গত সপ্তাহের (ওই মহামানব আসে) লেখাটি পড়ে কারো কারো মনে এমন প্রশ্ণ জেগেছে, মানুষ যদি বিজ্ঞানীর ল্যাবেই অতি মানব বানিয়ে নিতে পারেন, তবে ব্যষ্টিগত বা সামুহিক জীবনে আধ্যাত্মিক অনুশীলনের তো প্রয়োজনই নেই৷ গতবারের লেখা কে সংক্ষিপ্ত করতে গিয়ে এটি আমার অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি৷ দুঃখিত ৷ আজ সমগ্র পৃথিবীটা অনিশ্চয়তা ভয় ও দুঃখের সাগরে ভাসছে৷ বিজ্ঞানের বেশ খানিক অগ্রগতির পরও দারিদ্র্য শোষণ অসুখ সন্দেহ লেগেই আছে৷ কারণ? মানুষ যুক্তি-বুদ্ধির অখন্ডচেতনার বোধের মিলন ঘটাতে পারেননি৷ তাতে কি হল? যতক্ষণ ওই মিলন না ঘটছে ততক্ষণ মানুষের সমাজে ভয় সন্দেহ অবিশ্বাস অসুখ ধর্ম রাজনীতি ও ক্ষমতার লোড নিয়ে মারামারি কাড়াকাড়ি যুদ্ধ হত্যা আত্মহত্যা বিশ্বজুড়ে লেগে থাকবে৷ লেগে আছে৷ কারণ দৈনন্দিন জীবনে জাগতিক বিজ্ঞানচর্চার পাশাপাশি ব্যষ্টিগতভাবে আন্তরিক আধ্যাত্মিক অনুশীলনের শিক্ষার পরিকাঠামো নেই৷ মানুষকে চলতে হতো হচ্ছেই ৷ কিন্তু সে চলায় অন্তরে বাহিরে ভারসাম্য নেই৷ তাই বিদ্যার এত শাখা প্রশাখার বিশেষজ্ঞ ও গবেষণা থাকা সত্ত্বেও শান্তি নেই৷ তাই দারিদ্র্য দূর হচ্ছে না৷ জোর যার মুলুক তার অবস্থা চলছে৷ চলবেই৷ এমতবস্থায় কোন প্রতিভাবান বিজ্ঞানীর জীবনচর্যায় যদি বিস্তারিত অখন্ড চেতনার আলো না থাকে, যদি তিনি সঠিক আহার ও যমনিয়মের জীবনে না থাকেন, হয়তো বুদ্ধি বলে ল্যাবে বসে তিনি হয়তো আরো গতি ও নিপুণতা দিয়ে নোতুন মানুষ বানাবেন৷ কিন্তু তাতে মানবিক বিশ্ব পরিবার হবে না৷ হয়তো অঢেল সম্পদে ক্লান্ত হয়ে যাবো, পথ পাবো না ৷ তাহলে কি অন্তর্জগতের ব্যাপ্তির সাধনাাকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে ভৌতবিজ্ঞানকে এড়িয়ে যাব? stem cell’ নিয়ে গবেষণায় ভয় পাবো? কারন সাধু বিজ্ঞানী চুপ থাকলেও অসাধু বিজ্ঞানী বসে থাকবে৷ এটা গতির যুগ৷ না stem cell’-এর যে গবেষণা শুরু হয়েছে তার নেতৃত্বে থাকবেন সাধক বিজ্ঞানী৷ যমনিয়মের সাথে সাথে তাঁর যোগসাধনার বিশেষ লেসেনগুলিতেও সিদ্ধি থাকতে হবে৷
তাতে কি হবে? ওই বিজ্ঞানীর দেহকোষ , নিওরন্স, দেহমানসিক সামর্থ্যে একটা নবজাগরণ আসবে, তার মধ্যেই তিনি অখন্ড মহাবিশ্বরূপ দেখার দূরদৃষ্টি পাবেন৷ তখন তাঁর কান কন্ঠ জিহ্বা হৃদয় থেকে থেকে মস্তিষ্ক সদর্থক মাইক্রোবাইটা শক্তি ও চেতনার মাধ্যম হিসাবে কাজ করবে৷ কেবলমাত্র তেমন সাধক বিজ্ঞানীর হৃদয়ে থাকা বিশ্ব প্রেমের নিষ্কাম তরঙ্গ থেকে ল্যাবের ঘরে যে নবজাতকের আবির্ভাব হবে, তারা আজকের আন্তর্জাতিক চেতনাকে এক মহাবিশ্ব চেতনায় রূপান্তরণে দ্রুতি আনবে৷ এখন আবার প্রশ্ণ ওই সব সাধক বিজ্ঞানী কি আকাশ থেকে নামবেন? না শ্রমিক কর্ষক সাধারণ ঘরের শিশুটিকে পাঁচ বছর বয়স থেকেই মনসংযোগ ও ধ্যান কে খেলাচ্ছলে শেখাতে হবে৷ আর সেটা তখনই সম্ভব যখন শিশুটিকে দেখবে সমস্ত বড়রাই দুবেলা ধ্যানে বসে৷ এরই না জাগৃতি৷
- Log in to post comments