মেলবোর্নকে অষ্টেলীয় ক্রিকেটের প্রাণ বলা চলে, কেউ কেউ মনে করেন এই দেশের খেলাধুলার রাজধানী৷ কেউ কখনো কল্পনাও করতে পারেনি স্পিনের দেশে দর্পচূর্ণ হবে অষ্ট্রেলীয় ক্রিকেটের ভারতের গতির সামনে৷
ষ্টেডিয়াম জুড়ে নানা নামীদামী ব্যষ্টিত্বের মূর্তি, কে নেই সেখানে ডন ব্র্যাড ম্যান থেকে বিল পাসফোর্ড, নিল হার্ভি থেকে ডেনিস লিলি৷ পাশেই ষ্টেশন আর ঠিক তার পেছনেই ব্রড লেভার এরিনা৷
চারদিকে একটা ঐতিহাসিক আবহ৷ সেখানেই রবিরার দুপুরে বিরাট কোহালির দল নোতুন বছরে ঐতিহাসিক লগ্ণ উপহার দেওয়ার মঞ্চ তৈরি করে ফেলল৷ ১৩৭ রানে জিতে সিরিজে কোহালিরা এগিয়ে গেলেন ২-১৷ শেষ টেষ্ট সিডনিতে ৷ সেখানে হেরে গেলেও ২-২ হবে৷ বর্ডার-গাওস্কর ট্রফি থেকে যাবে ভারতের দখলে৷
যদিও অষ্ট্রেলিার সর্বকালের দ্রুততম ফাস্ট বোলার জেফ থমসনের মতো কিংবদন্তি ২-২ হওয়ার আশা দেখছেন না৷ ‘‘কেউ যদি জাদুকাঠি নিয়ে উপস্থিত হয়, কোনও ম্যাজিসিয়ানকে যদি টিমে নিতে পারে ক্রিকেট অষ্ট্রেলিয়া, তাহলে সিডনিতে জিততে পারে আমাদের দল৷ না হলে আমি কোনও আশা দেখছি না,’’ বলে দিচ্ছেন তিনি৷ একা থমসন নন, শেন ওয়ার্ন থেকে অ্যাডাম গিলক্রিষ্ট--- এই মুহূর্তে টিম পেনের অষ্ট্রেলিয়ায় বিশ্বাস রাখবে এমন কাউকে খঁুজে পাচ্ছে না৷
মেলবোর্নে ভারত শেষ বার টেষ্ট জেতে ১৯৮২-তে৷ সুনীল গাওস্কার ও ডেনিস লিলির মধ্যে ঝামেলার জন্য বিতর্কিত হয়ে আছে সেই টেস্ট. রবিবারের মতোই ম্যাচের নিষ্পত্তি হয় ভারতীয় সময় সকাল-সকাল৷ কঁুচকির ব্যথা সত্ত্বেও ইঞ্জেকশন নিয়ে নেমে পাঁচ উইকেট নিতে জেতান কপিল দেব৷ সে বার ছিলেন কপিল, এবার যশপ্রীত বুমরা৷ স্পিনের দেশে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান পেস ত্রয়ী মার্র্শল-হোল্ডিং-গার্র্নরের এক বছরে সব চেয়ে বেশি উইকেট নেওয়ার রেকর্ড ভেঙে দিচ্ছে তারা৷ ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ত্রয়ী ১৯৮৪-তে নিয়েছিলেন ১৩০ উইকেট৷ ভারতের বুমরা-ইশান্ত-শামি ২০১৮ শেষ করলেন ১৩৬ শিকার নিয়ে৷
চলতি সিরিজের দ্বিতীয় টেষ্টের শেষে যখন ভারতের পারফরমেন্সকে তুলোধুনো করেছিলেন প্রাক্তন অষ্ট্রেলীয় তারকা রিকি পণ্টিং, সেই সময় ‘নোতুন পৃথিবী’র এই কলমে লেখা হয়েছিল৷ রিকি যোগ্য জবাব পাবেন মেলবোর্নের মাঠে৷ অনুমান সঠিক হয়েছে৷ তৃতীয় টেষ্টে মুখ থুবড়ে পড়ার পর পণ্টিংয়ের মতামত জানা যায় নি৷ তবে তাঁর সতীর্থরা ভারতীয়দের টেম্পারামেণ্টের প্রশংসা করেছেন৷ সেই কারণেই পরবর্তী টেষ্টে ভারতকে ব্যাকফুটে ফেলবে টিম পেনের দল এমন আশা করছেন না প্রাক্তন অষ্ট্রেলীয় তারকারা৷ তবে আমরা মনে করি অষ্ট্রেলীয় তরুণ খেলোয়াড়রাও যথেষ্ট প্রতিভাবান৷ প্রাক্তনীদের সমালোচনার খোঁচা খেয়ে তারা যে জোর লড়াইয়ের জন্যেই সিডনিতে নামবে সে বিষয়ে সন্দেহ নেই৷ তাই সিডনি টেষ্টে একটি উপভোগ্য লড়াই আশা করছে ক্রিকেট রসিকরা৷