আমরা বাঙালী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শ্রী জয়ন্ত দাশ কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতির তীব্র বিরোধিতা করে বলেন--- এই শিক্ষানীতি ভারতীয় প্রাণধর্মের বিনাশ ঘটাবে। দেশের সংহতিকে বিপন্ন করবে শ্রী জয়ন্ত দাশ জানান ভারতবর্ষ কোন একটি বিশেষ ভাষার মানুষের দেশ নয়, ভারতবর্ষ ৪৪টি ভাষা-কৃষ্টি-সংস্কৃতি সম্পন্ন ৪৪টি জনগোষ্ঠীর দেশ। তাই দেশের ভাষা নীতি, শিক্ষানীতি অর্থনীতির সব পরিকল্পনাই নিতে হবে ৪৪ জনগোষ্ঠীর সার্বিক বিকাশের কথা মাথায় রে… একদেশ, একভাষা, এক শিক্ষানীতির ধূয়োতুলে কোন একটি ভাষাকে ৪৪টি জনগোষ্ঠীর মাথায় চাপিয়ে দিতে চাইলে ফল মারাত্মক হতে বাধ্য। কেন্দ্রীয় সরকারের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। ভাষার কারণেই জন্ম নিয়েছে স্বাধীন বাঙলাদেশ সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের কারণও ত… বিভিন্ন ভাষা-ভাষির দেশ সোভিয়েতকে জোরপূর্বক রুশ ভাষা শিখতে বাধ্য করা হয়েছিল। পরিণতি আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি পৃথিবীর মানচিত্র থেকে মুছে গেছে সোভিয়েত ইউনিয়ন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার না দেখে, না শেখে, না ঠেকে শেখে, জোরপূর্বক হিন্দী চাপানোর দুুর্বুদ্ধি তাদের পেয়ে বসেছে।
শ্রী দাস বলেন --- ভারতীয় প্রাণধর্মের ওপর প্রতিষ্ঠিত আনন্দমার্গের শিক্ষাব্যবস্থাই আদর্শ শিক্ষা নীতি। বহুভাষা-কৃষ্টি সংস্কৃতির দেশে ভারতবাসীর জীবন অন্তর্মুখী। এই অন্তর্মুখী জীবনের অনুশীলনেই প্রাচীনকাল থেকে ভারতবাসী সৎ ও নিয়মনিষ্ঠ জীবনে অভ্যস্থ ছিল। বৈচিত্রময় ভারতীয় জীবনধারায় ঐক্য ও সংহতির সূত্র এই অন্তর্মুখী জী… এই অন্তর্মুখী জীবনধারাই ভারতের প্রাণধর্ম আর এই প্রাণ ধর্মই বহুভাষা-কৃষি-সংস্কৃতির দেশ ভারতকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছে ।
ভারতের বর্তমান দুরবস্থার কারণও এই প্রাণধর্ম থেকে ভারতবর্ষ সরে এসেছে। চতুর ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ প্রথম ভারতীয় প্রাণধর্মের ওপর আঘাত হা… তার আগেও অনেক বিদেশী শাসক ভারত শাসন করেছে। কিন্তু তারা কেউ ভারতের প্রাণধর্মের ওপর আঘাত হানতে পারেনি। স্বাধীন ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের উত্তরসূরী দিল্লির সরকার ব্রিটিশের পথ ধরেই। তাই ভারতীয় সমাজ জীবন থেকে তার প্রাণধর্ম সরে গেছে। ভারতবাসীও তার প্রাণধর্ম ভুলে গেছ। তাই সহজেই আজ রাজ্যে রাজ্যে বিচ্ছিন্নতার আওয়াজ ওঠে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে এই প্রাণধর্মের পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতেই হ। তবেই ভারতের সংহতি বজায় থাকবে।
শুধু শিক্ষাক্ষেত্রে নয়, সমাজজীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই প্রাণধর্মের প্রতিষ্ঠা চাই। আমরা বাঙালীর সামাজিক, অর্থনৈতিক আন্দোলনও এই প্রাণধর্মের ওপর প্রতিষ্ঠিত। তাই আমরা বাঙালীর আন্দোলন কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদ নয়, বরং ভারতের সংহতিকে আরও সুদৃঢ় করবে, আরও মজবুত কর।