ছেলেটির নাম বাবর আলি৷ বয়স মাত্র ছাবিবস৷ পিতা মহঃ নাসিরুদ্দিন৷ মাতা বানুয়ারা বিবি৷ মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙ্গার নিকটবর্তী ভাবতা গ্রামে তাঁর বাড়ি৷
বর্তমান সমাজ যে সমস্ত সামাজিক রোগে আক্রান্ত তার মূল কারণ অবশ্যই শিক্ষার অভাব৷ ন’বছরের বাবর খেলার ছলেই সেই শিক্ষা বিস্তারে মন দিয়েছিলেন৷ বাবর তখন পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র৷ স্কুল থেকে ফেরার পর নিজের বাড়ির পেয়ারা গাছের নীচে আর একটা স্কুল খুলে বসতেন৷ সেখানে নিজের ছোট ছোট ভাইবোন ও প্রতিবেশী গরীব ঘরের ছেলেমেয়েদের পড়াতেন তিনি স্কুলে প্রতিদিন যা পড়ে আসতেন৷
ছোট্ট ছেলের খেলা ভেবে সেদিন বাবরের বাবা-মা ও প্রতিবেশীরা সেদিকে খুব একটা নজর দেয়নি৷ কিন্তু ধীরে ধীরে বাবরের বিনা পয়সার স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়তে থাকে৷ বাড়তে থাকে শিক্ষকের সংখ্যাও৷ অবশেষে বাবরের স্কুলের বাড়বাড়ন্ত দেখে আর খেলা হিসেবে নিতে পারেনি প্রতিবেশিরা৷ তাই সকলের সাহায্যে পেয়ারা গাছের তলা থেকে স্কুলটি উঠে আসে একটি পাকা বাড়িতে৷ বর্তমানে বাবরের স্কুলে দশ জন শিক্ষক আছেন, যার মধ্যে বেশ কয়েকজন তাঁরই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র৷ বাবরের এই কাজ দেখে বিবিসি সংবাদ মাধ্যম তাঁকে কনিষ্ঠতম হেডমাষ্টারের স্বীকৃতি দেয়৷ এছাড়া ভারত ও বহির্বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সংস্থা তাকে নানা পুরস্কারে ভূষিত করে৷
বর্তমানে বাবর একজন প্রথিতযশা বক্তা৷ বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি আমন্ত্রণ পান বক্তব্য রাখার জন্যে৷ রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দ, নজরুলের বাঙলা থেকে বাবর বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে চলেছেন---শিক্ষার প্রসারের কথা নিয়ে৷