মেয়াদ শেষ করে করে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিদায় নিলেন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠি৷ রাজ্যপাল হয়ে আসার আগে তিনি সংঘ পরিবারেরই লোক ছিলেন৷ রাজ্যপাল হয়ে আসার পরও তার নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়ে অনেক সময়ই বিতর্ক হয়েছে৷ রাজ্যপাল হিসেবে দলের ঊর্ধে উঠে যে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করার কথা অনেক সময়ই তিনি তা করেননি৷ বরং কিছুটা বিজেপি তথা সংঘ পরিবারের প্রতি আনুগত্য রেখেই মন্তব্য করেছেন৷ এ অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে বহুবার উঠেছে৷ যাবার বেলায় সেই অভিযোগ ও বিতর্ককে উসকে দিয়েই তিনি গেলেন৷
ভারতবর্ষের মত দেশে রাজ্যে রাজ্যে দলীয় প্রশাসনের মাথায় প্রধান হিসেবে বসিয়ে দেওয়া হয় রাজ্যপালকে৷ যদিও এই পদটির ভূমিকা নিরপেক্ষ হওয়া উচিত, অনেক সময়ই তা হয় না৷ কেননা রাজ্যপাল যেহেতু কেন্দ্রীয় সরকার নিয়োগ করেন, স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্রের শাসক দল তার পছন্দমত লোককে রাজ্যপাল করে পাঠায়৷ কেশরীনাথ ত্রিপাঠীও রাজ্যপাল হয়ে আসার আগে সক্রিয়ভাবে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন৷ তাই অনেক সময়ই তাঁর মন্তব্য রাজ্যের বিজেপি নেতাদের মন্তব্যের সঙ্গে মিলে যায়৷ যাবার বেলায়ও তার ব্যতিক্রম হ’ল না৷ রাজ্যে যে সাম্প্রদায়িক অশান্তি ও সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে তার জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রীকেই সরাসরি দায়ী করেন৷ তিনি অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রীর তোষণ নীতির জন্যেই রাজ্যের সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে৷ এ অভিযোগ বিজেপি নেতারা বারবার করে আসছেন৷ বিদায় কালে রাজ্যপালের কণ্ঠ থেকেও সেই একই সুর শোনা গেল৷ রাজ্যের বিজেপি প্রধান দিলীপ ঘোষ স্বীকার করেছেন---রাজ্যপাল আমাদেরই কথা বলেছেন৷ অর্থাৎ দিলীপবাবুর কথায় স্পষ্ট রাজ্যপাল ওনাদেরই লোক ছিলেন৷
রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় পাল্টা কটাক্ষ করে বলেন---ওনার আমলে রাজভবন তো বিজেপির পার্টি অফিসে পরিণত হয়েছে৷ তাই বিজেপি নেতাদের কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়েই উনি কথা বলেন৷ যাবার বেলাও উনি বিজেপির কাছে নম্বর বাড়াতে চাইছেন৷