সন্ত্রাসের রাজনীতি করে সি.পি.এম পার্টি দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করেছিল আর চিরাচরিত পুঁজিবাদীদের বিরুদ্ধাচরণ করে’ সি.পি.এমের কমরেডদের নব্যপুঁজিবাদী হয়ে উঠেছিল৷ বাংলার মানুষ তথা ভারতের বুদ্ধিজীবীমাত্রই ভালভাবে জানেন৷ আবার অন্যদিকে জাত-পাতের রাজনীতি করে’ সাংসদ ও বিধায়ক হতে সক্ষম হয় ও সেই সঙ্গে নানাভাবে ঘোটালা করে সাংসদ ও বিধায়কগণ কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছেন, ভারতের মানুষ এও জানে৷ দেশ গড়ার ও মানুষের কল্যাণ করার আদর্শ বা নীতি এঁদের কারুরই নেই৷ বর্ত্তমানে কেন্দ্রে মোদী তথা বিজেপি সরকার রয়েছে৷ এদের ক্ষমতালাভের পেছনে আছে ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের আগের মিথ্যা স্তোকবাক্যগুলি৷ সে গুলি মোটামুটি হলে---মোদীর মুখ্যমন্ত্রিত্বে গুজরাত নাকি ভারতের এক শিল্পনগরীতে নাকি পরিণত হয়েছে তাই ভারতের উন্নতির জন্যে ওই গুজরাত মডেলের প্রচার, দুর্নীতিমুক্ত ভারত গড়ে তোলার আশ্বাস,‘আচ্ছে দিন’ ও আরো ানেক মনোমুগ্দকর বাণী--- বছরে বছরে এককোটি চাকরী বা কর্মসংস্থান করা, বিদেশ থেকে কালো টাকা এনে প্রত্যেক গরীবদের ধনজন এ্যাকাউণ্টে পনেরো লাখ টাকা ভরে দেওয়া, দ্রব্যমূল্য বোধ করা ইত্যাদির ইত্যাদির হাওয়া উঠানো৷মিডিয়াগুলির মাধ্যমে ওই হাওয়া উঠিয়ে বিজেপি সাধারণ মানুষের মন জয় করতে সমর্থ হয় ও নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে কংগ্রেসের মনোমোহন সরকারকে সরিয়ে দিয়ে৷ এখন কথা হলো গুজরাতে শিল্পোৎপাদিত দ্রব্যের বাজার হলো ভারতের অন্যান্য প্রদেশগুলি৷ সব প্রদেশগুলিতে নিবিরভাবে বৃহৎ শিল্প গড়ে উঠলে শিল্প দ্রব্যের বিক্রয় করার বাজার তো আর থাকবে না ফলে শিল্পে মন্দা আসবে৷ সাধারণ জনগণের অত গভীরে যাওয়ার বুদ্ধিসুদ্ধি নেই৷ এখন বছরে বছরে এককোটি কর্মসংস্থানের কথা বলতে গেলে বলতে হয় যারা ক্ষমতায় থাকে না বা বিরোধীর ভূমিকা নেয় তাদের ঝুলিতে যেন কোটি কোটি চাকুরীর সংস্থান থাকে, ক্ষমতায় এলে সেই কোটি কোটি চাকুরী বিলিয়ে দিয়ে জনগণের বেকারত্ব দূর করে দেবে৷ কিন্তু প্রকৃত তথ্য বলে বর্ত্তমানে বেকার সংখ্যার তুলনায় সরকারে কর্মস্থান বা শূন্য পদগুলি খুবই নগন্য৷ যে কেউ ক্ষমতায় আসুক না কেন বর্ত্তমান পরিকাঠামোতে সকল বেকারদের চাকুরী বা কর্মসংস্থান করে দিতে পারবে না৷
কেবল তা সম্ভব হবে মহান দার্শনিক শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকারের দেওয়া সু-সন্তলিত অর্থনীতি বা প্রাউটের অর্থব্যবস্থার দ্বারা৷ এই সুসন্তুলিত অর্থব্যবস্থাতে ১০০ শতাংশ স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থানের উপায় সুন্দরভাবে বলা হয়েছে কিন্তু জনগণের এই অভিনব প্রাউট অর্থনীতির দিকে দৃষ্টি নেই৷ তাদের দৃষ্টি আছে কেবল পার্টিগুলির মন ভুলানো গাল-গল্প ভরা মিথ্যাস্তোক বাক্যগুলিতে বিশ্বাস ও নাচানাচির দিকে৷ শিক্ষিত বেকারগণ ভেবে নেয় ওদের ঝান্ডাবাহী হয়ে গেলে আর ওই পার্টি ক্ষমতায় এলে চাকুরী পেয়ে যাবে৷ মোদীজী বছরে বছরে এক এক কোটি চাকুরীর সংস্থান তো করতে পারেননি, চার বছরে কয়েক লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান মাত্র হয়েছে৷ আবার অনেকে ভাবছে যে কংগ্রেস, কম্যুনিষ্ট বা তৃণমূল করে তো কোন কর্মস্থান হয়নি, কেন্দ্রে যে পার্টি আছে সেই পার্টি যদি রাজ্যে ক্ষমতায় আসে, সেই পার্টি করলেই হয়ত চাকুরী হয়ে যাবে৷ এতো আরও নির্বুদ্ধিতা৷ কারণ যেখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ ও সরকারী পদের সুযোগ খুবই কম সেক্ষেত্রে যারা বাপ-ঠাকুরদার আমল থেকে ওই পার্টির ঝাণ্ডা বহন করে আসছে তাদের বংশধরেরা বেকার থাকলে তো তারাই ওই সীমিত চাকুরী বা সীমিত সরকারী পদ লাভ করবে৷ সবেমাত্র ঝান্ডা বদল করলে নোতুনদের শক্তি সামর্থ্যকে কাজে লাগিয়ে পার্টির লাভ হবে নিশ্চয় কিন্তু ওই সবেমাত্র পার্টিতে যারা সামিল হয়েছে তাদের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে কিনা বলা অনিশ্চিত৷ ত্রিপুরার মানুষ কংগ্রেস ছেড়ে, সিপি-এম ছেড়ে বিজেপি পার্টিকে ক্ষমতায় আনল৷ কিন্তু তারা কি পেল কিছু?
মোদী সরকারের ও বিজেপি পার্টির দুর্নীতিমুক্ত সরকার গড়া তো দূরের কথা বরং জনগণের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে মোদীজী ও বিজেপির ঘনিষ্ঠরা বিদেশ পাড়ি দিয়েছে৷ সরকার আসার আগে দুর্নীতি যেমন ছিল এখনও তেমন দুর্নীতি রয়েছে৷ বরং আরও বেশী মাত্রায় বেড়ে গেছে এছাড়া কর্র্পেরেট শিল্পপতি ও পঁুজিপতিদের কোটি কোটি টাকার ব্যাঙ্ক-ঋণ মাফ হয়েছে৷ মোদীজীকে ২০১৪ সালের ভোট প্রচারে হেলিকপ্ঢারের খরচাপাতি যাঁরা মদত করেছেন তাদের স্বার্থটা তো রক্ষা করতে হবে৷ তাই বলা হয় গণতন্ত্র ও পঁুজিবাদ ইতিহাসে যমজভাই--- একে অন্যের পরিপূরক৷ বিদেশ থেকে কালো টাকার উদ্ধারের ব্যর্থতাকে ঢাকবার জন্যে, মানুষের মনকে ওদিক থেকে ডাইভার্ট করার জন্য ভারতের জনগণের কালাধন ও জালনোট ধরার অজুহাতে হাজার টাকা ও পাঁচশ টাকার নোট বাতিলের চমক মোদিজী দেখাতে লাগলেন৷ এই নোট বাতিলের ফল তো হলো অশ্বডিম্ব৷ কেবল বিশেষ করে বিজেপি পার্টির নেতা-নেত্রী ও কর্মীদের কালো টাকা সাদা হয়েছে৷ বিজেপির পার্টিফাণ্ড ফুলে ফেঁপে উঠেছে৷ বর্ত্তমানে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে যে বিজেপি হলো সর্র্বেচ্চ ধনী পার্টি অন্যসব পার্টির তুলনায়৷ কালোধন উদ্ধার করতে গিয়ে ভারতের আপামর জনসাধারণকে পথে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিলেন মোদীজী যার ফলে প্রায় দু’শ মানুষের প্রাণ গিয়েছে৷ কোন ব্যষ্টির দ্বারা একটি মানুষের প্রাণ গেলে তার আজীবন কারাদন্ড বা ফাঁসী হয়৷ যদি কোন নেতার খেয়ালখুশী বা ভুল পদক্ষেপে সাধারণ সহজ-সরল মানুষের প্রাণ যায় ওই নেতা বা নেতাদের অনুরূপ সাজা হবে না কেন? জওহরলাল নেহেরু ও জিন্নার ক্ষমতার লালসার জন্য ধর্মমতের ভিত্তিতে ভারত ভাগ হওয়ার ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ গৃহহীন ও পথাশ্রয়ী হয়েছিল, তাদের এর জন্যে অন্ততঃ মানবতার আদালতে কঠিন সাজা হওয়া দরকার ছিল৷ নেতা হওয়া সহজ কথা নয়৷ লম্বা চওড়া স্তোক বাক্য শুণিয়ে লম্বা ভাষণ দিয়ে প্রকৃত নেতা হওয়া যায় না৷ নেতার বা নেত্রীর পদক্ষেপ হবে অভ্রান্ত৷ আজও আমরা প্রকৃত নেতা বলতে একজনকেইবুঝি, তিনি হলেন নেতাজী সুভাষ৷ মোদী সরকার দ্রব্যমূল্য রোধ করতেও সক্ষম হয়নি৷ ট্রেনের ভাড়া ক্রমে বাড়ানো হয়েছে৷ ট্রেনে যেখানে সর্বনিম্ন ভাড়া ছিল পাঁচ টাকা মোদী সরকারের তা বেড়ে সর্বনিম্ন ভাড়া হয়েছে দশ টাকা৷ আর পেট্রল ও ডিজেলের দাম দফার পর দফায় বাড়ানো হয়েছে৷ আবার ডিজেল পেট্রোলের দাম বাড়লে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ও স্বাভাবিকভাবে বাড়ে৷ তাই বালি, মনমোহিনী বুলি ও স্তোক বাক্যের হাওয়া তুলে ক্ষমতা লাভ করা যায় সাধারণ মানুষের মনকে ভুলিয়ে, কিন্তু মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা যায় আর না তাতে দেশের কল্যাণ সাধন করা যায় না৷ সাধারণ সহজ সরল মানুষ এই ধাপ্পাবাজীতে বারে বারে পা দেবে ও ধাপ্পাবাজরা ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করবে৷ তাই শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার বলেছেন--- পঞ্চাশ শতাংশের ওপর মানুষ শিক্ষিত, নীতিবান ও সমাজসচেতন হলে তবেই তাদের দ্বারা কেবল গণতন্ত্র সাফল্যমণ্ডিত হবে৷ অন্যথায় নয়৷
দিল্লীর মসনদে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর এদের লক্ষ্য হলো অন্যান্য কংগ্রেস শাসিত, কম্যুনিষ্ট শাসিত, তৃণমূল শাসিত বা সমাজবাদী শাসিত রাজ্যগুলির শাসন ক্ষমতা দখল করা৷ এই লালসা পূরণের জন্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের প্ররোচনা মূলক উস্কানি নোংরা রাজনীতির পরিচয় ছাড়া কিছু নয়৷ দিল্লীর শাসনব্যবস্থা কায়েম করার ঠিক পরে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ পশ্চিম বাংলায় এসে বিজেপির কর্মীদের উস্কানি দিয়ে গিয়েছিলেন যে-যেভাবে হোক ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে, বিজেপিকে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আনতে হবে৷ এরজন্যে ছল বল কৌশল যা কিছু আছে তা প্রয়োগ করতে হবে৷ আর যেহেতু বিজেপি কেন্দ্রের বলে বলীয়ান হয়ে শাসন ক্ষমতায় আছে, তাই যারা তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলে পার্টিতে ভালভাবে স্থান করে নিতে পারে নি, যারা সিপি.এম ও কংগ্রেস পার্টিতেও হতাশাগ্রস্ত বিজেপি নেতারা তাদের ভাঙ্গিয়ে নিজেদের পার্টিতে সামিল করেছে৷ এরা ভাবছে কেন্দ্রে যেহেতু বিজেপি সরকার তাই পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি যে করেই হোক ক্ষমতায় আসবে৷ তখন এদের হবে পোয়া বারো৷ দিল্লীকা লাড্ডু বলে কথা! পশ্চিমবঙ্গের বঙ্গসন্তানগণ দিল্লীর লাড্ডুর জন্য লালায়িত৷ দিল্লীর লাড্ডুর সম্পর্কে একটা প্রবাদ বাক্য আছে ‘‘ দিল্লীকা লাড্ডু যো নহী খায়া--- সো ভী পস্তায়া অর যো খায়া সো ভী পস্তায়া৷’’
যদি পশ্চিম বঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় আসে তো বাংলার সংসৃকতি আরও বেশী বিকৃত হবে৷
সাংবিধানিক হিসাবে হিন্দি রাষ্ট্রভাষা নয় তবু দিল্লী সরকারের অনুগ্রহে হিন্দি প্রচার সমিতি হিন্দিকে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে প্রচার করে চলেছে৷৷ যার ফলে বাংলার সংসৃকতি বিকৃত হয়েছে, যুবগোষ্ঠীর মুখে মুখে হিন্দিভাষা , হিন্দি গান লেগে আছে৷ বিজেপি ক্ষমতায় এলে বাংলার সংসৃকতি আরও বেশী যে বিকৃত হবে সে ব্যাপারে নিঃসন্দেহ৷ এমনিতে তো কলিকাতার বড় বাজার , আসানশোল, রাণীগঞ্জ, বার্নপুর অঞ্চল হিন্দি সাম্রাজ্যবাদীদের উপনিবেশ হয়ে গেছে৷ বাংলার মানুষকে মনে রাখতে হবে যে বিজেপি পার্টির মূল এজেন্ডা হলে তিনটি ‘হ’--- হিন্দি, হিন্দু ও হিন্দুস্থান৷ বিহারের মগহী, অঙ্গিকা, ভোজপুরী, মৈথেলী ও নাগপুরিয়া ভাষাগুলি এক একটি পূর্ণভাষা৷ কিন্তু এগুলিকে হিন্দির উপভাষা বলে’ প্রচার করে এদের বিকাশ বোধ করে দেওয়া হয়েছে৷ তুলসী দাসের রামায়ণ হলো অবধি ভাষায় রচিত৷ এই অবধি ভাষা পূর্ণাঙ্গ ভাষা৷ অথচ একে হিন্দীর উপভাষা হিসেবে দেখানো হয়েছে৷ এইভাবে ভারতের বহু ভাষাকে অবদমিত করে হিন্দী সাম্রাজ্যবাদ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে৷
মহান দার্শনিক শ্রী প্রভাতরঞ্জন সরকার ভারতে ৪৪টি পূর্ণভাষায় কথা বলে গেছেন৷ তাদের মধ্যে যে সকল ভাষা হিন্দি ভাষার দ্বারা দমিত তাদের হিন্দির ভাষার কবল থেকে মুক্ত করে বিকাশ সাধনের কথা বলে গেছেন৷
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ তথা সিদ্ধার্থনাথ সিং ও বিজয় বর্গীয়দের বঙ্গের বিজেপির কর্মী ও আর.এস.এসের কর্মীদের প্রতি যে উস্কানিমূলক নির্দেশ ছিল---যেভাবে হোক ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে , বিজেপিকে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আনবে হবে, এর অন্তনির্হিত অর্থ ছিল গায়ে পড়ে গন্ডগোল পাকাও , অশান্তির পরিবেশ তৈরী করে তোল যাতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারী করা যায় ৷ কারণ বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী নিজেই বিজেপি ও আর এস এসের লোক৷ এমন এক পরিস্থিতি তৈরী করতে হবে যাতে সহজেই রাষ্ট্রপতি শাসন লাগু হয়ে যায়৷ তাই রামনবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে, হনুমান জয়ন্তী মিছিলকে কেন্দ্র করে হাঙ্গামা বাধাও---ক্যাডারদের প্রতি এমনই অলিখিত নির্দেশ৷
বর্ত্তমানে ভোটে মনোানয়ন পত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে স্বাভাবিকভাবে বর্তমান গণতান্ত্রিক রাজনীতির রীতি অনুসারে কেউ এক ইঞ্চি মাটি ছাড়তে তৈরী নয়৷ তাই এক্ষেত্রে হাঙ্গামা বাধানোর ব্যাপারে যেমন তৃণমূল কংগ্রেসের ক্যাডাররা দায়ী তেমনি বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস কেউ ধোয়া তুলসী পাতা নয়৷
বিমান বসু, সূর্য মিশ্ররা তো গলা ছেড়ে চিৎকার করছে, বাংলায় মমতার শাসনে কোন আইন শৃঙ্ক্ষলা নেই, গণতান্ত্রিক পারিবেশ নেই৷ এই কথা গুলি বিজেপির সঙ্গে সিপি.এম ও কংগ্রেস ও বলে চলেছে মমতাকে দমানোর জন্যে ও নিজেদের পায়ের তলা মাটি পাবার জন্যে৷ এই সিপি.এম এর স্পোকস্ম্যানদের জিজ্ঞেস করি সিপিএমের শাসনে আইন শৃঙ্খলা বলে কিছু ছিল কী? যদি বলেন ছিল---তো দিন-দুপুরে ধানতলা, বানতলার হত্যাকান্ড , সাঁই বাড়ীর হত্যাকান্ড, বিজনসেতুর আনন্দমার্গী সন্ন্যাসী হত্যাকান্ডগুলি কি ছিল তাদের রাজত্বে আইন শৃঙ্খলের নিদর্শন? মমতার শাসনে কোন আইন শৃঙ্খলা নেই একথা বলার কোন অধিকার আপনাদের আছে কী? এখন নিজেদের শাসনকালের পরিকল্পিত দুষ্কর্মগুলির জন্যে সামান্য অনুতাপটুকু জাগল না ? সামান্য অনুতাপটুকু হলে মুখে অন্যের শাসনকালে আইনশৃঙ্ক্ষলা নেই এ কথাগুলি বেরুত না৷ আর বিজেপি পার্টির লোকেরা বলছে যে বর্ত্তমানে মমতা শাসনে পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা নেই, গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই৷ এখন প্রশ্ণ জ্যোতি বসুর শাসনে যে হত্যাকান্ডগুলি ঘটেছিল, যে অগ্ণিগর্ভ পরিস্থিতি সিপিএমের হার্র্মদ বাহিনী তৈরী করেছিল, তখন তো বিজেপির বঙ্গীয় নেতাদের, অমিত শাহদের, দেখাই পাওয়া যায় নি বা তাদের মুখ থেকে কোনো টুঁ শব্দ বের হয়নি৷
সিপিএমের অত্যাচারের ও পীড়নের হাত থেকে বাঁচবার জন্য জনগণ উগগ্রীব হয়ে উঠেছিল পথ খুঁুজছিল, তখন জ্যোতিবসুর সঙ্গে দিল্লীর কংগ্রেস সরকারের খুব দোস্তী৷ আর ওই দোস্তীর জন্যে পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস নেতারা কম্যুনিষ্ট পার্টির অত্যাচার ও অগণতান্ত্রিক ক্রিয়া কলাপের বিরোধিতা এমনকি প্রতিবাদ টুকুও করত না৷ আবার তথা কথিত কংগ্রেস নেতা নিজেদের চাহিদাটুকু জ্যোতি বসুর মাধ্যমে পেয়ে যেত৷ মমতা ব্যানার্জী সাধারণ জনগণের ওপর কম্যুনিষ্টদের অত্যাচার ও পীড়ন সহ্য করতে না পেরে কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে স্বাধীনভাবে তৃণমূল পার্টি গড়ে তোলেন ও এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে থাকেন৷ (ক্রমশঃ)
- Log in to post comments