দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রেও নতুন কর্মপ্রার্থীদের নিয়োগও ধাক্কা খেয়েছে৷ তলানিতে নেমেছে ফ্রেশার্স নিয়োগ৷ একটি সংস্থার সমীক্ষায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে৷ এইচআর সংস্থা এক্সফেনোর তথ্য অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে ভারতের সফটওয়্যার সংক্রান্ত সংস্থাগুলি মাত্র ৬০ থেকে ৭০ হাজার ‘ফ্রেশার্স’ নিয়োগ করেছে৷ যা গত দু’দশকের মধ্যে সবচেয়ে কম৷ বিশ্বজুড়ে আর্থিক বৃদ্ধি শ্লথ হওয়ার প্রভাব ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে পড়েছে বলে জানানো হয়েছে৷ করোনা মহামারীর আগে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে প্রত্যেক বছর ২ লক্ষের কাছাকাছি ফ্রেশার্স নিয়োগ করা হত৷ কিন্তু সেই সংখ্যা এখন নিম্নমুখী৷ গত আর্থিক বছরে দেশের প্রথমসারির পাঁচটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাই কম নিয়োগ করেছে৷ একমাত্র টিসিএস ক্যাম্পাসিংয়ের মাধ্যমে ৪০ হাজার ফ্রেশার্স নিয়োগ করেছিল৷ এক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও শান্তনু রুজের বক্তব্য, ‘সকলেই প্রথম পাঁচে থাকা সংস্থাগুলিতে নিজেদের কেরিয়ার শুরু করতে চায়৷ কিন্তু এই সংস্থাগুলি নিয়োগ করছে না৷ প্রত্যেকের কাছেই বিষয়টি চ্যালেঞ্জিং৷’
তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি নিয়োগ কমিয়ে দেওয়ায় সমস্যায় পড়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিও৷ একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লেসমেন্ট সেলের ডেপুটি ডিরেক্টর অঞ্জনি ভাটনগরের বক্তব্য, ‘প্রত্যেক বছর এই সময় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি জানিয়ে দেয়, পরের বছরের জন্য কতজনকে তারা নিয়োগ করবে৷ আগস্ট মাসের মধ্যে সংস্থাগুলি ক্যাম্পাসে প্লেসমেন্ট শুরু করে দেয়৷ কিন্তু গত বছরের মতো এই বছরও একই পরিস্থিতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছি৷’ টিসিএসের পাশাপাশি ইনফোসিস বা উইপ্রোর মতো সেরা তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি মার্চ, এপ্রিল থেকে প্লেসমেন্টের প্রস্তুতি শুরু করে দেয়৷ কিন্তু এই বছর এখনও পর্যন্ত তারা কোনও উদ্যোগ নেয়নি৷ ভাটনগর জানান, তাঁদের ৭০ শতাংশ পড়ুয়াই তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে চাকরি খোঁজে৷ কিন্তু এভাবে চললে তাদের সমস্যায় পড়তে হবে৷ তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের অধিকার সংক্রান্ত সংগঠন ন্যাসেন্টস ইনফরমেশন টেকনলজি এমপ্লয়িজ সেনেট বা এনআইটিইএসের সভাপতি হরপ্রীত সিং সালুজা জানিয়েছেন, গত দু’বছর ধরে ১০ হাজারের বেশি ফ্রেশার্স মূল চাকরি পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে৷ দু’হাজারকে ফ্রেশার্সকে চাকরি না দেওয়ার জন্য ইনফোসিসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদনও জানিয়েছে এনআইটিইএস৷ তবে তথ্যপ্রযুক্তি মহলের আশা, চলতি আর্থিক বছরে সংস্থাগুলি ফের ফ্রেশার্স নিেেয়াগের সংখ্যা বাড়াবে৷ ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সংস্থা ফ্রেশার্স নিয়োগের যে লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে, তাতে আশার আলো দেখা যাচ্ছে৷ তবে শীর্ষ তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি কম নিয়োগ করার ফলে সুবিধা হয়েছে বিভিন্ন স্টার্ট আপ সংস্থার৷ একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসেব, স্টার্ট আপে নিয়োগের পরিমাণ গত আর্থিক বছরে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে৷