প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্র্সলের সাংঘটনিক সচিব আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত জেলায় জেলায় সভা করে প্রাউটিষ্ট কর্মীদের উৎসাহিত করছেন৷ তিনি বলেন বর্তমান আর্থ-সামাজিক বিপর্যয়ে প্রাউটই একমাত্র বিকল্প পথ৷ তাই বর্তমান সামাজিক অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে সমাজকে রক্ষা করতে প্রাউটিষ্টদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে৷ তিনি বলেন--- প্রচলিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পুরো কাঠামোটাই পুঁজিপতিদের স্বার্থের দিকে লক্ষ্য রেখে গড়া হয়েছে৷ স্বাধীনতার ৭৪ বছর পরেও সাধারণ মানুষের স্বার্থ সুরক্ষিত করার চিন্তা কোন সরকারই করেনে৷ জনগণের সামাজিক অর্থনৈতিক -রাজনৈতিক বিষয়ে অসচেতনতার সুযোগ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি যে যখন ক্ষমতায় আসে ধনকুবেরদের স্বার্থ রক্ষা করে ও নিজেদের আখের গুছায়৷ তাই প্রাউটিষ্টদের প্রথম কাজ হবে জনগণের মধ্যে জাগরণ ঘটান ও তাদের সচেতন করে তোলা৷
পুঁজিপতি শোষকগোষ্ঠী সমাজের সর্বক্ষেত্রে শোষনের জাল বিস্তার করেছে৷ প্রাউটিষ্টদের প্রাথমিক কাজ হবে বর্তমানে প্রচলিত অর্থনৈতিক কাঠামোর খোল-নলচে পাল্টে নূতন এক সামাজিক অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলতে হবে৷ যার প্রাথমিক লক্ষ্য হবে প্রতিটি মানুষের নূ্যনতম চাহিদাপূরণ অর্থাৎ অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা, বাসস্থান ও শিক্ষা সুনিশ্চিত করা৷ পাশাপাশি দেশ-কাল-পাত্রের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি করা সঙ্গে সঙ্গে মানসিক বিকাশ ও আধ্যাত্মিক প্রগতিরও ব্যবস্থা করতে হবে৷ নতুবা সমাজ থেকে সামাজিক ভেদ-বিভেদও ধর্মান্ধতা দূর করা সম্ভব হবে না৷
আচার্য প্রসূনানন্দ বলেন বর্তমান শাসক দল যে উন্নয়ণের ঢোল পেটায় তা পুঁজিপতির স্বার্থে ও তাদেরই মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে, তাই কোভিড আক্রান্তের চরম সময়ে যখন কোটি কোটি মানুষ কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছে তখনও পুঁজিপতিরা মুনাফা লুঠেছে৷ তাই প্রাউটিষ্টদের লক্ষ্য এই অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে সর্বসাধারণের সার্বিক কল্যাণের স্বার্থে নূতন সামাজিক অর্থনৈতিক পরিকাঠামো গড়ে তোলা৷
প্রাউট সামাজিক অর্থনৈতিক দিক থেকে ভাষা-কৃষ্টি-সংস্কৃতি, নৃতাত্ত্বিক পরিচয়, জল হাওয়া ও ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী ভারতবর্ষকে ৪৪টি স্বয়ং-সম্পূর্ণ সামাজিক অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভাগ করেছে৷ সারা পৃথিবীতে এই ধরণের ২৫০টিরও বেশী সামাজিক অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠিত হবে৷ মূল লক্ষ্য কোন জনগোষ্ঠীর ভাসা কৃষ্টি সংস্কৃতি অবহেলিত বা অবদমিত যাতে না হয়৷ আবার অর্থনৈতিক দিক থেকে প্রতিটি অঞ্চল যাতে স্বনির্ভর হয়ে গড়ে ওঠে৷
প্রতিটি অর্থনৈতিক অঞ্চলের অর্থনৈতিক পরিকল্পনার সূচনা হবে ব্লকস্তর থেকে৷ ব্লকস্তরে দুই ধরণের পরিকল্পনা নেওয়া হবে৷ প্রত্যেক ব্লকের নিজস্ব সম্পদ নির্ভর অন্তর ব্লক পরিকল্পনা ও আবার একাধিক ব্লক নিয়ে আন্ত-বল্ক পরিকল্পনা গড়ে তুলতে হবে৷ প্রাউটের এই আন্ত ব্লক পরিকল্পনার সীমানা বাড়তে বাড়তে একদিন গোটা পৃথিবী এক অর্থনৈতিক পরিকল্পনার ছত্রছায়ায় আসবে৷ এক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা, এক আদর্শ পাথেয় করে এক লক্ষ্যে এগিয়ে চলবে প্রতিটি জনগোষ্ঠী৷ গড়ে উঠবে সত্যিকারের বিশ্বভ্রাতৃত্ব৷