একটানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত ব্রাজিল

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

টানা কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণে ভেঙে গেল আট দশকের রেকর্ড৷ বন্যায় হাবুডুবু ব্রাজিলের দক্ষিণতম রাজ্য রিয়ো গ্রান্দে দো সুল৷ পরিস্থিতি এমনই যে, ১৯৪১ সালের ভয়ঙ্কর বন্যাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে এ বারের বিপর্যয়৷ রিয়ো গ্রান্দে দো সুল ছাড়াও দক্ষিণাংশের কয়েকটি শহরে জলস্তর ১৫০ বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে৷ প্রবল বৃষ্টিপাতের জেরে মৃত্যু হয়েছে ৫৭ জনের৷ স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে শুক্রবার জানানো হয়, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে৷

ব্রাজিলের দক্ষিণতম এই শহরটির ভৌগলিক অবস্থানের কারণেই সেখানে মাঝেমধ্যেই চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া দেখা যায়৷ কখনও প্রবল বৃষ্টি, আবার কখনও প্রবল খরার কবলে পড়ে এই অংশ৷ বিজ্ঞানীদের মতে, এ সবের পাশাপাশি বিশ্ব উষ্ণায়নেরও প্রবল প্রভাব পড়তে শুরু করেছে সেখানে৷ তাই আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে শহরের বেশ কয়েকটি এলাকার রাস্তাঘাট জলের নীচে তলিয়ে গিয়েছে৷ ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক সড়ক ও সেতু৷ পাশাপাশি ভূমিধসও নেমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু এলাকা৷ টাকুয়ারি নদী উপত্যকার সংলগ্ণ শহর লাজেডো এবং এস্ট্রেলা, সম্পূর্ণ ভাবে জলের তলায় চলে গিয়েছে৷ রাজ্য জুড়ে বিদ্যুৎ, জল, ইন্টারনেট, টেলিফোন পরিষেবা সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে৷

রিয়ো গ্রান্দে দো সুল-এর নাগরিক প্রতিরক্ষা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, শহরের ৬৮ জন বাসিন্দা এখনও নিখোঁজ এবং কমপক্ষে ২৪ হাজার মানুষ ঘর ছাড়া হয়েছেন৷ উরুগুয়ে এবং আর্জেন্টিনার সীমান্তবর্তী রাজ্যের ৪৯৭টি শহরে অর্ধেকেরও বেশি অংশ ঝড়ের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ লাগাতার বৃষ্টির জেরে বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে সান্তা মারিয়া নদীর জল৷ ভেসে গিয়েছে নদীর ওপরে থাকা সেতুটিও৷ রাজধানী পোর্র্তে অ্যালেগ্রির ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া গুয়াইবা নদীর তীরেও ভাঙন দেখা দিয়েছে৷

মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে রাজ্যের গভর্নর এদোয়ার্র্দে লেইতে বলেছেন, ‘‘কিছু দিনের মধ্যে আমরা অন্যান্য এলাকায় পৌঁছতে সক্ষম হব৷ তখন মৃতের সংখ্যা বাড়তেও পারে৷’’ প্রবল বৃষ্টি এবং জলস্তর বাড়ায় একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি বাঁধ আংশিক ভাবে ধসে পড়ে৷ অন্য একটি জলাধারের অবস্থাও খারাপ হওয়ায় বিপদের আশঙ্কায় জলাধারের কাছাকাছি বসবাসকারী লোকেদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন৷