মাঠের প্রথম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সুবেদ

সংবাদদাতা
ক্রীড়াপ্রতিনিধি
সময়

বহুদিন একটা সুযোগ চেয়েছিলেন একজন যেটা সাধারণত সবাই চেয়ে থাকে৷ জীবনে সুযোগ মাত্র একবারই আসে বারবার আসে না৷ সেই সুযোগের সদ্‌ব্যবহার করতে হয়৷ আর সেটাই করলো সুবেদ পার্কার৷ রঞ্জিতে সুযোগ পাওয়ার বহু চেষ্টা করেছেন কিন্তু শেষে স্নাতক পরীক্ষা দেওয়ার পর পেলেন সুযোগ, হঠাৎ পায়ে চোট পেয়ে অজিঙ্ক রহানে চোট পেয়ে ছিটকে যাওয়ায় প্রথম একাদশে সুযোগ পেল সুবেদ পার্কার৷ মাঠের প্রথম পরীক্ষাতেই উত্তীর্ণ সুবেদ ২৫২ রান করলেন ২১ বছরের সুবেদ৷ তাঁর খেলা দেখে তাঁর কোচ দীনেশ লাড তাঁকে ৩-৪ বছরের মধ্যে ভারতীয় দলে দেখতে চান৷ মুম্বাইয়ের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে প্রথম ব্যাট করতে নেবে দ্বিশতরান করলেন বরেলির সুবেদ৷ তাঁর আগে এই কীর্তি গড়েছিলেন অমল মজুমদার৷ ঘটনাচক্রে, অমলই এখন মুম্বাই দলের কোচ৷ সুবেদের আগে রঞ্জিতে এগারো জন অভিষেকে দ্বিশতরান করেছেন৷ আড়াইশো বা তার  বেশি রানের কীর্তি রয়েছে তিনজনের৷ রঞ্জিতে অভিষেক ম্যাচে সব থেকে বেশি রানের  তালিকায় সুবেদ চার নম্বরে৷ ছেলের কীর্তিতে খুশি সুবেদের বাবা বিজয় পার্কার সংবাদ মাধ্যমে জানান  ছোট থেকে ক্রিকেট নিয়েই থাকতে ভালোবাসে ছেলে  অন্য কোনকিছু শখ নেই সুবেদের৷

রঞ্জি খেলতে যাওয়ার আগে সুবেদ ফোন করেছিলেন তাঁর কোচ দীনেশ লাড কে যিনি বর্তমানের সবথেকে নামী খেলোয়াড় রোহিত শর্মার কোচও বটে, তিনি সংবাদ মাধ্যমে জানান, যাওয়ার আগে আমাকে কথা দিয়েছিল রান করবে, করে দেখিয়ে দিল৷ একজন বেসরকারী ব্যাঙ্কে চাকরী করেন সুবেদের বাবা বিজয়, আর মা মাধুরী জাতীয় স্তরে খো খো খেলেছেন৷ বাড়িতে এক দিদিও আছে সুবেদের৷ ক্রিকেট ছাড়া কিছু ভাবতেন না সুবেদ, পড়াশোনাতেও তিনি ভাল, দ্বাদশ শ্রেণির একটি  পরীক্ষার সময় মাত্র একমাস পড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন৷ তাতেই ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছিলেন সুদেব৷

 বয়সভিত্তিক সমস্ত খেলায়  নিয়মিত রান করেছেন তিনি৷ ‘‘পাঁচ-ছমাস ওর ব্যাটিং দেখার পর বুঝতে পারি এ ছেলের কিছু করার ইচ্ছা আছে৷ তাই সুদেবের বাবাকে বলি পড়াশোনা করুক না  করুক ক্রিকেটটা খেলিয়ে যাবেন৷’ কোচের কথা রেখেছেন তাঁর বাবা৷  ছেলের খেলায় কখনও বাধা দেননি৷ তিনি মনে করে সব বাচ্চার মাঠে নামা উচিত৷ বাড়িতে বসে থাকলে মোবাইলে ব্যস্ত হয়ে যাবে তারা, তাতে ক্ষতি হবে ছোটদের৷ রঞ্জির শেষ চার মাসে আট-নটি ম্যাচে সাতটি শতরান করেছিলেন সুদেব৷ দীনেশ বললেন, ‘‘শুধু শতরান নয়, বড় রানের ইনিংস খেলেছিল৷ ১৯৫,১৯২,১৭১,১৬৪,১২০ রানের ইনিংস খেলেছে৷ এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে৷’’

একটা সময় যদিও রান পাচ্ছিলেন না৷ সেই সময় দীনেশের কাছে গিয়েছিলেন সুদেব৷ দীনেশ বললেন, ‘‘একটা সময় রান পাচ্ছিল না৷ আমরা বেসিকে ফিরে যাই৷ প্রতিদিন দুঘন্টা কোন প্র্যাকটিস করতাম আমরা৷ একটা ত্রিভুজের উপর বল রেখে সোজা মারার চেষ্টা করা হয় এই অনুশীলনে৷ সেটা ও একা একা করে যেত৷ একাগ্রতা আনে এই অনুশীলন৷ নিশ্চুপে অনুশীলন করে যেত ও ৷ সব সময় পরিশ্রম করতে তৈরি থাকে সুবেদ ৷

রঞ্জিতে ২৫২ রানের ইনিংস দেখে আপ্লুত সুদেবের কোচ ও বাবা৷ ধারাবাহিকতা বজায় রাখুক সুদেব, এটাই তাঁদের একমাত্র প্রত্যাশা৷ রোহিত শর্র্ম, শার্দূল ঠাকুর ভারতের হয়ে খেলছেন৷  তাঁদের কোচ দীনেশ লাড বললেন, ‘‘রঞ্জিতে ২৫২ রানের ইনিংস খুব বড় ব্যাপার৷ এইভাবে খেললে ৩-৪ বছরের মধ্যে ভারতের হয়ে সাদা জামা পরে খেলতে দেখা যেতে পারে সুবেদকে৷’’