১৯২১ সালের বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিটি পৃথিবীর ইতিহাসে চির-উজ্জ্বল হয়ে থাকবে৷ এই পুণ্যতিথিতে জগদগুরু শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজীর ধরাধামে আবির্র্ভব হয়৷ তাঁর এই জন্ম-তিথিকে সমগ্র বিশ্বের ভক্ত-শিষ্য-অনুগামীরা ভক্তিপূত হৃদয়ে মহোল্লাসে পালন করে থাকেন৷
গত ২৯শে এপ্রিল, ভারতবর্ষের রাজধানী দিল্লিতেও আনন্দপূর্ণিমা সাড়ম্বরে পালন করা হয়৷ অনুষ্ঠান শুরু হয় ভোর ৪-৩০ মিনিটে নগড়কীর্ত্তনের মাধ্যমে আনন্দমার্গের মালবীয় নগরস্থিত আশ্রমে৷ অতঃপর পাঞ্চজন্য, মিলিত সাধনা, আনন্দবাণী পাঠ, বাবা- কথার পর সকলে মিলিতভাবে প্রাতঃরাশ করেন৷
সকাল দশটা থেকে অনুষ্ঠান শুরু হয় চিরাগ দিল্লি স্থিত মিলেনিয়ম পার্কে৷ দু’ঘন্টা ব্যাপী ‘‘বাবা নাম কেবলম্’’ অখন্ড কীর্ত্তনে চারিদিক মুখরিত হয়ে ওঠে৷ কীর্ত্তন শেষ হয় বিকেল চারটায়৷ ইতোমধ্যে প্রায় দেড় হাজার স্থানীয় অতিথি-নারায়ণ সহ মার্গীভাই -বোনেরা দ্বিপ্রাহরিক প্রীতিভোজে যোগ দেন৷
কীর্ত্তনশেষে মিলিত সাধনার পর শুরু হয় তাণ্ডব, কৌশিকী ও আর্ট প্রতিযোগিতা৷ তাণ্ডব প্রতিযোগিতা পঁচিশ জন, কৌশিকী প্রতিযোগিতায় ৬০ জন স্থানীয় প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন৷ বিজেতাদের হাতে পুরস্কার তুলেদেন হাইকোর্টের বিচারক তথা বিশিষ্টমার্গী শ্রী অজয় পাণ্ডে৷ এরপর বিকেল পাঁচটা থেকে ছটা পর্যন্ত রেণেশাঁ ইউনিবার্সালের সভার আয়োজন করা হয়৷ এই সভায় বিভিন্ন বক্তারা তারকব্রহ্ম শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তির সর্বমুখী প্রতিভার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন৷ বুদ্ধিজীবীদের তাঁরা আহ্বান জানিয়ে বলেন, আজকের অবক্ষয়িত সমাজকে বাঁচতে হলে উচ্চমূল্যবোধ ও আধ্যাত্মিকতার ভিত্তিতে একটা বিশ্বৈকতাবাদী সংসৃকতি গড়ে তুলতে হবে৷
এই সভার পরেই শুরু হয় আনন্দমার্গের সাংস্কৃতিক প্রকোষ্ঠ রাওয়া RAWA) আয়োজিত, প্রভাত সঙ্গীত আধারিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান৷
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় কলাবিদরা ও আমন্ত্রিত গায়কী তানিয়া দাম৷ প্রায় হাজার খানেক দর্শক এই মনোরম অনুষ্ঠানটি সাগ্রহে উপভোগ করেন ও গীতিকার ও সুরকার শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের বিস্ময়কর প্রতিভার ভূয়সী প্রশংসা করেন৷
পুরো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি মার্গীভাই আনন্দ ও মার্গীবোন কিরণ বিশ্বাসের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সফল হয়ে ওঠে৷
সমগ্র অনুষ্ঠানটির সাফল্যের পেছনে রয়েছে দিল্লির সমস্ত মার্গী ভাই-বোনেদের স্বতঃস্ফূর্ত সহায়তা ও প্রচেষ্টা, সর্বোপরি তাঁদের পরমারাধ্য গুরুদেবের অপার কৃপা-করুণা৷