আগামী মাসের গোড়া থেকে ভারতে নাকি জি এস টি চালু হতে চলেছে৷ কেন্দ্রের দাবী সব জট কেটে গেছে৷ কিন্তু এতে প:বঙ্গ রাজ্য সরকারের কোন মতামত নাকি গ্রহণ করা হয়নি৷ তাই মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য এতো তাড়াতাড়ি করে কেন্দ্রের অভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা কর চালু করা সঠিক হচ্ছে না৷ তিনি তাঁর বিস্তারিত বক্তব্য কেন্দ্রীয় সরকারের দফতরে পেশ করবেন৷
যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে কেন্দ্রের,রাজ্যের ও যৌথ দায়িত্বে কোন্ কোন্ বিষয় থাকবে তার নির্দিষ্ট তালিকা আছে৷ প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গতমাসে জি এস টি পরিষদ ১ হাজার ২০০ টি পণ্য ৫০০টি পরিসেবার ক্ষেত্রে যথাক্রমে ৫,১২, ১৮ এবং ২৮ শতাংশ কর আরোপ করেছিল৷ গত ৩রা জুন পরিষদের বৈঠকে সোণার গহনা, দামি পাথর, মুক্তো, বয়ন শিল্পের কিছু পণ্যের দাম নির্র্ধরিত হয়৷ কেরলের অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে কিছু প্রশ্ণ উঠেছে৷ বিশেষ করে প:বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এ ব্যাপারে অসন্তুষ্ট কারণ তাঁর মতামত নেওয়া হয় নি৷ আগেই বলা হয়েছে৷ তাই তার সরকার নোতুন জি এস টি বিলকে বর্ত্তমান আদর্শে গ্রহণ করবে না৷ তিনি মি: জেটলিকে চিঠি লিখে অনুরোধ করবেন, যাতে সমাজের সব বর্গের লোকের স্বার্থে এই বিলের সংশোধন করা হয়৷ বিশেষ করে অসংগঠিত ক্ষেত্রের জন্য এটা জরুরী
প:বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যে তাঁর রাজ্য সরকার কিছু পণ্যের ওপর আরোপিত কর কমানোর জন্যে দাবী জানিয়ে যাবে ৷ তাঁর মতে যতক্ষণ না করের হার হ্রাস পাচ্ছে ততদিন বিরূপ প্রভাব পড়বে অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের ওপর৷ তবে শিল্প ক্ষেত্রে কয়েকটি কর ছাড়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে যে বৈঠকে প:বঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র উপস্থিত ছিলেন৷ একটি সুবিধা ব্যবসাদারদের দেওয়া হয়েছে৷ তাঁরা অন্ত শুল্কের ৪%’বরত পাবেন৷ সকলেই নজর রাখছে পরবর্ত্তী পরিস্থিতির ওপর প্রসঙ্গতে উল্লেখ্য বর্ত্তমান দেশ চরম মন্দার শিকার হয়েছে বড়ো নোট বাতিলের কারণে৷ জাতীয় আয়ের মাত্রা অনেকটাই কমে দাঁড়িয়েছে ৬.% শতাংশ৷ চরম বেকার সমস্যা, অত্যধিক দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি,কল-কারখানার অধিকাংশ ধুঁকছে তা ছাড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে৷ কর্মক্ষম যুবক যুবতীর সামনে কর্মসংস্থান এর তেমন কোন দিশাই নেই৷ লক্ষ লক্ষ বেকার হাপিত্তেশ করে বসে আছে৷ ঠিক এর পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে যারা কিছুমাস চাকরী পাচ্ছে নানা কারণে তারা অন্ধকারে দিশেহারা হয়ে পড়ছে ৷
এটা কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক কাঠামোতে এক ব্যর্থ প্রশাসননিক ব্যবস্থার চরম অক্ষমতারই করুণছবি৷ এর আশু পরিবর্ত্তন কাম্য৷ দেশের জনগণ কামনা করেন কেন্দ্র রাজ্যসরকারের সেবার মানসিকতাকে বিশেষ করে গুরুত্ব দিন দলীয় স্বার্থকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করেই৷
কেন্দ্রীয় সরকারকে মনে রাখতেই হবে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতে রাজ্য সরকারকে আয়ের উৎস সন্ধান করতে হয় রাজ্যের সার্বিক আর্থিক উন্নয়নের জন্যে৷ তাই এক কর ব্যবস্থা যেন রাজ্যকে অকেজো ও অক্ষম করে না তোলে ৷ রাজ্যের আর্থিক অনটন দূরীকরণে রাজ্যের বাজেট পেশের সময়৷ তাই কর প্রবর্ত্তন ব্যবস্থায় রাজ্যের যে সুযোগ আছে সেটা যেন সঙ্কুচিত না হয়৷
বিরাট গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত শাসন ব্যবস্থা থেকে আরম্ভ করে কেন্দ্রের ও রাজ্যগুলির যে বিরাট প্রশাসনিক খরচ সেটা পূরণ করতে সরকার জনগণের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করের বোঝা এমন ভাবে চাপাচ্ছেন দিনের পর দিন যাতে হতভাগ্য নিম্নমধ্যবিত্ত গরিব জনগণ চিড়ে চ্যাপটা হয়ে যাচ্ছেন৷
মানুষ প্রসাশনিক অবস্থায় দারুণভাবেই বিক্ষুদ্ধ হয়ে পড়ছেন৷ তাই সরকারকে নোতুন কর ভাবতে হবে যাতে জনগণকে নোতুন করের বোঝা থেকে মুক্তি পায় ও জনগণ যাতে বেকার সমস্যার হাত থেকে মুক্তি পায়৷ কেবল কর চাপিয়ে জনগণকে রক্তশূন্য করে দেশ শাসনে কোন সার্থকতা আছে বলে মনে হয় না৷ এই ধরণের নাগরিক জীবন তো জনগণ কামনা করেন না৷
- Log in to post comments