ভুয়া ডাক্তারঃ গ্রামাঞ্চলে চিকিৎসা সংকট

সংবাদদাতা
মুসাফির
সময়

ভুয়া ডাক্তার নিয়ে রাজ্যজুড়ে তোলপাড়  শুরু হয়েছে৷ এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০ জনের  বিরুদ্ধে  এফ -আই-আর  করা হয়েছে৷ কেউ  হয়তো ক্লাস টেন পর্যন্ত পড়েছে, কেউ মাধ্যমিক, কিন্তু  এম.বি.বি.এস, অমুক বিশেষজ্ঞ --- ইত্যাদি  সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে ডাক্তারি করে যাচ্ছিলেন৷ বড় বড় হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে এমনি বহু ভুয়ো  ডাক্তারের  সন্ধান পাওয়া গেছে ও যাচ্ছে৷

এঁদের বিরদ্ধে লোক ঠকানোর ব্যবসার জন্যে নিশ্চয়ই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত৷

এখন চিকিৎসার ক্ষেত্রে আর একটি সমস্যা আছে৷ সেদিকেও সহানুভূতির সঙ্গে দৃষ্টি দেওয়ার প্রয়োজন  আছে৷ গ্রামে গঞ্জে  এমনিতে বড় ডাক্তার পাওয়া দুষ্কর৷ তারমধ্যে যে দু’চারজন রয়েছেন, তাঁদের দক্ষিণাও ২০০/৩০০/৪০০/৫০০ টাকা ৷ তারপর রক্ত পরীক্ষা ও নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা রয়েছে৷ তারপর দামী দামী ওষুধ৷  গরীব মানুষের পক্ষে সব সময় ওইসব চিকিৎসকের কাছে যাওয়া সম্ভব হয় না আর্থিক কারণে৷

হয়তো সাধারণ অসুখ বেসুখ --- তার জন্যে  ওই সব বড় ডাক্তারদের  কাছে যাওয়া  সম্ভব নয়৷ হাসপাতালও  বহু দূরে৷ এ সব ক্ষেত্রে  প্রাথমিক স্তরে  সাধারণত: গ্রামাঞ্চলে কিছু  অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কোয়াক ডাক্তারই ভরসা৷ তাঁরা  সামান্য ১০/২০ টাকা দক্ষিণার বিনিময় খুব কম ওষুধ দিয়ে বহু সাধারণ রোগের নিরাময় করেন ৷ কঠিন রোগ হলে বড় ডাক্তারকে রেফার করেন বা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে বড় ডাক্তার দেখিয়ে আনেন৷

গ্রামাঞ্চলে গরীব মানুষের সেবায় এঁদের  অবদান অনস্বীকার্য৷ এরা কোনো বড় ডাক্তারের কাছ থেকে বা কম্পাউন্ডারী করে যা শিখেছেন সেই জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা নিয়েই চিকিৎসা করেন৷ প্রাথমিকভাবে গরীব মানুষের কাছে এদের সেবা মহামূল্যবান৷ গরীব মানুষেরাও এদের বিশেষ শ্রদ্ধা করেন৷ এখন বর্তমান পরিস্থিতিতে  যদি ডাক্তারীর শংসাপত্র না থাকার জন্যে এঁদের ওপরও সমানে হামলা হ’য় তাহলে কিন্তু গরীব মানুষেরাই বিপদে পড়বেন৷ সমাজহিতৈষীদের এটাও মনে রাখতে হবে ও এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে৷ তাই যারা মানুষকে ঠকাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা  নিতে গিয়ে যেন গ্রামাঞ্চলের গরীবের ভরসা ওইসব দরদী চিকিৎসকদের  ওপর অত্যাচার  না হয়, সেটাও দেখতে হবে৷

গোর্খাল্যাণ্ডের মত বিচ্ছিন্নতাবাদী হঠকারী আন্দোলন চিরকালের মত বন্ধ হোক৷