কলকাতার  প্রথম ফুটপাত

সংবাদদাতা
প্রণবকান্তি  দাশগুপ্ত
সময়

কলকাতার যে রাস্তাটির একদিকে লাটপ্রাসাদ আর অপর দিকে লাল দীঘি তার নাম ওল্‌ড কোর্ট হাউস ষ্ট্রীট৷ এখানে পুরনো কোর্ট হাউস ছিল তা রাস্তার নামকরণ থেকেই বোঝা যায়৷ এককালে এই রাস্তাটি এখানকার মিশন রো অবধি বিস্তৃত     ছিল৷ একসময় এই ওলড্‌ কোর্ট হাউস ষ্ট্রীট গীর্র্জ থেকে শুরু করে, রেডসহ, গড়ের মাঠের মধ্য দিয়ে সোজা খিদিরপুর পোলে গিয়ে মিশেছিল৷ বর্তমানে এই বিশাল রাস্তাটি নানাভাগে বিভক্ত হয়ে নানা নামে নামাঙ্কিত হয়ে আছে৷

১৮৬১-৬২ খ্রীষ্টাব্দে এই ওলড্‌ কোর্ট হাউস স্ট্রীটেই কলকাতার  প্রথম ফুটপাত তৈরী হয়৷ সেকালে সাহেব পাড়া আর দেশী পাড়ার মধ্যে একটু পার্থক্য ছিল৷ সাহেব পাড়ার রাস্তা আর ফুটপাত  বড় বড় চৌকো পাথরের শান দিয়ে বাঁধানো হতো৷  আর দেশী পাড়ার পথ হতো কাঁচা মাটির৷ দেশী পাড়ার রাস্তায় জল দেওয়া হতো অথচ সাহেব পাড়ার রাস্তা কেরোসিন তেল দিয়ে পালিশ করা হতো৷ তবে দেশী পাড়ার হেদুয়া সংলগ্ণ বেথুন কলেজের এপার ওপার  দুই ফুটপাতই পাথরে বাঁধানো হয়েছিল৷ তার কারণ বেথুন কলেজে সাহেবদের মেয়েরা আর  জেনারেল এসেমব্লিজ ইনষ্টিটিউশন অর্থাৎ বর্তমান স্কটিশ চার্চ কলেজে সাহেবদের ছেলেমেয়েরা পড়তে  আসতো৷ তাদের সুবিধার্থেই ফুটপাত  বাঁধানো হয়েছিল৷ প্রথম মহাযুদ্ধের সময়  বাধ্য হয়েই কর্র্পেরেশন দেশীপাড়ার ফুটপাতও সিমেন্ট দিয়ে বাঁধাতে শুরু করেছিল৷

সেই সময় অকারণে ফুটপাত ছেড়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটলে পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়ে শাস্তি দিতো৷ এখনকার মতো কর্র্পেরেশন ফুটপাতে কখনই কোন দোকানপাট বসতে দিত না৷ ফুটপাত হকারদের দখলে ছিল না৷ এখনতো ফুটপাত পথচারীদের জন্য নয়৷ হকারদের জন্য৷