কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যমূলক ভাষানীতির প্রতিবাদে অসম আমরা বাঙালী

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

‘আমরা বাঙালী’র অসম রাজ্যকমিটির মুখপত্র আবুলকালাম বাহার জানান --- সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বাধীন সংসদীয় ভাষা কমিটি কেন্দ্রীয় সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা দানের  ভাষা থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরীর প্রবেশিকা পরীক্ষায় ইংরেজি তুলে হিন্দীতে নেওয়ার মর্মে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করার খবর প্রকাশ হিন্দী আগ্রাসন চালাচ্ছে বলে মনে করছে ‘আমরা বাঙালী’ দল৷

এক বিবৃতিতে দলের অসম রাজ্য সচিব সাধন পুরকায়স্থ বলেন---বহুযুগ ধরে ভারতবর্ষের প্রচলিত বিভিন্ন ভাষা গুলিকে উপেক্ষা করে দেশজুড়ে হিন্দী ভাষা চাপানোর অর্থই দেশের ইতিহাসকে বিকৃত করা৷  ভারতবর্ষ মানেই শুধু হিন্দী ভাষা নয়, ভারতবর্ষ মানে বাংলা ভাষা, তামিল ভাষা, মালায়ালাম ভাষা, অঙ্গিকা ভাষা, মগহী ভাষা, ভোজপুরি ভাষা সহ আরো অনেক৷ ভারতে ৪৪টি জনগোষ্ঠী বসবাস করে৷ ‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য’-এই ভাবনা নিয়েই ভারতবর্ষ বহু যুগ ধরে চলে আসছে৷ সেখানে কেন্দ্রের হিন্দী চাপানোর ঘটনা অনভিপ্রেত ও নিন্দনীয়৷ কেন্দ্রীয় সরকার  অষ্টম শ্রেণী অবধি হিন্দি ভাষায় শিক্ষাদান বাধ্যতামূলক করার চেষ্টা করা (যদিও দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় সরকার সেই সিদ্ধান্ত থেকে সাময়িকভাবে পিছু হটেছে) বা ১৪ই সেপ্ঢেম্বর ‘হিন্দি দিবস’ পালন করে ‘হিন্দি রাষ্ট্রভাষা’ এইসব মনগড়া কথার অপপ্রচার চালাচ্ছে৷ শুধু তাই নয়, সংবিধানে আঞ্চলিক ভাষায় সরকারি সমস্ত পরিষেবা পাওয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও অহিন্দিভাষী রাজ্যের মানুষেরা কেন্দ্রীয় সরকারি দফতরগুলিতে আঞ্চলিক ভাষায় পরিষেবা পায় না৷ আমি নিজে প্রত্যক্ষ করেছি হিন্দি বা ইংরেজি ভাষায় তেমন সড়গড় না হওয়ার দরুণ আমার বহু পরিচিত বা অপরিচিত মানুষকে ব্যাঙ্কে প্রভূত হয়রানির শিকার হতে হয়৷ সর্বভারতীয় চাকরির নিয়োগ পরীক্ষাগুলি ইংরেজির পাশাপাশি আঞ্চলিক ভাষায় নেওয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা ব্রাত্য থেকে যায়৷ আসলেই হিন্দী হিন্দু হিন্দুস্তান তাদের এক দেশ -এক ধর্ম-এক ভাষা নীতির বাস্তবায়ন করতে চাইছে এই মতাদর্শে বিশ্বাসী বর্তমান কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার৷ আমরা কম বেশি সবাই জানি, তবুও আর একবার মনে করে নিচ্ছি, ভারতবর্ষের নির্দিষ্ট কোন রাষ্ট্রশক্তির মাধ্যমে অহিন্দিভাষীদের উপর হিন্দি ভাষা  চাপিয়ে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত হানা ও সাংবিধানিক অধিকার হরণের ঘৃণ্য চেষ্টা এখনই বন্ধ হোক৷ রাজ্য হোক বা কেন্দ্র সমস্ত সরকারি ক্ষেত্রেই ভারতের প্রতিটি নাগরিক তাদের মাতৃভাষায় পরিষেবার সুযোগ পাক৷