জাতীয় শিক্ষানীতির নামে পিছনের দরজা দিয়ে হিন্দী চাপনোর কৌশল নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার তাছাড়া শিক্ষাক্ষেত্রে বিদেশী অনুপ্রবেশও শিক্ষাকে ব্যয়বহুল করবে উচ্চশিক্ষা মধ্যবিত্তের আওতার বাইরে চলে যাবে এমনটাই মনে করছে অভিজ্ঞ শিক্ষাবিদরা বুদ্ধিজীবি, শিক্ষামহল, বিরোধী দল প্রতিবাদ সর্বস্তরে শুরু হয়েছে বৈষম্যমূলক শিক্ষানীতি ও পিছনের দরজা দিয়ে হিন্দি চাপানোর বিরুদ্ধে।
আমরা বাঙালী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জয়ন্ত দাশ বলেন---এই শিক্ষানীতি মোদী সরকারের নয়,মোদী সরকারের পৃষ্ঠপোষক দেশীয় পুঁজিপতি শোষকদের তিনি বলেন ত্রি-ভাষা সুত্রের নামে অষ্টম শ্রেণীর পর থেকে হিন্দি শিখতে বাধ্য করা হবে শিক্ষার সর্বচ্চস্তর পর্যন্ত মাতৃভাষাই শিক্ষার মাধ্যম হতে হবে ব্যাকরণগতভাবে হিন্দী একটি পূর্ণাঙ্গ ভাষাই নয় তাছাড়া হিন্দী অসংসৃকতির বাহক হিন্দি মাধ্যমে অশ্লীল চলচ্চিত্র, চটুল রসের গান বাজারে ছড়িয়ে যুব সমাজের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হচ্ছে বাঙলার বুকে এই শিক্ষানীতি চাপান হলে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু হবে।
বাঙালী ছাত্র যুব সমাজের সচিব তপোময় বিশ্বাস বলেন হিন্দী সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের কৌশল এই শিক্ষানীতি দেশের বৃহত্তম জনগোষ্ঠীকে অসচেতন অজ্ঞ করে রেখে শোষণ চালিয়ে যাবার অপ্রপ্রয়াস বাঙলার বুকে এই শিক্ষানীতি কিছুতেই চাপানো যাবে না হিন্দি ভারতবর্ষের অতিক্ষুদ্র একটি জনগোষ্ঠীর ভাষা একে জোর পূর্বক জাতীয় স্তরে চাপানোর পরিণতি খারাপ হবে।
প্রাউটিষ্ট ইউনিবার্র্সলের কেন্দ্রীয় সংঘটন সচিব আচার্য প্রসুনানন্দ অবধূত বলেন--- প্রত্যেক জাতির, প্রত্যেক জনগোষ্ঠীর একটা নিজস্ব প্রাণধর্ম আছে একটা জাতির মানস-প্রবণতা, বাহ্যিক আচরন, জীবন ও সমাজের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বিভিন্ন জাতির পৃথক পৃথক বৈশিষ্ট্য দান করে ভারতবর্ষ এই রকম বহু জাতি জনগোষ্ঠীর একটি দেশ এখানে শিক্ষা ব্যবস্থা এমন হওয়া উচিত যাতে কোনো জনগোষ্ঠীরই প্রাণ ধর্মে আঘাত না লাগে তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
তিনি বলেন বহু ভাষা কৃষ্টি সংসৃকতির দেশ হলেও ভারতবাসী অন্তর্মুখী জীবনে অভ্যস্ত , প্রাচীন কাল থেকেই ভারতীয়রা বাল্যকাল থেকেই অর্ন্তমুখী জীবনের অনুশীলন করতো ভারতবর্ষের শিক্ষা ব্যবস্থাও অন্তর্মুখী জীবনের ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল তাই ছাত্ররাও ছিল শ্রদ্ধাশীল, বিনয়ী উন্নত আচরণ পরায়ণ আজ ছাত্র-ছাত্রাদের আচরণে যে উচ্ছৃঙ্খলতা, অশালীনতা তার কারণ আজকের শিক্ষাব্যবস্থা এই প্রাণধর্ম থেকে সরে এসেছে ছাত্র-ছাত্রাদের প্রাণধর্মের অনুশীলন অর্থাৎ আধ্যাত্মিক জীবনচর্র্চ আবশ্যিক হওয়া উচিত অর্থাৎ আজকের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সঙ্গে প্রাচীন ভারতের প্রজ্ঞা ও আধ্যাত্মিকতার সমন্বয়ে একটি আদর্শশিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে প্রাউটের শিক্ষানীতি এই প্রাণ ধর্মের ওপর প্রতিষ্ঠিত যেখানে শৈশব থেকেই ছাত্র-ছাত্রাদের পঁুথিগত বিদ্যার পাশাপাশি আধ্যাত্মিক অনুশীলন ও নৈতিকতার শিক্ষাও দেওয়া হয় তাই শিক্ষা ব্যবস্থা কখনোই ছাত্র-ছাত্রাদের পলিটিকাল ডল বানাবার মডেল হতে পারে না আদর্শ শিক্ষা ব্যবস্থা ছাত্র-ছাত্রাদের উপযুক্ত মানুষ করে গড়ে তুলবে ছাত্র-ছাত্রাদের মানসিকতা কখনোই জাত-পাত সাম্প্রদায়িকতা ও দলীয় গণ্ডীর মধ্যে আবদ্ধ থাকবে না ভারতের মতো বহুভাষা কৃষ্টি সংসৃকতির দেশে শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি দেশের অখণ্ডতাকে বিপন্ন করতে পারে।