ভুটানের বৃষ্টির পরিমাণের ওপর নির্ভর করছে ভারতীয় সেচ ব্যবস্থা

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

ভুটানে কত বৃষ্টি হচ্ছে, কোন নদীতে কত জল বাড়ছে, প্রতিদিন সে খবর আসছে জলপাইগুড়িতে বন্যা প্রতিরোধের আঞ্চলিক কন্েন্টাল রুমে৷ ভুটান থেকে বহু নদী নেমে এসে বয়ে গিয়েছে উত্তরবঙ্গের তিন জেলা দিয়ে৷ জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয় ভুটান থেকে আসা নদী উপচে৷ যদিও ভুটানে কত বৃষ্টি হচ্ছে তার নির্দিষ্ট তথ্য এতদিন উত্তরবঙ্গের সেচ দফতরের কাছে যথাযথ ভাবে পৌঁছত না৷ ফলে প্রায়শই হঠাৎ করে বান আসার খবর পাওয়া যেত বিভিন্ন নদীতে৷ হুড়মুড়িয়ে জল গড়িয়ে এসে উত্তরবঙ্গের সমতলের দু’কূল ভাসিয়ে দিত নদী৷ এ বার থেকে ভুটানের চারটি নদীতে জল বেড়ে যাওয়ার তথ্য পাবে সেচ দফতর৷ দফতর সূত্রের খবর, ভুটানের চার জায়গায় কী পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তার প্রতিদিনের তথ্য হাতে আসতে শুরু করেছে৷ এই তথ্যে জলঢাকা, তোর্সা, সঙ্কোশ এবং রায়ডাক নদীতে জল বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা জানা যাবে সঙ্গে সঙ্গেই৷ তার ফলে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়িতে এই নদীগুলির এবং এর সঙ্গে যুক্ত নদীগুলির দু’পারে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে৷

সেচ দফতর জানিয়েছে, ভুটানের তেন্দ্রু এলাকার বৃষ্টির তথ্য মিলবে, যাতে বোঝা যাবে জলঢাকা নদীতে কতটা জল বাড়তে পারে৷ তোর্সা নদীর কাছে ভুটানের দোরখার বৃষ্টিপাত, সঙ্কোশের ওয়াংদিফুরান, সঙ্কোশ দুবানি এবং রায়ডাক নদীর কাছে ভুটানের চুখায় বৃষ্টিপাতের তথ্য পাবে সেচ দফতর৷ দফতরের মুখ্য বাস্তুকার (উত্তর-পূর্ব) কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক রবিবার বলেন, ‘‘ভুটানের সঙ্গে আমাদের বৈঠকও হয়েছে৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের মাধ্যমে ভুটানের সঙ্গে সমন্বয় রয়েছে৷ বৃষ্টিপাত এবং নদীর জল বৃদ্ধির তথ্য মিলছে, এর ফলে বন্যা প্রতিরোধের কাজে এ বছর খুবই সুবিধে হবে৷’’

 

ভুটান থেকে বৃষ্টি বা নদীতে জল ছাড়ার তথ্য পাওয়া যায় না বলে একাধিকবার রাজ্য সরকারের শীর্ষস্তর থেকে আক্ষেপ প্রকাশ করা হয়েছে৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রককে চিঠিও লেখা হয়েছে৷ তার ফলেই এই তথ্য পাওয়া সম্ভব হয়েছে বলে দাবি৷ যদিও মাত্র চারটি এলাকার বৃষ্টিপাত বা নদীর জলের তথ্য দিয়ে উত্তরবঙ্গের বন্যা মোকাবিলার কাজ করা সম্ভব নয় বলে সেচ দফতরই মনে করছে৷ কারণ, ভুটান থেকে ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত ১০টি নদী-ঝোরা নেমে আসে৷ বর্ষাকালে সেগুলি ফুলেফেঁপে উঠে ভয়ঙ্কর রূপ নেয়৷ সেই নদীর তথ্য এখনও প্রশাসনের কাছে নেই৷ ডায়না, রেতি, সুক্রিতি, কালজানি, জয়ন্তী, রায়ডাক ১ এবং রায়ডাক ২, পানা, বাসরার মতো বন্যাপ্রবণ নদীগুলি ভুটান থেকে কতটা জল নিয়ে নামছে তার তথ্য হাতে না আসা পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের সামগ্রিক বন্যা মোকাবিলা সম্ভব নয় বলে সেচ দফতরের দাবি৷ মুখ্য বাস্তুকারের কথায়, ‘‘ভুটান থেকে আরও তথ্য চাই৷ বৈঠকে সে কথা বলেছি৷’’