আমাদের হত দরিদ্র বৃহৎ ভারতের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ হতবাক হয়ে যায় যখন তাঁরা দেখেন যে এদেশের কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলি যখন সাধারণ নির্বাচন আসে তখন নোতুন নোতুন পরিকল্পনার জোয়ার বহিয়ে দেন৷ একটি মাত্র উদ্দেশ্য ঐসব দেশের বোটারগন যাতে তাঁদের আর্থিক ও সামাজিক শোষণের কথা ভুলে বোট বাক্সে তাঁদের মূল্যবান বোটটি ঐসব দলকে দেন! এই কথাটি তাঁরা আজ যাঁরা নবীন ও প্রবীন সেটা ভালো করেই বোঝেন! শাসকগণ ও বোঝেন যদি কিছু না দেওয়া হতো তাহলে শাসনে থেকে তাঁদের শোষন করা আর যাবে না যদি তাঁরা শাসনচ্যুত হয় তাহলে দলের সর্বনাশ হবে৷ শাসকদের ও দাদাগিরি করাটা ঘুচে যাবে৷ যেমন বর্তমানে ঠিক সেই কারণে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বর্ত্তমান ২০২৩ সালের আগষ্ট মাসেই আগামী ২০২৪ সালের লোকসভাবোটের আগাড়ী বিরাট অঙ্কের টাকা ঘোষনা করেছেন সারা ভারতের মাত্র ৫০৮টি বড়ো বড়ো রেল স্টেশনগুলির আধুনিক ধরনের উন্নত করার পরিকল্পনা ঘোষনা করে৷ এই পঃবাঙলার জন্য ৩৭টি স্টেশনের উন্নতি হবে৷ মোট খরচের টাকার অঙ্ক হলো ২৫ হাজার কোটি টাকা৷ এই প্রসঙ্গে একটা বিখ্যাত উক্তি ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াত রাজীব গান্ধীর৷ তিনি লোকসভায় বলেছিলেন--- ১০০টাকা যদি দেওয়া হয় উন্নয়ন খাতে তাহলে দেখা যায় মাত্র ৩০শতাংশ টাকা উন্নয়নের ব্যয় হয় বাকি টাকা উবে যায়!
অত্যন্ত বেদনা ও দুঃখের কথা আজ নিম্নমধ্যবিত্ত ও দরিদ্র ঘরের লক্ষ লক্ষ ছেলে মেয়ে বেকার হয়ে বসে আছেন, আর পরিবারের অভিভাবকগণ চোখের জল ফেলছেন চরম আর্থিক ও সামাজিক অনটনে তাদের কথা ভাবা হল না৷ হয়তো বলা হবে কেন এতে তো কাজ পাবে অনেকে৷ যাঁরা পাবেন এইসব কাজ তাঁরা অনেকে আগে থেকেই করছেন৷ বেকাররা পাবেন না৷ এদিকে এই রেলে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মীর পদ শূন্য পড়ে আছে লক্ষ লক্ষ সেখানে পুর্নবহাল হয়নি৷ এতে কর্মী সংকোচ কি করা হয়নি৷ তা হলে জনগণের তো পেটে ভাত নেই৷ বর্তমানে আর্থিক সংকটে ধনীদেশের সঙ্গে মিথ্যা পাল্লা দিতে গিয়ে রেলের কিছু শহরতলীর স্টেশনের এমন সব কাণ্ড না করে যদি ঐ ২৫ হাজার কোটি টাকার কিছুটা অংশ যদি শূন্যপদপূরণ করে বেকারদের চাকুরী দেওয়া হতো তা হলে মনে হয় সরকার তাঁদের আশীর্বাদ কুড়ুতেন ও প্রকৃত উন্নতি হতো দেশের বেকার সমস্যার কিছুটা সমাধান করে৷ এই সব কাণ্ডতে বার বার তাঁদের মনে হচ্ছে সরকার কী আমাদের বাঁচতে দেবেন না৷ আর মনে হচ্ছে এ সরকার আমাদের নয়, এরা মুষ্টিমেয় ধনীদের জন্যই এসেছেন৷ অত্যন্ত লজ্জার কথা যাঁরা শাসনে আসেন তাঁরা গরীব ঠকানোর কাজ করেন৷ গ্রামের কি উন্নতিটা করেছেন দেশের সরকার? ছোট ছোট রেলগুলো তুলে দিয়ে বড়ো বড়ো গেজের বড়ো বড়ো রেল গাড়ি চালাবার দিনে রাতে দু-চারবার চালবার ব্যবস্থা করে আর ছোট ছোট স্টেশনগুলি তুলে দিয়ে দিনে রাতে বড়ো রেল লাইনে রেল গাড়ি যাতায়াত করে তাতে গ্রামের অবস্থার উন্নতি না ঘটিয়ে গ্রামগুলিকে পঙ্গু করে দেওয়া হয়নি? আগে ঐ ছোট ছোট রেলগাড়ি আর গ্রামের লোক পরিবহনের সুযোগ পেত সেটা বন্ধ হয়ে গেছে৷ তাঁদের জীবন এতে দুর্বিসহ অবস্থা এসেছে বর্তমানে৷ সে কথা কি সরকার মনে ঠাই দিয়েছেন? মনে হয় না! প্রত্যক্ষ উদাহরণ বীরভূমের আমোদপুর লিঙ্ক রেলের অবস্থার উদাহরণ৷ সেটি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি শ্রী মাননীয় প্রণব মুখোপাধ্যায়ের জন্মস্থানের দশা৷ ভালো করার চেয়ে তো খারাপটাই কী করা হচ্ছে না? পশ্চিমবাংলায় রাজ্য সরকার কি এটা জানেন না?
এখন প্রশ্ণ রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নে গ্রামগঞ্জগুলির বেকার সমস্যা দুরীকরণে রাজ্যগুলি তো এরদিকে নজর দিয়ে রেল যোগাযোগের ব্যবস্থা করতে পারেন৷ ছোট রেললাইন বসিয়ে যাতে এলাকার আর্থিক উন্নতি হয় বেকার সমস্যা দূর হয়৷ কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায়৷ তাই বলা হয় ৭৭ বছর কেটে গেল ইংরেজ দেশ ছেড়েছে কিন্তু স্বাধীন দেশের দলতন্ত্রের সরকার গুলি কতটুকু দেশের উন্নতি করেছেন৷ শুধু দলবাজি আর নোংরামী ছাড়া৷ কৃষিপ্রধান ভারতে সার্বিক কৃষি উন্নয়ন ও সমবায় আন্দোলনের মাধ্যমে শিল্পোন্নয়ন ঘটিয়ে গ্রামগুলিকে তো আর্থিক স্বয়ংবর করা যেত, তা তিলমাত্র হয়নি৷ শুধু গদীর লড়াই আর মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে লোককে বিভ্রান্ত করা ছাড়া কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার করেছে টা কী? কেন্দ্র সরকার তো শুধু অমৃত ও শান্তির বানী ছড়াচ্ছেন দেশে তাতে বেকার সমস্যা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধ, সুশিক্ষা, দেশে শান্তি শৃঙ্খলা কি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে? ভারত হলো মহান অধ্যাত্মবাদের দেশ৷ এদেশ জগৎকে আত্মোন্নয়নের পথ দেখাবে প্রকৃত সভ্যতার পথ প্রদর্শন করতে পৃথিবীকে৷ কিন্তু এদেশটা তো শুধু নোংরা দলবাজীর ধারক সরকার গুলো পশ্চাতের দিকেই এগুচ্ছে ৷ তারা সামনের দিকে নয়৷
শুনলে লজ্জা ও দুঃখ যখন খবরের কাগজে দেখা যায় দেশের অধিকাংশ শাসক দেশনেতা ব্যষ্টিগত জীবনে কোটি কোটি টাকার মালিক তবে দু’একজন গরিব যেমন পশ্চিম বাঙলার মুখ্যমন্ত্রী৷ আর ৭৭ বছরের স্বাধীন দেশে কোটি মানুষের পেটে দুবেলা অন্নজোটে না ও মাথা গোঁজার ঘর নেই৷ তাই গ্রাম ভারতের উন্নয়নের কথা ভাবা হোক৷ শহর ও নগর এমনকি শহর তলীর রেল স্টেশনের আধুনিকীকরণের অমৃত ভারত গড়ার চেষ্টা না করে৷ এতে গরিব দেশবাসীর কি উন্নতি ঘটবে? গরিবরা তো ঐ সব রেলস্টেশনে রাত কাটাবার কোন সুযোগই পাবেন না৷ কারণ হা অন্ন অন্ন করাটাই যাদের দিবা নিশির অভিশপ্ত জীবন!৷ মহান ঈশ্বর তাঁদের জাগিয়ে তুলুন বাঁচার সংগ্রামে৷