গত ২০শে জানুয়ারী বহু চর্চিত আর.জি.করের বর্বরচিত ঘটনায় অপরাধী সঞ্জয় রাইকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা ঘোষনা করেন শিয়ালদহ কোর্টের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক অনির্বাণ দাস৷ ওই দিন শিয়ালদহ কোর্ট চত্তরে উপস্থিত অনেকেই অপরাধীর ফাঁসির আদেশ শুণতে চেয়েছিলো৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও চাইছিলেন অপরাধীর চরমদণ্ড হোক৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন--- ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস এটা বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা, ঘৃণ্যতম অপরাধ৷ এক্ষেত্রে একমাত্র মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত৷
‘অপরাধীর ফাঁসির পক্ষেই জনমত ছিল৷ সিবিআই এর আইনজীবী পার্থসারথি দত্ত মৃত্যুদণ্ডের পক্ষেই সওয়াল করেছিলেন৷ কিন্তু বিচারক অনির্বাণ দাস বলেন---আমি দুঃখিত, ঘটনাটি বিরলের মধ্যে বিরলতম নয়৷ তাই এই মামলায় অপরাধীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হল৷
প্রবীন প্রাউটিষ্ট নেতা শ্রী প্রভাত খাঁ বলেন--- প্রাউটিষ্টরা চরমদণ্ডের পক্ষে নয়৷ অপরাধীকে চরমদণ্ড দিলেই সমাজে সুস্থতা ফিরে আসবে না৷ তিনি বলেন---রাষ্ট্রের আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ, প্রশাসন, আইন আদালতের প্রয়োজন আছে৷ তবে বিচার সব সময় ঠিক নাও হতে পারে৷ বিচারের মাপকাঠি নির্দ্ধারণেও ভুল-ত্রুটি থাকতে পারে৷ প্রাউটের দৃষ্টিতে তার জন্যে বিচার ব্যবস্থাকে তুলে দেওয়া যায় না৷ তিনি বলেন প্রাউটের দৃষ্টিতে দেখতে হবে- প্রকৃত অপরাধী যদি বিচার ব্যবস্থার ফাঁক দিয়ে পালিয়েও যায়, একজনও নিরীহ ব্যষ্টি যেন সাজা না পায়৷
শ্রী খাঁ আরও বলেন সমাজকে এই চরম অবক্ষয় থেকে ফিরিয়ে এনে সমাজের সুস্থতা রক্ষা করা বিচারকের কাজ নয়৷ প্রাউটের দৃষ্টিতে বিচারকের কাজ হবে প্রকৃত অপরাধীকে চিহ্ণিত করে সাজা ঘোষনা করা অপরাধীকে সংশোধন করার জন্যে, প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য নয়৷ পুলিশ প্রশাসনের আযোগ্যতায় অপরাধী ধরা না পড়লে সমাজের ক্ষতি, কিন্তু তার চেয়ে বেশী ক্ষতি হবে বিচার পদ্ধতির দোষে নিরীহ ব্যষ্টি সাজা পেলে৷ তবে সমাজের সুস্থতা রক্ষা করার দায়ীত্ব শুধু পুলিশ প্রশাসন আইন আদালতের নয়৷
যারা কবি সাহিত্যিক শিল্পী সমাজের সুস্থতা রক্ষা করার বড় দায় তাদেরও আছে৷ আজকের অনেক কবি সাহিত্যিক শিল্পী নন্দন বিজ্ঞানের অপব্যবহার করে নিম্নমানের হীনরুচির চলচিত্র, সঙ্গীত সাহিত্য, রচনা করে মানুষের পশুবৃত্তিকে উৎসাহিত করছে৷ তারই পরিণতিতে সমাজের সুস্থতা বিঘ্নিত হচ্ছে৷ তাই সমাজের সুস্থতা ফিরিয়ে আনতে কবি সাহিত্যিক শিল্পদেরও বড় ভূমিকা নিতে হবে৷ শুধু বিচার ব্যবস্থার দিকে তাকিয়ে থাকলে চলবে না৷
শুধু অপরাধীকে শাস্তি দিলেই সমাজে সুস্থতা ফিরে আসবে না৷ অপরাধের উৎসে আঘাত দিতে হবে৷ অর্থাৎ অসংস্কৃতিমূলক অশ্লীল নাচা গানা যৌন আবেদন মার্কা হীনরুচির সাহিত্য চলচিত্র বন্ধ করতে হবে৷ শ্রী খাঁ বলেন--- শিল্পীর স্বাধীনতার বিরোধী নয় প্রাউটিষ্টরা৷ কিন্তু মনে রাখতে হবে শিল্প সাহিত্যের উদ্দেশ্য হলো সেবা ও কল্যাণ৷