গোড্ডায় আনন্দমার্গের ধর্ম মহাসম্মেলন

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

গত ১০ ও ১১ই মার্চ ঝাড়খন্ডের গোড্ডা শহরের স্থানীয় টাউনহলে  আনন্দমার্গের ধর্মমহাসম্মেলনে আনন্দমার্গের  পুরোধা প্রমুখ  আচার্য কিংশুকরঞ্জন সরকার  আধ্যাত্মিক প্রবচন দান করে,সমবেত ভক্তমন্ডলীকে আধ্যাত্মিক  সাধনায় উদ্বুদ্ধ করেন৷ তিনি বলেন, যে কাজের দ্বারা মানুষের প্রগতি সূচিত হয় তাই প্রকৃত  ‘কর্ম-পদবাচ্য’৷ মানবজীবনের অবশ্যকরণীয় নিত্যকর্ম হ’ল আহার, স্নান, বিশ্রাম আর আধ্যাত্মিক সাধনা৷ আহার, স্নান, বিশ্রাম মানুষের  অস্তিত্ব রক্ষার  জন্যে অবশ্য করণীয়৷ কেননা, মানুষের  অস্তিত্ব রক্ষা না হলে  তার প্রগতির  প্রশ্ণ  ওঠে না৷ তাই  এগুলো নিত্যকর্মের  মধ্যে পড়ে৷ আর, মানবজীবনের  প্রকৃত প্রগতি হয় আধ্যাত্মিক সাধনার মাধ্যমে৷  অনেকে  আধ্যাত্মিক সাধনার  ওপর গুরুত্ব দেয় না৷ কিন্তু  আধ্যাত্মিক  সাধনা না করলে মনের অধোগতি হবে৷ দেহটা  মানুষের কিন্তু মনটা  অন্য জীবের  হয়ে যাবে৷  মৃত্যুর  পর মানুষটির  ওই যোনিপ্রাপ্ত হবে৷ জীববিবর্তনের  ক্ষেত্রে এটা অধোগতি ৷ একে বলে ঋণাত্মক প্রতিসঞ্চর৷ মানুষের জীবনের লক্ষ্য  পরমপুরুষ৷ আধ্যাত্মিক সাধনার দ্বারা মনকে  অন্তর্মুখী করে পরমপুরুষের দিকে  চালিয়ে  দেওয়া যায়৷ এইভাবে  পরমপুরুষের সঙ্গে মিলে মিশে  একাকার  হয়ে যাওয়া যায়৷ এই কারণে  আধ্যাত্মিক সাধনা প্রতিটি মানুষের  নিত্যকর্মের মধ্যে  পড়ে৷

ঝাড়খন্ড সহ পঃবঙ্গ ও বিহারের বিভিন্ন এলাকা  থেকে  আনন্দমার্গীরা এই ধর্মমহাসম্মেলনে যোগদান  করেছিলেন৷ ১১ তারিখে আনন্দমার্গীদের  এক বর্র্ণঢ্য শোভাযাত্রা শহরের বিভিন্ন রাস্তা পরিক্রমা করে৷ ধর্মমহাসম্মেলন উপলক্ষ্যে  ২৪ ঘন্টা ব্যাপী অখন্ড কীর্ত্তনেরও আয়োজন করা হয়৷ অখন্ড  কীর্ত্তনের  পর বক্তব্য রাখেন  আচার্র্য  বিকাশানন্দ অবধূত৷  তিনি বলেন, সাধনা মানবজীবনের  অবশ্যকরণীয়৷ কীর্ত্তন   সাধনার  সহায়ক ৷ কীর্ত্তন মনের চঞ্চলতা, অস্থিরতা দূর করে , মনকে  অর্ন্তমুখী করে ও মনে পরমপুরুষের প্রতি ঐকান্তিক  ভক্তি  জাগিয়ে দেয়৷ ভক্তি মানবজীবনের সর্র্বপেক্ষা মূল্যবান সম্পদ ৷ ভক্তির  দ্বারা  ভক্ত  ভগবানকে  তার অন্তরে বাঁধতে পারে৷

ধর্মমহাসম্মেলনের মঞ্চে আনন্দমার্গের  সাংসৃকতিক  প্রকোষ্ঠ ‘রাওয়া’-র শিল্পীরা প্রভাত সঙ্গীত  ও প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে  নৃত্য ও নৃত্যনাট্য পরিবশেন করে দর্শকদের আনন্দ দেন, সঙ্গে সঙ্গে সবাইকে আধ্যাত্মিক  আদর্শে উদ্বুদ্ধ করেন৷ 

আচার্য চিরাগতানন্দ অবধূত, অবধূতিকা আনন্দ কীর্ত্তিলেখা আচার্যা, অখিলেশজী প্রমুখ  ‘রাওয়া’ শিল্পীগণ  প্রভাত সঙ্গীত পরিবেশন  করেন৷ এই সাংস্কৃতিক  অনুষ্ঠানের  প্রধান আকর্ষণ ছিল  শান্তিনিকেতনের  ‘সবুজকলি’ নৃত্যগোষ্ঠীর দ্বারা পরিবেশিত প্রভাত সঙ্গীত অবলম্বনে  রচিত নৃত্যনাট্য ‘মুশাফির’৷ এই নৃত্যনাট্যটির  গ্রন্থনায় ছিলেন আচার্য হরাত্মানন্দ অবধূত ও নির্দেশনায় শ্রীমতী মিঠু বাগ্দী৷