আগামী ১৭ই ডিসেম্বর থেকে ২১শে ডিসেম্বর মেদিনীপুর শহরে কেরানীটোলা আনন্দমার্গ সুকলে শুরু হচ্ছে প্রাউট প্রশিক্ষণ শিবির৷ সর্বস্তরের প্রাউটিষ্ট কর্মীরা এই সেমিনারে উপস্থিত থাকবেন৷ পাঁচদিনের এই শিবিরে প্রাউটের আর্থিক নীতির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হবে৷ ১৯শে ডিসেম্বর একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শহর পরিক্রমা করবে ও পথ সভা অনুষ্ঠিত হবে৷
প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সালের দিল্লী সেক্টরের সচিব আচার্য সুপ্রভানন্দ অবধূত বলেন---বর্তমানে কুটিল দলীয় রাজনীতির মূল লক্ষ্যটা হ’ল কি করে শাসন ক্ষমতা কব্জা করা যায়৷ আজকের যুগে বৈশ্য শ্রেণীর কবলে পতিত এক ভয়ংকর অবক্ষয়জনিত পরিস্থিতিতে মানব সভ্যতা ক্লিষ্ট৷ সব কিছু বৈশ্য শ্রেণীর নিয়ন্ত্রণে৷ সারা পৃথিবীর প্রশাসন ও নিয়ন্ত্রণে তারাই সর্বেসর্বা, শাসককুল তাদের অঙ্গুলিহেলনে কাঠের পুতুলের মতই নিয়ন্ত্রিত৷ শাসককুল তাই ধনীশ্রেণীর কৃপালাভে ধন্য ও কৃতার্থ৷ পৃথিবীতে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলি রাজনৈতিক দলের ব’কলমে পুঁজিপতি শোষকদের নিয়ন্ত্রণে৷ আর ওই ভোগসর্বস্ব পুঁজিপতি নর দানবদের শোষণ বিদ্যমান সারা পৃথিবীতে৷
তিনি বলেন রাজধর্ম হ’ল নীতির রাজা কিন্তু বৈশ্যযুগে রাজা (শাসন) তো ধনীর পদাশ্রিত৷ তাই এ যুগে সততা, মৈত্রী, প্রেম, নৈতিকতা হ’ল নিছক কথার কথা, মিথ্যাচারিতা, ভণ্ডামী, শোসণ, লুণ্ঠন, নির্যাতন হ’ল দানবতারই নামান্তর৷
আজ সারা পৃথিবী নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে কর্পোরেট পুঁজিপতিদের নিয়ন্ত্রণে৷ সদাসর্বদা এই ভয়ঙ্কর বৈশ্যযুগে অক্ষম সরকারগুলো জনগণকে মানস অর্থনৈতিক শোষণে শেষ করে দিচ্ছে৷ আর মগজ ধোলাই করে বুদ্ধিজীবীদের বিপথগামী করে চলেছে৷ ফলে অধিকাংশ মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবী শ্রেণী অক্ষম বিক্ষুব্ধ শূদ্রে পরিণত হচ্ছে৷
তাই বলা যায় বিশ্বের প্রতিটি দেশের হতভাগ্য মানুষজন চরমভাবে নির্যাতীত ও শোষিত, যতই গণতন্ত্র আর তথাকথিত জড়বাদী কমিউনিজমের ধবজা ওড়ানো হোক না কেন৷
সেই শোষকশ্রেণীর অঙ্গুলিহেলনেই তারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে৷ আর শাসকগণ হতভাগ্যদের নানাভাবে শোষণ করে নিজেদের ও ওই শোষকদের উদরপূর্ত্তি ঘটাচ্ছে৷
আচার্য সুপ্রভানন্দ অবধূত বলেন---আজ সারা পৃথিবী চরমতম সংকটের মধ্যে অবস্থান করছে৷ অধিকাংশ মানুষ অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থান থেকে বঞ্চিত৷ তাদের মুক্তির পথের দর্শন প্রাউট (প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব)৷ মানব সভ্যতা, সংসৃকতি, কৃষ্টিকে রক্ষার জন্য নিপীড়িত শোষিত ও অতাাচারিত তরুণ-তরুণীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রাউটের পতাকাতলে সমবেত হয়ে সমাজ আন্দোলনে ব্রতী হতেই হবে৷
মানুষকে সামাজিক অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক বিষয়ে সচেতন করে তোলার দায়িত্ব প্রাউটিষ্টদের নিতে হবে বলে সুপ্রভানন্দ মনে করেন৷ তিনি বলেন আজ তথাকথিত রাজনৈতিক দলগুলি ধনকুবেরদের অর্থে পালিত তাই তারা কোনভাবেই চায় না জনগণ সচেতন হোক৷ জনগণকে অজ্ঞ করে রেখেই স্বাধীনতার ৭৬ বছর পরেও সাধারণ মানুষের আর্থিক শোষণের হাত থেকে মুক্তি তো হল না বরং শোষণ আরও বেড়েই চলেছে৷ আর্থিক শোষণের সীমা ছাড়িয়ে আজ শিল্প সাহিত্য সংসৃকতির জগতেও শোষকের কালো হাত পৌঁছে গেছে৷ তাই আজ সমাজে সার্বিক অবক্ষয় দেখা দিয়েছে৷ এবিষয়ে জনগণকে সচেতন করার দায়িত্ব দিতে প্রাউটিষ্ট কর্মীদের প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে৷