মহাকাশ গবেষণায় মোড় ঘোরাতে নতুন প্রযুক্তি নিয়ে হাজির রাশিয়া

সংবাদদাতা
পি.এন.এ.
সময়

দূরত্ব প্রায় সাড়ে ২২ কোটি কিমি৷ অথচ সেখানে পৌঁছোতে লাগবে মাত্র ৩০ দিন৷ ২১ শতকে এ ভাবেই চোখের পলকে লাল গ্রহ জয়ের স্বপ্ণ দেখা শুরু করেছেন রুশ মহাকাশ গবেষকেরা৷ তার জন্য তৈরি হয়েছে অতিশক্তিশালী অত্যাধুনিক ইঞ্জিন৷ মস্কোর মিশন সফল হলে মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞান সংস্থা নাসা (ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন)যে বড় ধাক্কা খাবে,তা বলাই বাহুল্য৷

সম্প্রতি মঙ্গল অভিযানের দিকে নজর দিয়েছে রুশ প্রশাসন৷ সেই লক্ষ্যে একটি অতি শক্তিশালী প্লাজমা ইঞ্জিন তৈরি করেছেন সেখানকার মহাকাশবিজ্ঞানীরা৷ তাঁদের দাবি, এর সাহায্যে মাত্র ৩০ দিনের মধ্যে পৌঁছোনো যাবে লাল গ্রহে৷ ইঞ্জিনটির নির্মাণকারী সংস্থা রোসাটম ট্রয়েটস্ক ইনস্টিটিউটের দাবি, তাঁদের যন্ত্র জ্যোতির্বিজ্ঞানে নতুন যুগের সূচনা করবে৷ রোসাটমকে যাবতীয় সাহায্য করছে রাশিয়ার সরকারি মহাকাশ সংস্থা রসকসমস৷

রোসাটমের ইঞ্জিনের চূড়ান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ১৪ মিটার লম্বা এবং ৪ মিটার চওড়া একটি ভ্যাকুয়াম চেম্বার তৈরি করেছেন রুশ ইঞ্জিনিয়রেরা৷ চেম্বারটির ভিতরে কৃত্রিম ভাবে এক টুকরো মহাকাশকে রেখেছেন তাঁরা৷ পাল পর্যায়ক্রমিক মোডে সেখানে ইঞ্জিনটি ৩০০ কিলোওয়াট শক্তিতে কাজ করেছে৷ টানা ২,৪০০ ঘণ্টা সচল ছিল ওই ইঞ্জিন৷ মঙ্গলযাত্রার পক্ষে এই সময়সীমা যথেষ্ট৷ তা সত্ত্বেও ইঞ্জিনটির আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানানো হয়েছে৷ মহাকাশ গবেষণায় প্লাজমা প্রপালশান পদ্ধতি নতুন নয়৷ তা সত্ত্বেও রোসাটমের ইঞ্জিনটিকে ‘খেলা ঘোরানো’ আবিষ্কার বলেই মনে করা হচ্ছে৷ তার একমাত্র কারণ হল, রুশ ইঞ্জিনটির গতিবেগ৷ জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একাংশের মতে, ইঞ্জিনটির সাহায্যে নভোচারীরা মাত্র ৩০ দিনে মঙ্গলে পৌঁছে যেতে পারবেন৷ সেই মাইলফলককে অবিশ্বাস্য বললেও কম বলা হবে৷

সূত্রের খবর, ২০৩০ সালের মধ্যেই রোসাটম সংশ্লিষ্ট প্লাজমা ইঞ্জিনের একটি ফ্লাইট মডেল তৈরি করবে৷ এর পর সেটিকে মহাকাশে পাঠাবেন রুশ জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা৷ সে ক্ষেত্রে সৌরজগতের বাইরে অভিযানের দরজাও খুলে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে৷ এ ছাড়া দূরবর্তী গ্রহগুলিতে নভোচারী প্রেরণ এবং গ্রহাণু অনুসন্ধানের কাজ বেশ সহজ হবে বলে ইতিমধ্যেই দাবি করেছেন দুনিয়ার তাবড় মহাকাশবিজ্ঞানীরা৷ সূত্রের খবর, ২০২৬ সালের মধ্যে ক্যাটাপল্টের সাহায্যে একগুচ্ছ কৃত্রিম উপগ্রহ মহাশূন্যে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থার৷

পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে কাটিয়ে মহাশূন্যে কৃত্রিম উপগ্রহ বা মহাকাশযান নিয়ে যেতে লক্ষ লক্ষ পাউন্ড জ্বালানি পুড়িয়ে শক্তি সঞ্চয় করে রকেট৷ ক্যাটাপল্টের প্রযুক্তি এর থেকে একেবারে ভিন্ন৷ স্পিনলঞ্চ পেলোড (ওজন) উৎক্ষেপণের জন্য এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করছে বিশুদ্ধ গতিশক্তি৷ সংস্থার তৈরি যন্ত্রটিতে বিশাল ভ্যাকুয়াম সিলড সেন্িন্টফিউজ রয়েছে৷

ক্যাটাপল্ট উৎক্ষেপণের জন্য বিশেষ ধরনের একটি টিউব ব্যবহার করছে স্পিনলঞ্চ৷ এর সাহায্যে পেলোডগুলিকে অস্বাভাবিক গতিতে ঘুরিয়ে শক্তি সঞ্চয় করা হচ্ছে৷ সেই শক্তিই কৃত্রিম উপগ্রহ বা মহাকাশযানকে পৌঁছে দিচ্ছে অন্তরীক্ষে৷ পেলোডগুলিকে দুরন্ত গতিতে ঘোরাতেও বিদ্যুতের ব্যবহার করছে স্পিনলঞ্চ৷