গত ১৮ই জুন কলকাতার নজরুল মঞ্চে পুরসভার নির্বাচিত দলীয় প্রতিনিধিদের সভায় মুখ্যমন্ত্রীর বিভিন্ন জনহিতকর প্রকল্পে দলীয় কর্মীদের কাটমানি নেওয়ার বিরুদ্ধে সরব হওয়াকে কেন্দ্র করে গোটা রাজ্যজুড়েই অশান্তি শুরু হয়ে গেছে৷ মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশকে হাতিয়ার করে বিজেপি কর্মীরা রাজ্যজুড়ে জনসাধারণকে বিক্ষোভ আন্দোলনে সামিল করার কর্মসূচী নিয়েছে৷ তাই বিভিন্ন স্থানে সরকারী বিভিন্ন প্রকল্পে কাটমানি ফেরতের দাবীতে জনসাধারণ তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জানাচ্ছে, কোথাও বা তাঁদের বাড়ীতে হামলা করছে৷ গত ২৩ শে জুন বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের চানক পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রীণা চক্রবর্তীর বাড়ীতে বিক্ষুদ্ধ জনসাধারণ কাটমানি ফেরতের দাবীতে হামলা চালায়৷ গ্রামবাসীদের দাবী, তাদের কাছ থেকে ‘আবাস যোজনা’র জন্যে মাথাপিছু ১০ হাজার টাকা, শৌচাগারের জন্যে মাথাপিছু ৮ হাজার টাকা করে কাটমানি আদায় করা হয়েছে৷ এইভাবে তাঁদের হিসেবে তাদের কাছ থেকে মোট প্রায় ১৭-১৮ লক্ষ টাকা কাটমানি আদায় করা হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুসারে অবিলম্বে এই কাটমানি ফেরতের তাঁরা দাবী করেন৷
গত ২রা জুন খোদ বর্ধমান শহরে কাটমানি ফেরতের দাবীতে নীলপুর এলাকায় লোকজন তৃণমূল নেতা পূর্ণেন্দু চট্যোপাধ্যায়ের বাড়ীতে হামলা চালায় ও বাড়ীতে তালা ঝুলিয়ে দেয়৷ পরদিন পূর্ণেন্দু বাবুর মৃতদেহ চৈত্রপুর লকগেট এলাকায় একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়৷
এইভাবে সারা রাজ্যজুড়েই এখানে ওখানে শহরে ও গ্রামে তৃণমূল নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে কাটমানি ফেরতের দাবীতে বিক্ষোভ আন্দোলন, কোথাও বা এ নিয়ে সংঘর্ষ দেখা দিচ্ছে৷ কোথাও কোথাও তৃণমূল নেতার মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে৷ প্রায় সব ক্ষেত্রে বিজেপির পক্ষ থেকেই জনগণকে উত্তেজিত করা হচ্ছে৷
গত ২৬শে জুন বিধানসভাতেও রাজ্যপালের ভাষণের ওপর ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতে গিয়ে বিরোধী দল নেতা তৃণমূলের সমালোচনা সরব হন৷ তিনি অভিযোগ করেন, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে তৃণমূল নেতারা টাকা নিয়ে চাকরী দিয়েছেন৷ এই নিয়ে তৃণমূল ও বিরোধীদের মধ্যে তুমুল বিতর্ক দেখা দেয়৷
মুখ্যমন্ত্রী দলের কর্মীদের সংশোধনের সৎ উদ্দেশ্যে নিয়ে বিবৃতি দিলেও এর পরিণতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা বোঝা যাচ্ছে না৷