কাঠগোড়ায় কেন্দ্রীয় বাহিনীও -  গণতন্ত্রের বেদীতে হিংসার উৎসব

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

রাজ্যে তৃতীয় দফার নির্বাচনেও হিংসা অব্যাহত৷ এত ঘটা করে যে কেন্দ্রীয় বাহিনী আনা হয়েছে, রাজ্যে আট দফায় ম্যারাথন নির্বাচনের ব্যবস্থা করা সবই তো ভস্মে ঘি ঢালা হয়েছে৷ রাজ্যে তৃতীয় দফায় ৩১টি আসনে নির্বাচন হয়৷ বোট দানে বাধা, বুথ দখল, প্রার্থীরাও আক্রান্ত, নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতিত্ব,কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোথাও নিষ্ক্রিয়, কোথাও অতি সক্রিয় এমনি হাজারও অভিযোগ জমা পড়েছে কমিশনের কাছে৷

তৃতীয় দফার নির্বাচনে নজিরবিহীনভাবে সাতজন প্রার্থী আক্রান্ত হয়েছেন৷ এরমধ্যে তিনজন মহিলা প্রার্থী আছেন৷ পুলিশ সূত্রে জানা গেছে প্রার্থীদের ওপর হামলায় ১১জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনী প্রচারে উত্তরবঙ্গে গিয়ে এক সভায় বলেন---হারের ভয়ে বিজেপি গুণ্ডামী করছে৷ এই কাজে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করা হচ্ছে৷ মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ণ এত বিশাল কেন্দ্রীয় বাহিনী এনেও কেন খুন হচ্ছে?

আমরা বাঙালী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জয়ন্ত দাশ বলেন--- বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র প্রহসনে পরিণত হয়েছে৷ করোনা পরিস্থিতিতে এত দীর্ঘ দিনের নির্বাচন, এত বিশাল কেন্দ্রীয় বাহিনী রাজ্যে কি জন্যে আনা হয়েছে৷ সেই তো হিংসা জুলুমবাজি চলছেই৷ শ্রী দাশ বলেন আসলে নানা অপকর্মে জড়িত নেতাদের, গণতন্ত্রে আস্থা নেই, জনগণকেও বিশ্বাস করতে পারছে না৷ তাই হিংসা ও বাহুবলের দ্বারা ক্ষমতা দখল করতে চায় দুর্নীতিতে আকন্ঠ জড়িত নেতারা৷ শ্রী দাশ বলেন কোন বাহিনী দিয়ে এই উচ্ছৃঙ্খলতাকে সামলানো সম্ভব নয়৷ সামাজিক-অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর আমূল পরিবর্তন আনতে হবে৷

জনগণকেও সামাজিক অর্থনৈতিক রাজনৈতিক বিষয়ে অনেক বেশী সচেতন হতে হবে৷ বর্তমান পুঁজিবাদী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলি পুঁজিপতিদের  হাতের পুতুল৷ নির্বাচনের নামে রাজ্যে যে অসংসৃকতির  স্রোত  বহিয়ে  দেওয়া হয়েছে-এর পিছনে গাছে ধনকুবেরদের চতুর চাল৷ মুখ্য উদ্দেশ্য যুব সমাজের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া, নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে দিয়ে বাঙালীর প্রতিবাদী চরিত্রকে ধবংস করে দেওয়া হচ্ছে৷

শ্রী দাশ বলেন আমরা বাঙালীর নির্বাচনে অংশগ্রহণের মুখ্য উদ্দেশ্য নির্বাচনে জয়লাভ নয়৷ মানুষকে বর্তমান আর্থসামাজিক পরিবেশে মানুষকে সচেতন করা৷ বর্তমান অর্থনৈতিক কাঠাময় যে দলই ক্ষমতায় আসুক তাকে সেই পুঁজিপতিদের অঙ্গুলীহেলনেই চলতে হবে৷ তাই সাধারণ মানুষের সমস্যার কোন সুরাহা হবে না৷ প্রধানমন্ত্রী ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে অনেক লম্বা চওড়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সাত বছরে একটাও পালন করেননি৷ তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রীকে পুতুল বানিয়ে দেশ চালাচ্ছে আম্বানি আদানি গোষ্ঠী, তাই অসার বচন দেওয়া ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর আর কিছু করার নেই৷ পুঁজিবাদী সামাজিক অর্থনৈতিক কাঠামোর বিনাশ করে অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন আনতে হবে, বিকেন্দ্রীত পথে স্থানীয় মানুষের হাতে অর্থনৈতিক ক্ষমতা তুলে দিতে হবে৷ শুধু রাজনীতি নয় অর্থনীতিতেও বহিরাগতদের দাপাদাপি বন্ধ করতে  হবে৷ আমরা বাঙালী সেই লক্ষ্যেই এগোচ্ছে৷