মূল্যবোধের অবক্ষয়l সামাজিক বিভাজনl অর্থনৈতিক বিপর্যয়-আনন্দমার্গের জীবনাদর্শই পথ দেখাবে

সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা
সময়

২০২০ নববর্ষের ধর্ম মহাসম্মেলন শেষ হওয়ার পর নির্ধারিত সূচী অনুযায়ী সেমিনার শুরু হয়েছে৷ গত ২৪ , ২৫ ও ২৬শে জানুয়ারী কলিকাতা রিজিয়নে টাটানগর, আগরতলা ও ভূবনেশ্বরের বোধে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়ে গেল৷ এইসব সেমিনারে টাটানগরের প্রশিক্ষক ছিলেন আচার্য বিকাশানন্দ অবধূত ও আচার্য তথাগতানন্দ অবধূত, আগরতলায় ছিলেন আচার্য সর্বেশ্বরানন্দ অবধূত, আচার্য তন্ময়ানন্দ অবধূত, বোধে ছিলেন আচার্য বিশুদ্ধাত্মানন্দ অবধূত৷

সেমিনারের আলোচ্য বিষয় ছিল ‘সাধনা ও মধুবিদ্যা’, ‘জাগ্রত বিবেক’, ‘ভক্তি ও কৃপা’, ‘অর্থনৈতিক গণতন্ত্র৷’ প্রত্যেকটি সেমিনারেই প্রচুর সংখ্যক মার্গী ভাইবোন ও সাধারণ মানুষ আগ্রহ সহকারে অংশগ্রহণ করেন৷

আনন্দমার্গ প্রচারক সঙ্ঘের শিক্ষা, ত্রাণ ও জনকল্যাণ দপ্তরের দিল্লী সেক্টরের সচিব আচার্য তথাগতানন্দ অবধূত বলেন---তিন দিনের এই সেমিনারে আনন্দমার্গ দর্শনের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, আধ্যাত্মিক অনুশীলন, সামাজিক সংঘটন প্রভৃতি বিষয়ের ওপর আলোচনা হবে৷

তিনি বলেন---বর্তমানে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও আধ্যাত্মিক জীবনের সর্বক্ষেত্রে চরম অবক্ষয় ও বিপর্যয় দেখা দিয়েছে৷ সামাজিক বিভাজন,অর্থনৈতিক দূরাবস্থায় মানুষ আতঙ্কিত ও দিশাহারা৷ এর অন্যতম কারণই হচ্ছে মানুষ আধ্যাত্মিকতা বিমুখ ভোগ সর্বস্ব জীবন ধারায় অভ্যস্ত হয়ে গেছে৷ স্বার্থলোভ, ক্ষমতার মোহ মানুষকে গ্রাস করেছে৷ মানুষ যেন দিন দিন বিবেক বোধ-বুদ্ধি হারিয়ে অমানুষ হয়ে যাচ্ছে, অনৈতিক কাজে লিপ্ত হচ্ছে৷ রাজনৈতিক নেতাদের দাদাগিরি ও পুঁজিবাদের সীমাহীন শোষণ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে৷ দেশের ৭০ শতাংশের বেশী সম্পদ মুষ্টিমেয় কয়েকজন ধনকুবের কুক্ষিগত করে নিয়েছে৷ এই অবস্থায় মানুষ চোখের সামনে অন্ধকার দেখছে৷

আচার্য তথাগতানন্দ অবধূত বলেন---তবু হতাশ হওয়ার কিছু নেই, আনন্দমার্গের উদার ও বাস্তবধর্মী জীবনাদর্শই সব হতাশা ও অন্ধকার দূর করে দেবে ও একটি সুসন্নিবদ্ধ সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলবেই৷ মানব জাতির ভবিষ্যৎ গৌরবোজ্জ্বল হবেই৷ আনন্দমূর্ত্তিজীর আবির্ভাব ও আনন্দমার্গের প্রতিষ্ঠা এই জন্যেই হয়েছে৷ তাই এই বিপর্যয় সাময়িক৷ তিনি বলেন---মানুষকে আনন্দমার্গের উন্নত ও বৈপ্লবিক চিন্তাধারায় অনুপ্রাণিত করতেই আমরা দিল্লী সেক্টরের ব্লক ও পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত সেমিনারের আয়োজন করেছি৷ তিন দিনের এই সেমিনারগুলোয় আধ্যাত্মিক চর্চা,

বৌদ্ধিক চর্চা, সামাজিক সংঘটন, বিজ্ঞান ও আরো নানা বিষয়ে আলোচনা হবে৷ আনন্দমার্গ দর্শনে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও আধ্যাত্মিক ক্ষেত্রে দৃঢ় সংযোগ ঘটেছে৷ তাই আনন্দমার্গের পক্ষেই সম্ভব সার্বিক শোষণমুক্ত আদর্শ সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলা৷ বর্তমান ভেদ-বিদ্বেষ ও সামাজিক বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে  আনন্দমার্গের ভূমিকা হবে সমগ্র মানব সমাজকে তথা সমগ্র জীব সমাজকে একসূত্রে আবদ্ধ করা৷ তিনি বলেন---প্রথম স্তরের সেমিনারগুলো হবে কয়েকটি করে ডায়োসিসকে নিয়ে৷ এরপর ক্রমশঃ জেলা, ব্লক ও পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত সেমিনারের আয়োজন করা হবে৷