গ্রামে যাত্রাগান চলছে৷ গীতাভিনয় (সেকালে ভাল ক্ষাঙলায় যাত্রাকে ‘গীতাভিনয়’ বলা হত৷) হচ্ছে জমিদার বাড়ীর সামনেকার প্রকাণ্ড মাঠে৷ যার যা পার্ট সে পার্ট তো সে করছেই উপরন্তু সবাইকার চেষ্টা কোনোক্রমে জমিদারবাবুকে কিছুটা সন্তুষ্ট করে দিয়ে কিছু বখ্শিস আদায় করা৷ এই ধরনের ব্যাপার সেকালকার ক্ষাঙলায় খুব চলত৷ যার এলেম (মূল শব্দটি ‘ইল্ম্’ যার থেকে ‘আলিম্’ শব্দটি এসেছে৷) তেমন নেই সেও জমিদারের খোশামোদ করে দিয়ে বখশিসের ব্যবস্থা করে নিত৷ সেই যে গল্পে আছে না–
জাড়া গ্রামের ভোলা ময়রার সঙ্গে জনৈক জগুঠাকুরের কবির লড়াই হচ্ছে জাড়া গ্রামের জমিদার মধুসূদন বাঁড়ুজ্জের বাড়ীতে৷ জগুঠাকুর দেখলে, ভোলা ময়রার সঙ্গে সে এঁটে উঠবে না৷ তাই সে ঠিক করলে জমিদারবাবুকে খোশামোদ করেই দু’পয়সার ব্যবস্থা করে নেবে৷ পালার বাইরে গিয়েই ধুন ধরলে–
‘‘এ এক বৃন্দাবন রে ভাই
এ এক বৃন্দাবন৷
হেথায় বাঁশী বাজান
লীলা করেন শ্রীমধুসূদন৷৷’’
ভোলা ময়রার নাকি তা সহ্য হয়নি৷ সে সঙ্গে সঙ্গে উত্তরে বলেছিল–
‘‘কেমন করে’ বললি জগা
জাড়া গোলোক বৃন্দাবন৷
হেথা তুলসীমঞ্চ কোথায় পেলি
সবই দেখি বাঁশের বন৷
বংশীধ্বনি শুনলি কোথায়
ওরে মশায় করে ভনভন৷
কবি গা’বি পয়সা পাবি
অত খোশামোদের কী কারণ’’৷৷