মধ্যবিত্তের ঘাড়ে জি.এস.টির বোঝা নয় প্রতিটি মানুষের হাতে ক্রয় ক্ষমতা দিতে হবে

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

নরেন্দ্র মোদি আট বছর আগে প্রথম  যেদিন  প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেন তখন রান্নার গ্যাস ছিল ৫০০ টাকার নীচে, পেট্রল ছিল ৫০ থেকে ৫৫টাকার মধ্যে৷ সাধারণ মানুষের  সেটা কিন্তু আচ্ছা দিন ছিল না৷ তাই গদিতে বসার আগেই ভোটে জিতে নরেন্দ্র মোদি জনগণকে  শুনিয়ে দেন আচ্ছা দিন এসে গেছে৷ কথাগুলি বলে বাঙালী ছাত্র যুব সমাজের সচিব তপোময় বিশ্বাস বলেন---জনগণ সেদিন মোদিজীর কথার অর্থ বুঝতে ভুল করেছিলেন৷ আচ্ছাদিন মানে সাধারণ মানুষের আচ্ছা দিন নয়, ধনকুবেরদের আচ্ছা দিন,  নরেন্দ্র মোদির আচ্ছা দিন৷ তাই মারণ ব্যাধির সংক্রমণে লক্‌ডাউনের কবলে পড়ে কোটি কোটি মানুষ যখন কর্মহারা, কপর্দকহীন তখনও ধনকুবেররা হাজার হাজার কোটি টাকা কামিয়ে নিয়েছে৷ শাসকদলেরও ভাঁড়ার উপচে পড়েছে৷ নোট বাতিল, জি.এস.টিতেও সাধারণ মানুষকে যন্ত্রণা দিয়ে শোষক ও শাসকদল কামানোর পথ করে নিয়েছে৷

আজ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস, ঔষধপত্রের দাম লাগাম ছাড়া হচ্ছে৷  কর্র্পেরেটদের  কর মুকুব করে  মুড়ি, পনিরের সঙ্গে  মধ্যবিত্তের হেঁসেলেও জি.এস.টির বোঝা চাপানো হচ্ছে৷ এই আচ্ছা দিনের জ্বালায় জ্বলতে জ্বলতে মানুষ আজ টের পাচ্ছে আচ্ছা দিন কাকে বলে৷ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য লাগাম ছাড়া, গ্যাস, পেট্রল ইত্যাদির দামও দিন দিন বাড়ছে৷ ৫৬ ইঞ্চির কালো টাকা উদ্ধারের আশ্বাসকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে  সুইসব্যাঙ্কে ভারতীয়দের কালো টাকা আট বছরে আরও বেড়েছে৷ ডলারের তুলনায় টাকার মূল্য কমতে কমতে সেঞ্চুরীর দোর গোড়ায় পৌঁছে গেছে৷ এই পরিস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী বলছেন টাকা অনেক শক্তিশালী৷  যুবনেতা তপোময় বিশ্বাস বলেন টাকা যে শক্তিশালী এই মুহূর্তে তা টের পাচ্ছেন মহারাষ্ট্রের সদ্য গদি হারানো নেতা উদ্ধব ঠাকরে৷ আরও কয়েকটি রাজ্যেও গণতন্ত্রের ঘাড়ে কোপ মেরে টাকার শক্তিতে ক্ষমতা দখল করেছে মোদির দল৷ অন্যদিকে মানুষকে আত্মনির্ভরতার উপদেশ দিচ্ছেন৷

শ্রী বিশ্বাস বলেন ধনকুবেরদের কোলে বসে সরকার চালান যায়, সাধারণ দীন-দুঃখী মানুষের ঘরে আচ্ছা দিন এনে দেওয়া সম্ভব নয়, আত্মনির্ভরতা অর্থ হয়তো প্রধানমন্ত্রী বোঝেন না৷ তাই সাধারণ মানুষের পেটে লাথি মেরে যে পুঁজিপতিরা পুঁজির পাহাড় করে সেই পুঁজিপতিদের নিয়ন্ত্রিত সামাজিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় আত্মনির্ভরতা  আচ্ছা দিন অলীক স্বপ্ণ৷

সাধারণ মানুষের ঘরে আচ্ছা দিন আনতে হলে প্রথমেই পুঁজিপতিদের স্বার্থে গড়ে তোলা কেন্দ্রীত অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙে ধূলোয় মিশিয়ে দিতে হবে৷ প্রগতিশীল উপযোগ তত্ত্ব প্রাউটের প্রয়োগ ঘটিয়ে বিকেন্দ্রিত অর্থনৈতিক পরিকাঠামো গড়ে প্রতিটি মানুষের হাতে ক্রয় ক্ষমতা তুলে দিতে হবে৷ যাতে প্রতিটি মানুষ জীবন ধারণের নূ্যনতম প্রয়োজন  অন্ন,বস্ত্র,  বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসার ব্যবস্থা সহজে করতে পারে৷ সরকারের উচিত অবিলম্বে এই ব্যবস্থা কার্যকর করা৷ নতুবা এই সরকারের টিকে থাকার নৈতিক অধিকার নেই৷