ক্রেশে শিশুর ভবিষ্যৎ?

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

ক্রেশ চালাতে হলে কয়েকটি দিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখা একান্তই প্রয়োজন৷ ক্রেশের ওপর নজরদারি অর্থাৎ নিয়মিত পরিদর্শনের জন্যে একটি প্রশাসনিক কমিটি৷ ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের সামলে রাখার ব্যাপারে প্রশিক্ষিত কর্মী৷ ঘরের বাইরেও শিশুরা যাতে ছুটোছুটি করতে পারে, খেলাধূলা করতে পারে তার জন্যে প্রশস্থ নিরাপদ স্থানের সংকুলান৷ শৌচাগার থাকবে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত৷ পর্যাপ্ত আলো-বাতাস যুক্ত ভরপুর থাকবে ক্রেশটি৷ প্রত্যেক শিশুর জন্যে ছয় থেকে আট বর্গফুট জায়গা সংকুলান থাকতে হবে, যাতে সে বিনা বাধায় খেলাধূলা করতে পারে ও বিশ্রাম নিতে পারে৷ এককথায় পরিবেশকে রাখতে হবে সুন্দর, সুচারু রূপে৷ আরো বড় কথা প্রশিক্ষিত শিক্ষিকা, নার্স, আয়া যাঁরা সর্বদা তাঁদের সঙ্গ দেবে অর্থাৎ লালন-পালন করবেন ও তাদের সহবৎ শেখাবেন৷ তাঁদের হতে হবে স্নেহময়ী, কল্যাণময়ী, মমতাময়ী ও দরদী৷ এককথায় একজন আদর্শ মায়ের মত৷ মনে রাখতে হবে, তাঁরা এখানে চাকরী করছেন না সেবা দিচ্ছেন৷

এসবের কোনটার অভাব হলে শিশু মিথ্যে কথা বলতে শিখবে৷ আদর, ভালবাসা না পেলে একগুয়ে হবে, মতের অমিল হলে অন্যকে আঁচরে-কামড়ে দেবে, লাথি মারবে, মুখ ভ্যাঙচাবে ও ঘরের বাইরে যেতে অনীহা প্রকাশ করবে৷ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্যে শিশু অসুস্থ হয়ে পড়বে৷ ঠিকভাবে শিশুকে পুষ্টিকর আহার থেকে বঞ্চিত হলে ছোট থেকেই দুর্বল হয়ে পড়বে ও অসুস্থ হবে৷ শিশুর বাবা-মা ক্রেশের কর্মীদের ওপর বিশ্বাস করে তাঁর শিশুকে রেখে যান৷ অথচ তাঁদের অবহেলায় সেই শিশু যে আগামী দিনের সুনাগরিক তথা প্রতিষ্ঠিত মানুষ, এইভাবে অকালে শুকিয়ে যাবে৷ এটা কতটা মর্মান্তিক যে কথা বলার অবকাশ রাখে না৷

আধুনিক নগর জীবনে ক্রেশ একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা৷ নিউক্লিয়ার পরিবারে ছোট ছোট শিশুরা চাকুরে মা-বাবার কারণে ক্রেশেই বেড়ে উঠছে৷ আর শিশুর ঠাকুরমা-ঠাকুরর্দার দিন কাটছে বৃদ্ধাশ্রমে৷

কর্পোরেট ভিত্তিক শহুরে সমাজজীবনে ক্রেশ ও বৃদ্ধাশ্রম দু’টোই বড় পরিষেবা৷ দু’টোতেই প্রায়ই গুণমান নিয়ে নানা প্রশ্ণ উঠে এসেছে৷

তাই চিন্তিত অভিভাবক ও অভিভাবিকাদের আবেদন যে শিশুদের ক্রেশের ব্যাপারে নজরদারির মধ্যে দিয়ে আরো মানবিক হতে হবে প্রশাসনকে৷

আর একটা কথা এ রাজ্যে এমন কোনও প্রশাসনিক নজরদারি কমিটি রয়েছে কি?