ঠিত হবার পর এশিয়ার বৃহত্তম ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরী করেছে বিজেপি সরকার অসমের গোয়ালপাড়ায়৷ এবার পশ্চিমবঙ্গে প্রচারে এসে অমিত শাহ বলছেন ঘরে ঘরে গিয়ে নাগরিকত্ব দেবে৷ অসমে বিজেপি প্রচার করছে ডি-ভোটার সমস্যার সমাধান করবে এবারের বিজেপি সরকার নির্বাচনের পর৷

কিন্তু ডিটেনশন ক্যাম্প, কালো টাকা ফেরৎ, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন বিজেপি প্রতিশ্রুতি নিয়ে মানুষের অভিজ্ঞতা বড় তিক্ত৷ অতীতের সেই অভিজ্ঞতা থেকেই পূর্ব ও উঃপূর্বাঞ্চলের বাঙালীরা আতঙ্কে ভুগছেন৷ অসমে বাঙালীদের আতঙ্কের কারণ গোয়ালপাড়ার ডিটেনশন ক্যাম্প৷ এখন সেই ক্যাম্পে রয়েছেন মাত্র ৭জন৷ বাঙালীদের আশঙ্কা, ভোট মিটলেই ভর্তি শুরু হবে সেখানে৷ কারণ ইতিমধ্যেই অসমে দেড় লক্ষ নাগরিককে ‘বিদেশি’ বলে শনাক্ত করা হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনী প্রচারে বলছেন অসমে মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ অবৈধ বাংলাদেশী৷

ফলে বাড়ছে আতঙ্ক৷ তৃণমূল রাজ্যসভার সাংসদ বরাক বঙ্গের নেতৃ সুস্মিতা দেব বলেন--- ভোট মিটলেই শুরু হবে বিজেপির বাঙালী-বিদ্বেষের খেলা৷ মুখ্যমন্ত্রীর প্রচারের ভাষায় সেই ইঙ্গিত৷ তাই অনেকেই প্রহর গুনছেন ডিটেনশন ক্যাম্পে যাওয়ার৷ ক্যা-যে বাঙালীকে বিদেশী বানাবার ফাঁদ সেটা অনেকেই বুঝতে পারছে৷ তাই আবেদনও করছেন না কেউ৷ ভোটের আগে অবশ্য বিজেপি বলেছে, ক্যা-কে সহজ করা হবে’’৷ সেটাই বাঙালীর আরও আতঙ্কের কারণ৷ বিজেপি মুখে যা বলে কাজে তার বিপরীতটাই করে৷ বরাকের মানুষ জানেন, হিমন্তদের জন্যই ভূ-ভারতে একমাত্র অসমেই ডি বা সন্দেহভাজন ভোটারের সংস্থান রয়েছে৷ হিমন্ত বিশ্বশর্মার শতাধিক ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল প্রতিনিয়ত ভারতীয় বাঙালীদের বিদেশি বানিয়ে চলেছে বলেও তাঁদের অভিযোগ৷ ২৭ লক্ষ মানুষের আধার কার্ড আটকে রাখা হয়েছে৷ এ বছরের শুরুতে হিমন্তের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রাজ্যে ৯৬,৯৮৭ জন ডি-ভোটার আছেন৷ এঁদের সকলকেই নাগরিকত্বের পরীক্ষা দিতে হবে৷ প্রমাণ না করতে পারলেই ডিটেনশন ক্যাম্প৷ তাই বিজেপির প্রতিশ্রুতি বরাকের তিনটি জেলার দুটি লোকসভা কেন্দ্রের ভোটারদের ভরসা জোগাতে ব্যর্থ৷ তাঁদের ভয়, ভোট মিটলেই আসল চেহারায় বেরিয়ে আসবে বিজেপি৷

অসমের নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমন্বয় সমিতির কো-চেয়ারম্যান সাধন পুরকায়স্থের আশঙ্কা, ভোটের পরই ফের শুরু হবে বাঙালিদের ডিটেনশন ক্যাম্পে ভরার পালা৷ সুদ-সহ মিটিয়ে দেবে যাবতীয় হিসেব৷ তাঁর মতো অনেকেই মনে করেন, বিজেপি আসলে বাঙালীকে ধবংস করতে চায়৷