বিংশ শতাব্দীর শেষাংশে সংকটকালীন যুগে ধর্ম, সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও জীবনের সর্বক্ষেত্রেই যে চরম পথভ্রষ্টতা, অবক্ষয়, শোষণ ও অত্যাচার প্রবাহিত হয়েছে, ও গোটা বিশ্ব আজ যে আদর্শহীনতার পথে পরিচালিত হচ্ছে, সেই বিপদের হাত থেকে মানব সমাজকে রক্ষা করতে শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী তথা শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার ১৯২১ সালের বৈশাখী পূর্ণিমায় বিহারের মুঙ্গের জেলার জামালপুরে আবির্ভূত হন৷ তিনিই আনন্দমার্গের প্রতিষ্ঠাতা ও আদর্শদাতা৷ আনন্দমার্গের প্রবক্তা ও প্রবর্তক হিসেবে তিনি প্রথমবারের মতো এক সর্বানুস্যূত পূর্ণাঙ্গ দর্শন ও ভাবাদর্শ মানবজাতির সামনে তুলে ধরেন৷
১৯৯০ সালের ২১শে অক্টোবর, তিনি কলকাতার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিকটস্থ তাঁর মধুকোরক বাসভবনে পার্থিব শরীর ত্যাগ করেন ও সমস্ত ভক্তের হৃদয়ে চিরকাল বিরাজমান আছেন৷ তাঁর দর্শন লাভের জন্য, সারাবিশ্ব থেকে আগত ভক্তবৃন্দের জন্যে তাঁর পার্থিব দেহ ২১শে অক্টোবর থেকে ২৬শে অক্টোবর পর্যন্ত মধুকোরক বাসভবনে শায়িত রাখা হয়৷ এই সময়কালে ভক্তরা ছয় দিন ধরে ‘বাবা নাম কেবলম মহামন্ত্রের উচ্চারণে নিমগ্ণ থাকেন৷ সেই স্মৃতিমূলক ঐতিহ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর ২১ থেকে ২৬ শে অক্টোবর পর্যন্ত কলকাতা কেন্দ্রীয় আশ্রমে ‘স্মৃতি শৌধে’ ১২০ ঘণ্টা অখণ্ড ‘বাবা নাম কেবলম নাম সংকীর্তন, সকাল ও সন্ধ্যায় ঈশ্বর প্রণিধান ও অডিও প্রবচনের আয়োজন করা হয়৷
এই ছয়দিনের অখণ্ড বাবা নাম কেবলম কীর্ত্তনের আধ্যাত্মিক তরঙ্গ এত শক্তিশালী যে দেশবিদেশের ভক্তবৃন্দ শতবাঁধা অতিক্রম করে অংশগ্রহণ করতে উদগ্রীব হয়ে থাকে৷ তাই দেখা যাচ্ছে প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ কীর্ত্তন করতে চলে আসছেন