গত ১২ই আগষ্ট প্রাউটিষ্ট ইয়ূনিবার্সালের কেন্দ্রীয় সচিব আচার্য রবিশানন্দ অবধূত এক আলোচনা সভায় বলেন--- প্রাউট প্রবক্তার ভাষায় বর্তমান বাজারে প্রচলিত অর্থনীতি শুধু বস্তপচা তত্ত্ব কথার কচকচানি ছাড়া আর কিছু নয়৷ আচার্য রবিশানন্দ বলেন প্রাউটের দৃষ্টিতে অর্থনীতিকে অধিকতর বাস্তবমুখী ও প্রয়োগ ভৌমিক হতে হবে, যাতে সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষের সার্বিক কল্যাণ সাধিত হয়৷ অর্থনীতির সংবাদে শুধু জিডিপি রেপোরেট হ্রাস-বৃদ্ধির মত কতকগুলি তত্ত্ব কথার ছড়াছড়ি৷ এর সঙ্গে সাধারণ মানুষের সার্বিক কল্যাণের কোন সম্পর্ক নেই৷ মানুষ এই সব কথার অর্থও বোঝে না৷
আচার্য রবিশানন্দ অবধূত বলেন--- একটা কথা প্রায়ই শোণা যায়-‘মাথা পিছু আয় বৃদ্ধি’৷ জনগণের সঙ্গে অর্থনীতির এই হিসাব এক বিরাট প্রতারণা৷ ধনবৈষম্য যেখানে আসমান-জমিন সেখানে মাথাপিছু আয় একটা দেশের প্রকৃত আর্থিক চিত্র তুলে ধরতে পারে না, বরং আসমান-জমিন ধনবৈষম্যকে ধামা-চাপা দেবার একটা সূক্ষ্ম প্রয়াস থাকে অর্থনীতির এই হিসাবে৷ অঙ্কের হিসেবে আয়কে জনসংখ্যা দিয়ে গুণ করলে সেটা দেশের জাতীয় আয়৷ এতে কি ভারতবর্ষের অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র পাওয়া যায়৷ অর্থনীতির এই হিসেব বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে অনেক ফারাক৷ ভারতবর্ষের মতো ধনবৈষম্যের দেশে বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মানের প্রকৃত অবস্থা মাথাপিছু আয় তত্ত্বের মাধ্যমে বোঝা সম্ভব নয়৷ রবিশানন্দ বলেন---এদেশে মুষ্টিমেয় কয়েকজন ধনকুবের আছে যাদের দৈনিক আয় কয়েক শত কোটি টাকা৷ আবার অধিকাংশ মানুষের দৈনিক আয় কয়েক’শ টাকা মাত্র৷ এই কারণেই মাথাপিছু আয় তত্ত্বে যৌক্তিকতা থাকে না৷
আচার্য রবিশানন্দ অবধূতের কথায়--- প্রাউটের দৃষ্টিতে ক্রয় ক্ষমতাই হল একটা দেশ বা জাতির আর্থিক উন্নতির সত্যিকারের দ্যোতক৷ কারণ ক্রয়ক্ষমতা থাকলেই মানুষ তার দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় জিনিস, জীবনধারণের নূ্যনতম প্রয়োজন সবই কেনাকাটা করতে পারবে৷ অর্থনীতির মোদ্দা কথা প্রতিটি মানুষ তার দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় চাল-ডাল, তেল-নুন, তরী-তরকারী, কাপড়-চোপড়, জ্বালানি ওষুধ-পত্র, বইখাতা সবকিছুই যেন আর্থিক সামর্থ্যের পরিভুর মধ্যে পেয়ে যায়৷ তাই মাথা পিছু আয় নয়, ক্রয়ক্ষমতাই আর্থিক উন্নতির প্রকৃত মাপকাঠি৷