কৃষ্ণ গহ্বর বা ‘ব্ল্যাক হোল’ নিয়ে গবেষণায় সফল হয়েছেন রানিগঞ্জের ভূমিপুত্র৷ কৃষ্ণ গহ্বর সিগনাস এক্স-১-এর পোলারাইজেশন মাপায় সাফল্য পেয়েছেন তন্ময় চট্টোপাধ্যায় নামে ওই বিজ্ঞানী ও তাঁর দল৷ আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত তন্ময় জানান, গত প্রায় ৪০ বছর ধরে চেষ্টা হলেও এই কাজ এর আগে করা যায়নি৷ তাঁদের এই সাফল্যে কৃষ্ণ গহ্বর নিয়ে গবেষণা আরও এগোবে৷
রানিগঞ্জ স্কুলপাড়ার বাসিন্দা তন্ময় পড়াশোনা করেছেন রানিগঞ্জ বয়েজ হাই স্কুলে৷ তার পরে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় ও বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষা৷ ২০১১ সাল থেকে কাজ করেছেন ভারতের অ্যাস্ট্রোনমি স্পেস টেলিস্কোপ অ্যাস্ট্রোস্যাট-এর উপরে৷ বর্তমানে তিনি স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্স এবং অ্যাস্ট্রোফিজিক্স বিভাগের বিজ্ঞানী হিসেবে কর্মরত৷ সেখানে নাসার ‘ফিউচার ্যস্ট্রোনমিক্যাল স্পেস টেলিস্কোপ মিশন’-এ কাজ করছেন৷
তন্ময় জানান, অ্যাস্ট্রোস্যাটের সিজেডটিআই যন্ত্র দিয়ে কৃষ্ণ গহ্বরের পোলারাইজেশন মাপা খুব কঠিন কাজ৷ এক্স-রে বা গামা রশ্মিতে পোলারাইজেশন মাপা বেশ শক্ত৷ এই কাজের পদ্ধতি তৈরি ও তার উন্নয়ন নিয়ে গত প্রায় ১২ বছর ধরে কাজ করছেন তিনি৷ এই প্রথম তাঁরা এই কৃষ্ণ গহ্বরের পোলারাইজেশন বিশদে মাপতে সক্ষম হয়েছেন৷ তিনি আরও জানান, ২০১৫ সালে অ্যাস্ট্রোস্যাট উৎক্ষেপণের পরে ওই কৃষ্ণ গহ্বর নিয়ে তথ্য আসছে৷ গত পাঁচ বছর ধরে সে তথ্য বিশ্লেষণ করেই ফল মিলেছে৷ ভবিষ্যতে এই ফলাফলের উপরে ভিত্তি করে কৃষ্ণ গহ্বরের জেট কী ভাবে তৈরি হয় এবং তাতে কী কী প্রক্রিয়া চলে, সে সব নিয়ে গবেষণায় সাফল্য মিলবে বলে আশাবাদী তন্ময়৷ তন্ময়দের এই গবেষণার কথা আমেরিকার অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি প্রকাশিত পত্রিকায় ছাপা হয়েছে৷ তাঁর কাজের জন্য ২০১৮ সালে তন্ময় অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি অব ইন্ডিয়া থেকেও পুরস্কৃত হয়েছিলেন৷ তাঁর মা বনানি চট্টোপাধ্যায় এখন আসানসোলে থাকেন৷ ছুটিতে মাঝে মধ্যে মায়ের কাছে আসেন তন্ময়৷ এলাকার ছেলের এমন কৃতিত্বে খুশি তাঁদের পড়শিরা৷