দুর্লভপুর (বাঁকুড়া) ঃ গত ১৯শে জানুয়ারী দুর্লভপুর আনন্দমার্গ স্কুলে অখণ্ডকীর্ত্তন, বিনামূল্যে চিকিৎসা শিবির, দুঃস্থদের মধ্যে কম্বল বিতরণ, নারায়ণসেবা ও আনন্দমার্গ স্কুলের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়৷
এখানে উল্লেখ্য, এই তারিখে দুর্লভপুর আননন্দমার্গ স্কুলে এই অনুষ্ঠানের বিশেষ উপলক্ষ্য হল, যাঁর জমিতে ও ওই জমির ওপর তৈরী ভবনে আনন্দমার্গের পরিচালনা স্কুল, আভা সেবাসদন (দাতব্য চিকিৎসালয়), শিশুসদন , সঙ্গীত বিদ্যালয় (প্রভাত সঙ্গীত একাডেমী), এ্যাবাকাস এ্যাণ্ড বৈদিক ম্যাথ (দ্রুত অংক করার পদ্ধতি) ও অন্যান্য সেবামূলক কাজ চলছে --- এইদিন সেই বিশিষ্ট সমাজসেবী স্বর্গীয় পার্থ চট্টরাজের জন্মদিন৷১৯৭৭ সালের ১৯শে জানুয়ারী এই গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন৷ এখানে উল্লেখ্য, স্বর্গীয় পার্থ চট্টরাজের ধর্মপত্নী শ্রীমতী তনুশ্রী চট্টরাজ তাঁর পতির ইচ্ছাপূরণের জন্যে এই বিশাল সম্পত্তি আনন্দমার্গকে দান করেছেন৷
দু’দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের ১ম দিন (১৮ই জানুয়ারী) সারা দিন ধরে ‘পার্থ চট্টরাজ’ স্মৃতি শিল্ড ফুটবল টুর্র্ণমেন্টের প্রতিযোগিতা (৮টিমের) হয়৷
পরদিন সকাল ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থান থেকে আগত বিশিষ্ট চিকিৎসকবৃন্দ ১৯০ জন দুঃস্থ রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ দেন৷ চিকিৎসা করেন ডাঃ মৃণাল রায়, ডাঃ শ্যামপদ দলুই, ডাঃ বিশ্বনাথ মাহাতো প্রমুখ৷
অনুষ্ঠানে শতাধিক দুঃস্থ ব্যষ্টিদের কম্বল বিতরণ করা হয়৷
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আনন্দমার্গের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আচার্য ,সুতীর্র্থনন্দ অবধূত, বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গঙ্গাজলঘাটির বি.এল.এ্যাণ্ড আর ও মাননীয় বাপ্পা হালদার, দুর্লভপুর ট্রাক ওনার এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গৌতম মিত্র, আচার্য আচার্য নির্মলশিবানন্দ অবধূত, আচার্য প্রসূনানন্দ অবধূত, অবধূতিকা আনন্দ বিশোকা আচার্যা, এ্যাডভোকেট নিশাকর পাণ্ডা, শশধর পাণ্ডা ও কানাই মুখোপাধ্যায়৷
বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আচার্য সত্যনিষ্ঠানন্দ অবধূত স্বাগত ভাষণ দেন৷ অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিরা স্বর্গীয় পার্থ চট্টরাজের অবদানের ওপর বক্তব্য ও আনন্দমার্গের সুমহান আদর্শ ও বিশাল কর্মযজ্ঞের ওপর বক্তব্য রাখেন৷ সভাপতি বিশেষ করে আনন্দমার্গের নব্যমানবতাবাদের শিক্ষার ওপর আলোকপাত করেন৷
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রা কর্তৃক ছড়া, আবৃত্তি , আনন্দবাণী, বাংলা, ইংরেজী, ছড়া, সংস্কৃত শ্লোক, প্রভাত সঙ্গীতে ও প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে নৃত্য পরিবেশিত হয়৷ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিশেষ আকর্ষণ ছিল ‘ধর্মের জয়’ নাটক৷ অনুষ্ঠানটি দর্শকদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা লাভ করে৷
২০১৮ সকালে ‘রাওয়া’ কর্ত্তৃক প্রভাত সঙ্গীত, প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে নৃত্য ও অংকন প্রতিযোগিতায় দুর্লভপুর ‘রাওয়া’ কেন্দ্র থেকে যাঁরা বিভিন্ন বিভাগে ত্রিরত্ন, নবরত্ন ও রাওয়া-রত্ন হয়েছিলেন, এই অনুষ্ঠানে তাদেরও পুরসৃকত করা হয়৷ পুরসৃকত করা হয় এই কেন্দ্র থেকে সমবেত প্রভাত সঙ্গীতে ২য় স্থানাধিকারী এম.টি.পি.এস রাওয়া গ্রুপকেও৷
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন অবধূতিকা আনন্দ অভীষা আচার্যা ও শ্রীগৌরাঙ্গ ভট্টাচার্য৷