ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল চীন

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

গত মঙ্গলবার সকালে ৭.১ তীব্রতার জোরালো ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তিববত৷ যার প্রভাব পড়ে নেপাল, ভুটান এবং ভারতেও৷ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শিগাতসের এই ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অন্তত আট লক্ষ মানুষ৷ ভূমিকম্পের উৎসস্থল তিববতের তিংরি প্রদেশে৷ এই অঞ্চলটিকে এভারেস্টের উত্তরের প্রবেশদ্বার হিসাবে দেখা হয়৷

প্রথম জোরালো ভূমিকম্পের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতে পর পর কম্পন (আফটার শক) হতে থাকে ওই অঞ্চলে৷ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’ জানিয়েছে, প্রথম ভূমিকম্পের পর ৪০টিরও বেশি কম্পন হয়েছে ওই অঞ্চলে৷ তার মধ্যে ১৬টি কম্পনের মাত্রা ছিল ৩-এর বেশি৷ ভূমিকম্পের পর বেশ কিছু ভিডিয়োও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে৷ যার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন৷ তবে একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে রয়টার্স৷ তারা জানিয়েছে, ওই ভিডিয়োটি তিববতের লাৎসে শহরের কাছে৷ ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, রাস্তার ধারে দোকান ভেঙে পড়েছে৷ ধবংসাবশেষ ছড়িয় ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে রাস্তার উপর৷ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর এক প্রতিবেদন অনুসারে, ভূমিকম্পের উৎসস্থলের কাছাকাছি অঞ্চলে প্রচুর ভবন ভেঙে পড়েছে৷

সাধারণত এই ধরনের জোরালো মাত্রার কোনও ভূমিকম্পের জেরে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থাকে৷ চিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা শিংহুয়া জানিয়েছে, সরকারি আধিকারিকেরা ভূমিকম্পের জেরে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাপ জানার চেষ্টা করছেন৷ ক্ষতিগ্রস্ত শহরগুলির হতাহতের সংখ্যা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন৷

তিববতে ভূমিকম্পের উৎসস্থল থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু৷ সেখানেও কম্পন অনুভূত হয়েছে৷ প্রাণভয়ে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন কাঠমান্ডুর বাসিন্দারা৷ প্রভাব পড়েছে এভারেস্টের পাদদেশে অবস্থিত নেপালের সোলুখুম্বু জেলাতেও৷ সেখানকার মুখ্য জেলা আধিকারিক অনোজ রাজ ঘিমিরে রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সোলুখুম্বুতে জোরালো কম্পন অনুভূত হয়েছে৷ তবে এখনও পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি৷ নেপালের স্থানীয় পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানার চেষ্টা করছে৷ ভুটানের রাজধানী থিম্পু এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে, বিশেষ করে বিহার, উত্তরবঙ্গ, সিকিমের মতো জায়গাগুলিতে কম্পন অনুভূত হয়েছে৷

এর আগে ২০২৩ সালের নভেম্বরেও ৬.৪ মাত্রার জোরালো ভূমিকম্প হয়েছে নেপালে৷ সেই বারের ভূমিকম্পে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয় হিমালয়ের কোলে থাকা এই পাহাড়ি দেশে৷ ২০০৮ সালে দক্ষিণ পশ্চিম চিনের সিচুয়ান প্রদেশের এক ভূমিকম্পে প্রায় ৭০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল৷ ২০১৫ সালে নেপালের কাঠমান্ডুর কাছেও ৭.৮ মাত্রার এক জোরালো ভূমিকম্প হয়৷ তাতে প্রায় ৯ হাজার মানুষ প্রাণ হারান৷ আহত হন কয়েক হাজার মানুষ৷ ক্ষয়ক্ষতির হিসাবে সেটিই নেপালের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প ছিল৷ নেপাল, উত্তর-পূর্ব ভারত এবং দক্ষিণ-পশ্চিম চিনে মাঝেমধ্যেই ভূমিকম্পের খবর পাওয়া যায়৷ বিজ্ঞানীদের একাংশের মতে, এই অঞ্চলে ভারতীয় পাতের সঙ্গে ইউরেশীয় পাতের সংঘর্ষের প্রবণতার কারণে এই অঞ্চলে ভূমিকম্পের আশঙ্কা বেশি থাকে৷