আশঙ্কা ছাপিয়ে আর্থিক সঙ্কোচন ২৪ শতাংশের কাছাকাছি এখান থেকে ঘুরে দাঁড়াবার আশা খুবই কম অর্থনীতিবিদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন আর্থিক সংস্থা সেই আশঙ্কার কথাই শোণাচ্ছে যদিও শাসকদলের নেতামন্ত্রীরা আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন অবশ্য অর্থনীতির সঙ্কটের দায় ভগবানের ঘাড়ে চাপিয়েছেন এই নিয়ে তাঁকে ঘরে বাইরে অনেকেই কটাক্ষ করে চলেছেন বিরোধীরা বলছেন অর্থনীতির দৈনদশা করোনা সংক্রমণের অনেক আগে থেকেই সম্প্রতি অর্থমন্ত্রীর স্বামী পরকাল প্রভাকর বিরোধীদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে অর্থমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বলেছেন---আসল দৈবদুর্বিপাক অর্থনীতির সঙ্কটের মোকাবিলায় সরকারের মধ্যে সুসংহত ভাবনা-চিন্তার অভাব কোভিড তো অনেক দেরীতে এসেছে স্বামীর কটাক্ষ অর্থমন্ত্রী নীরবে হজম করেছেন
পরকাল প্রভাকর আরও বলেন--- ২০১৯ সালের অক্টোবর বলেছিলাম সরকার বাস্তব অস্বীকার করেছে অর্থনীতির সঙ্কোচন ২৩৯ শতাংশ হয়ে আমার কথা ঠিক প্রমাণিত হল
প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্র্সলের কেন্দ্রীয় সংঘটন সচিব আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত বলেন--- সুসংহত ভাবনাচিন্তার অভাব তো বটেই, পঁুজিবাদ আশ্রিত কেন্দ্রিত অর্থনৈতিক কাঠামোয়ে সুসংহত ভাবনা-চিন্তা করাই সম্ভব নয় কোভিড উপলক্ষ্যমাত্র, আসল সমস্যা-কেন্দ্রিত অর্থনৈতিক পরিকাঠামোয় দেশের সিংহভাগ সম্পদ কুক্ষিগত হয়ে আছে মুষ্টিমেয় কিছু ধনকুবেরের হাতে কেন্দ্রিত অর্থনীতির ভিতে গড়া পরিকাঠামো ভেঙে নোতুন পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে ধনকুবেরদের হাতে কুক্ষিগত সম্পদ সর্ব-সাধারণের হাতে তুলে দিতে হবে অর্থনীতিতে আকাশ-পাতাল বৈষম্য দূর করে দিতে হবে, অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে হবে
তারই জন্যে প্রয়োজন সুসংহত ভাবনা-চিন্তা, সুসংহত পরিকল্পনা সেই ভাবনা-চিন্তা, সেই পরিকল্পনার অভাবেই অর্থনীতি ডুবতে বসেছে এই অবস্থায় আত্মনির্ভরতার কথা আকাশ-কুসুম কল্পনা একদিকে সরকারী সংস্থাগুলি তুলে দেওয়া হচ্ছে ধনকুবেরদের হাতে, আবার মানুষকে আত্মনির্ভরতার মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে কেন্দ্রিত অর্থনীতির পরিকাঠাময় বসে সর্বসাধারণের আত্মনির্ভরতা কখনই সম্ভব নয় আত্মনির্ভরতার অর্থ সম্পদ ছড়িয়ে দিতে হবে সর্বসাধারণের হাতে বর্তমানে শাসকদল বা বিরোধীরা সবপক্ষই পঁুজিবাদের অর্থেপুষ্ট তাই পঁুজিবাদ বিরোধী কোন সুসংহত ভাবনা চিন্তা করা, অর্থনীতির বাস্তবমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করা এইসব দলের পক্ষে সম্ভব নয়
আজ অর্থনৈতিক পরিকাঠামোয় বৈপ্লবিক পরিবর্তন ছাড়া অর্থনীতির পক্ষে ঘুরে দাঁড়ান সম্ভব নয় মহান দার্শনিক শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার প্রবর্তিত প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্বের বিকেন্দ্রিত অর্থনীতির বাস্তবায়ন করতে হবে বর্তমান কেন্দ্রিত অর্থনীতির পরিকাঠামোর আমূল পরিবর্তন করে
আর শুধু অর্থনীতি নয়, মানুষের জীবন ধারায় পরিবর্তন আনতে হবে নতুবা করোনার চেয়ে ভয়ঙ্কর কোন বাইরাস আরও মহামারীর রূপ ধরে পৃথিবীর বুকে ছড়িয়ে পড়বে আচার্য প্রসূনানন্দ বলেন---প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে আকাশ-সাগর-নদী, বাতাস, পশু-পক্ষী, উদ্ভিদ-তরুলতা-অরণ্য সবাইকে নিয়ে আমাদের বাঁচতে হবে প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে দৈবদুর্বিপাক বলে এড়িয়ে গেলে চলবে না মানুষের সীমাহীন লোভ বেহিসাবীভাবে প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর হামলে পড়েছে পরিণতিতে ধবংস হচ্ছে অরণ্য গাছ-পালা, পশুপক্ষী-কীটপতঙ্গ ভারসাম্য হারাচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ, দূষিত হচ্ছে আকাশ সাগর নদী বাতাস কোভিড-১৯ এর ন্যায় বাইরাসের সংক্রমণের এগুলোও অন্যতম কারণ দূষণের মাত্রা যত বাড়বে করোনার মত বাইরাসের সংক্রমণও বাড়বে যার কু-প্রভাব সমাজ জীবনে, অর্থনীতিতে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে এর থেকে বাঁচতে হলে প্রাউটের বিকেন্দ্রিত অর্থনীতি ও নব্যমানবতাবাদকে আশ্রয় করে অর্থনীতি ও সমাজজীবনে আমূল পরিবর্তন আনতে হবে সেই লক্ষ্যেই প্রাউটিষ্টরা কাজ করে চলেছে