এই মানবিক মুখই বঙ্গ সংসৃকতির অঙ্গ

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

স্রোতে ভেসে যাবার মানুষ তিনি নন৷ শোককে ক্ষোভের আগুনে পরিণত হতে দেন নি৷ চার বছর আগের ঘটনা৷ ২৮শে মার্চ ২০১৮, প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলছে আসানসোল৷ সেই প্রতিহিংসার আগুনে বলি হলো দশম শ্রেণীর ছাত্র ১৬ বছরের কিশোর সিবগতউল্লা রশিদ৷ বাবা ইমদাদউল্লা রশিদ স্থানীয় মসজিদের ইমাম৷ পুত্র শোকে ঘরে পাথর হয়ে বসে থাকেন নি৷ আবার পুত্র হারানোর শোককে ক্ষোভের আগুনে পরিণত করে আসানশোলকে আর একটা গুজরাট হতে দেননি৷ আসানসোলের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে আবেদন করেছিলেন শান্ত হবার, কাতর কন্ঠে বলেছিলেন---আর কারো সন্তান যেন প্রতিশোধের বলি না হয়৷ সন্তান হারা পিতার আবেদনে সেদিন শান্ত হয়েছিল আসানসোল৷ ছেলের অপহরণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত পিন্টু যাদবও বিনয় তেওয়ারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ কিন্তু ছেলের খুনিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলেন না ইমাম ইমদাদউল্লা রশিদ৷ কারণ কে বা কারা তাঁর  ছেলেকে অপহরণ করে খুন করে তা তিনি চোখে দেখেন নি৷ তাই সত্যে অবিচল থেকে সাক্ষী দিতে যাননি কোর্টে৷ সত্যে অবিচল ইমদাদউল্লা বলেন---আল্লাহ প্রকৃত বিচার করবে৷ পুলিশের দায়িত্ব আসল খুনিদের ধরা৷ আমি নিজের চোখে কাউকে অপহরণ বা খুন করতে দেখিনি৷ তাই আদালতে গিয়ে মিথ্যে সাক্ষ দিতে পারবো না৷ চিরকাল আমি সত্যের জন্যে লড়াই করেছি৷ একজন ইমাম হিসেবে আমি সত্যকে নিয়েই বাঁচতে চাই৷

এটাই বঙ্গ সংসৃকতির অঙ্গ, চারিদিকে নিষ্ঠুর নির্মম দানবিকতার মাঝেও যে সংসৃকতিকে আঁকড়ে ধরে আছেন ইমদাদউল্লার মত কিছু মানবিক মুখ৷

এই মানবিক মুখগুলির জন্যে আজও শত প্ররোচনা ও উস্কানী সত্ত্বেও বাঙলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অটুট যদিও পশ্চিমী হাওয়ায় সাম্প্রদায়িকতার বিষ বাতাসে মিশে আছে৷