গৌড়দেশ ঃ পাঠান যুগের কিছু পূর্বে (আনুমানিক ১২০০ বছর পূর্বে) ও পাঠান যুগের একেবারে গোড়ার দিকে (আনুমানিক আজ থেকে ৬০০ বছর আগে) ৰাঙলায় (সেকালে গৌড়দেশ নামটাই বেশী প্রচলিত ছিল) তখন অনেক ৰড় ৰড় সংস্কৃত পণ্ডিত জন্মেছিলেন৷ খ্যাতি তাদের দেশের সীমানা ছাড়িয়ে পৃথিবীর কোণে কোণে ছড়িয়ে পড়েছিল৷ তারা গৌড়ীয় রীতিতেই ‘ঐ’ অক্ষরটির ‘ওই’ উচ্চারণ করতেন৷ তাঁরা আরও কয়েকটি অক্ষরেরও গৌড়ীয় রীতিতেই উচ্চারণ করতেন যা বেদসম্মত নয়৷ তাঁদের পাণ্ডিত্যের স্বীকৃতি স্বরূপ ৰাঙলার বাইরেকার লোকেরা তাঁদের উচ্চারণ রীতিকে ‘গৌড়ীয় রীতি’ বলে মেনে নিয়েছিলেন, যার ফলে দেশে সংস্কৃতের স্বীকৃত উচ্চারণ-রীতি চারটে দাঁড়িয়েছিল---(১) গৌড়ীয়, (২) কাশিকা (উত্তর ভারতে), (৩) মহারাষ্ট্রীয় (দক্ষিণ-পশ্চিম ভারতে) ও (৪) দ্রাবিড়ী (দক্ষিণ ভারতে)৷ এই গৌড়ীয় রীতি উচ্চারণের দোহাই দিয়ে যদি কেউ কেউ ৰলে সংস্কৃত ভাষাতেও ‘ওই’ উচ্চারণ করৰ, তিনি অবশ্যই তা উচ্চারণ করতে পারেন, তবে তা ধবনিবিজ্ঞান-সম্মত হবে না৷
‘‘সোমবারে আনৰে ছানা দোকান হতে কিনি৷
মঙ্গলেতে পেস্তা ৰাদাম আনৰে কাশীর চীনী৷৷
বুধবারে চড়িয়ে কড়া আগুন দেৰে জ্বেলে৷
বৃহস্পতিতে ছানা চীনী মিশিয়ে দেৰে ঢেলে৷৷
শুক্রবারে খুন্তি নাড়ার টুংটাং সুর৷
শনিবারে চউদিকেতে সুগন্ধে ভরপুর৷৷
রবিবারে নাইকো পড়া, ৰই রাখো তুলে৷
উৎসাহেতে লেগে যাও হাঁড়ির ঢাকা খুলে৷৷’’
‘‘গুড়ের দেশ’’ এই অর্থে দেশটির নামকরণ হয়েছিল গৌড়দেশ৷
(শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকারের লঘুনিরক্ত থেকে গৃহীত)