হেরিটেজ মর্যাদায় ফিরে আসছে টয়ট্রেন

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ পাহাড়ী পথে ফের ষ্টীম ইঞ্জিন দিয়ে টয় ট্রেন চালু করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন৷ ষ্টীম ইঞ্জিনই টয় ট্রেনের আসল আকর্ষণ৷ ইউনেস্কো টয় ট্রেনকে হেরিটেজ মর্যাদা দেওয়ার কয়েক বছরের মধ্যে রেল কর্তৃপক্ষ টয় ট্রেনের গতি বাড়াতে ডিজেল ইঞ্জিন চালু করেছিল৷ দার্জিলিং থেকে বাতাসিয়া লুপ পর্যন্ত ‘জয় রাইডে’ কেবলমাত্র ষ্টীম ইঞ্জিন চালু ছিল৷ কার্শয়াং থেকে দার্জিলিং, শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং চলত ডিজেল ইঞ্জিন৷

কিন্তু বিদেশ থেকে আগত পর্যটকরা ও ইউনেস্কো যথেষ্ট ভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করে৷ তাদের কথা হ’ল ষ্টীম ইঞ্জিনই টয় ট্রেনের হেরিটেজ ভ্যালু৷

সম্প্রতি ইউনেস্কো কমপ্রিহেনসিভ কনজারভেশন ম্যানেজমেণ্ট প্রোগ্রামে টয় ট্রেনের হেরিটেজ ভ্যালু ফিরিয়ে আনতে ভারতীয় রেলকে একগুচ্ছ প্রস্তাব দিয়েছেন৷ তাই খুব শীঘ্রই রেল কর্তৃপক্ষ ফের পাহাড়ে ষ্টীম ইঞ্জিন চালু করতে চলেছেন৷

ষ্টীম ইঞ্জিনের বিপক্ষে সবচেয়ে বড় যুক্তি ছিল যে এর ব্রেক খুব শক্তিশালী নয়৷ কিন্তু ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ টয় ট্রেনের ব্রেক আরো উন্নতমানের ও শক্তিশালী করার জন্যে ইঞ্জিনিয়ারদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন৷ ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ আরো বলেছেন যে স্বাধীনতা পূর্বোত্তর সময়ের মত টয় ট্রেনের চালক ও কর্মীদের পোষাক করা হবে সেই সাদা রঙের৷ উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে টয় ট্রেনের ফার্স্ট ক্লাস কোচ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করার পরিকল্পনার নির্দেশ দিয়েছেন৷ তার ভাড়া হবে ১২৭৫ টাকা৷ পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে এ.সি. কোচও চালু করার কথা ভাবা হচ্ছে৷ তার ভাড়া আরো বেশী হবে৷ তবে সাধারণ আয়ের মানুষের কথা মাথায় রেখে কর্তৃপক্ষ সেকেণ্ড ক্লাস কোচেরও পরিকল্পনা করেছেন৷ সেকেণ্ড ক্লাস কোচ চালু হলে কম ভাড়াতেও যাত্রীরা যাতায়াত করতে পারবেন৷

দার্জিলিং হিমালয়ান রেল কর্তৃপক্ষ তিনধারিয়া শতাব্দী প্রাচীন ওয়ার্কশপ্টিকে আধুনিক করার পরিকল্পনা নিয়েছেন৷ সেখানকার কর্মীদের বিদেশে পাঠিয়ে প্রশিক্ষণের পরিকল্পনাও কর্তৃপক্ষে রয়েছে৷

পাহাড়ে অশান্তির সময়ে পুড়ে যাওয়া সোনাদা ও গয়াবাড়ী রেলষ্টেশনকে সাজিয়ে তোলা হবে৷ এককথায় টয় ট্রেনের হেরিটেজ মর্যাদাকে সঠিক ভাবে তুলে ধরার জন্যে সব কিছুই করা হবে বলে রেল কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা৷ এই জন্যে তাঁরা যা কিছু প্রয়োজন সবই করবেন৷ দার্জিলিং হিমালয়ান রেল কর্তৃপক্ষের ১৪টি ষ্টীম ইঞ্জিন রয়েছে৷ স্বাধীনতা পূর্বোত্তর সময়ের হলেও তিন ধারিয়ার রেলওয়ে ওয়ার্কশপে কর্মীদের দক্ষতায় সেগুলো এখনও সচল৷

তাই টয় ট্রেনকে হেরিটেজ মর্যাদা পেতে খুব বেশী বেগ পেতে হবে না৷