গত ৩০শে আগষ্ট কলকাতার কাশীমিত্র ঘাটে আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘের পক্ষ থেকে মহাসমারোহে উদযাপিত হল শ্রাবণী পূর্ণিমা৷ শ্রাবণী পূর্ণিমা তিথিটি আনন্দমার্গের ইতিহাসে একটি বিশেষ স্মরণীয় দিন হিসাবে স্বীকৃত৷ কারণ ১৯৩৯ সালের এই তিথিতেই শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তিজী যার লৌকিক নাম শ্রীপ্রভাতরঞ্জন সরকার, ছাত্রাবস্থায় তিনি ১৮ বছর বয়সে উত্তর কলকাতার বাগবাজারের কাছে কাশীমিত্র ঘাটে কালীচরণ নামে এক কুখ্যাত ডাকাতকে প্রথম দীক্ষা, দিয়ে তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন৷ সে ছিল নর রক্ত পিপাসু এক নৃশংস খুনী৷ শুধুমাত্র অর্থের জন্য সে বহু মানুষকে হত্যা করেছিল৷ পরশমণির পরশে যেমন পাথরও সোনায় পরিণত হয়৷ ঠিক তেমনি সেই তরুণ প্রভাতের দিব্য পরশে সাধনার গভীর অনুশীলনে কুখ্যাত ডাকাত কালীচরণ পরিণত হল সাধক কালিকানন্দে৷ শ্রাবণীপূর্ণিমা তিথিতে জগতের বুকে আধ্যাত্মিক গুরু হিসেবে তিনি তার নূতন ভূমিকা শুরু করলেন৷ শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী কালক্রমে জগদগুরু হিসাবে তিনি বিশ্বে বন্দিত হন৷
শ্রাবণীপূর্ণিমা তিথিতে প্রথম দীক্ষা দানের মাধ্যমে গুরু হিসাবে যে সলতে পাকানো তিনি শুরু করেছিলেন, আধ্যাত্মিকতার প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে ১৯৫৫সালের ৯ই জানুয়ারী শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী আনন্দমার্গ প্রচারক সংঘের শুভসূচনা করেন৷ এদিন কাশীমিত্র ঘাটে কলকাতা ২৪ পরগণা, হাওড়া, হুগলী প্রভৃতি জেলা থেকে বহু মার্গী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন৷ সকাল সাতটা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত তিনঘন্টা ব্যাপী অখণ্ড কীর্ত্তন, সাধনা ও গুরুপূজার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব শেষ হয়৷ এরপর শ্রাবণী পূর্ণিমার দিনটি তাৎপর্য ও গুরুত্ব সম্বন্ধে বক্তব্য রাখেন সংঘের বর্ষীয়ান সন্ন্যাসী আচার্য কাশীশ্বরানন্দ অবধূত৷ আনন্দমার্গের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্বন্ধে বক্তব্য রাখেন শ্রীলক্ষ্মীকান্ত হাজরা৷ এরপর শ্রীশ্রীআনন্দমূর্ত্তিজী রচিত ও সুরারোপিত প্রভাত সঙ্গীত ‘শ্রাবণী পূর্ণিমার কথা আজ মনে পড়ে’--- গানটির সুরে উপস্থিত সকলে গলা মেলান৷ সর্বশেষে ভক্ত ও স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয়৷ এদিন আনন্দনগর সহ বিশ্বের প্রতিটি ইয়ূনিটে শ্রাবণী পূর্ণিমা উদ্যাপন করা হয়৷